ওড়ার জন্য দৌড় শুরু করেও গতি কমিয়ে দিল বিমান। পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে বললেন, “এমনিতে সব ঠিকই আছে। তবু আবার টেক-অফ পয়েন্ট থেকে দৌড় শুরু করতে চাই।”
সেই অনুমতি দেওয়া হল পাইলটকে। কিন্তু তার পরেই পাইলট আবার বললেন, “বিমান নিয়ে পার্কিং বে-তে ফিরতে চাই।”
সেই অনুযায়ী ফিরেও এলেন। ঘটনাটি আর-দশটা যাত্রিবাহী বিমানের ক্ষেত্রে ঘটলে হয়তো তেমন হইচই হত না। কিন্তু এই বোয়িং-৭৩৭ বিমানটিতে ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা দেবী সিংহ পাটিল। দু’দিনের কলকাতা সফর সেরে দিল্লি ফিরছিলেন তিনি। তাঁরই বিমান নিয়ে খোদ পাইলটেরই বারবার এই ধরনের সংশয় দেখা দেওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। খোদ রাজ্যপাল তড়িঘড়ি ফের পৌঁছে যান বিমানবন্দরে। উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী দিল্লিতেও।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, ওড়ার মুখেই ককপিট থেকে বিপদ-সঙ্কেত পেয়েছিলেন পাইলট। ওই অবস্থায় কলকাতা থেকে ওড়ার ঝুঁকি নেননি তিনি। আবার এক বার খুঁটিয়ে সব পরীক্ষা করে নিতে চেয়েছিলেন। তিনি সেই কারণেই বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
বুধবার সকাল ১০টা ৪১ মিনিটে রাষ্ট্রপতির বিমানের পাইলটের কাছ থেকে প্রথমে ওই বার্তা আসে। কলকাতা বিমানবন্দরে তখনও দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল নপরাজিত মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানিয়ে সেই সবে বিমানবন্দর ছেড়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। পাইলটের বার্তায় সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তত ক্ষণে রাষ্ট্রপতির বিমানে সমস্যার কথা পৌঁছে গিয়েছে দিল্লিতে। উদ্বেগ প্রকাশ করে আসতে শুরু করে ফোন। পাইলট জানান, বিমানের কয়েকটা যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করার পরে আবার উড়বেন।
রাষ্ট্রপতির বিমানে সমস্যার কথা জেনে রাজ্যপাল কনভয়ের মুখ ঘুরিয়ে ফের বিমানবন্দরের পথ ধরেন। রাষ্ট্রপতির বিমান ৪২ নম্বর পার্কিং বে-তে এসে দাঁড়ানোর পরে নতুন করে সিঁড়ি লাগানো হয়। নীচে নেমে পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ার বিমানের সামনে এসে তলার দিকের অংশ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে জানিয়ে দেন, কোনও সমস্যা নেই। তাঁরা এ বার উড়বেন। রাষ্ট্রপতি অবশ্য বিমান থেকে আর নামেননি।
এর মধ্যেই ফের বিমানবন্দরে পৌঁছে যান রাজ্যপাল নারায়ণন। শেষ পর্যন্ত বেলা ১১টা ১১ মিনিটে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বিমান উড়ে যায়। |