|
|
|
|
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির প্রতিবাদে আজ দেশ জুড়ে ব্যবসা বন্ধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দিল্লি |
আজ ব্যবসা বন্ধ। লক্ষ্য, বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় (মাল্টি ব্র্যান্ড রিটেল) বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা। প্রতিবাদী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিগ বাজার, স্পেনসার্স, রিলায়্যান্স রিটেলের মতো ভারতীয় সংস্থাগুলির কাছে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ শতাংশ বাজার খুইয়েছেন তাঁরা। তার উপর সংগঠিত খুচরো ব্যবসায় এ বার বিদেশি বিনিয়োগ পা রাখলে, আক্ষরিক অর্থেই পথে বসবে পাড়ার ছোট দোকানগুলি। আর এই আশঙ্কা থেকেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে এক দিনের ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে ছোট খুচরো ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন।
কিন্তু ভারতীয় খুচরো ব্যবসা সংস্থাগুলির কাছে এই বাজার হারানোর অভিযোগের ভিত্তি কী?
এ প্রসঙ্গে ছোট খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন্সের মুখপাত্র ফিরোজ আলির দাবি, “এই নিয়ে একটি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। তাতেই দেখা গিয়েছে যে, সারা দেশে শপিং মল বা অন্যান্য বড় খুচরো বিপণিতে জামা-কাপড় সহ নানা ভোগ্যপণ্য বিক্রি শুরু হওয়ার পর ওই সব ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে ছোট দোকানগুলি।”
কিন্তু এই সব পণ্য কেনাকাটার জন্য যাঁরা ছোট দোকানে যান, আর যাঁরা শপিং মলে ভিড় করেন, আদপে তাঁরা কী আলাদা ক্রেতা নন? ছোট খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলির কাছে অবশ্য এর সদুত্তর মেলেনি।
ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন্সের চেয়ারম্যান মহেশ সিংঘানিয়ার দাবি, “শুধু ছোট দোকানের মালিকেরা নন। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজি এলে সমস্যা হবে আরও বৃহত্তর বৃত্তে। কারণ, পরিবহণ-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা এর সঙ্গে যুক্ত।” |
|
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতায় বিক্ষোভ। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই |
বিদেশি বিনিয়োগ এলে ক্রেতারা আরও কম দামে উন্নত মানের পণ্য হাতে পাবেন, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন ছোট খুচরো ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, একেবারে প্রথমে সাময়িক ভাবে কম দামে পণ্য বেচবে ওই সব বহুজাতিক। কিন্তু তার সঙ্গে এঁটে উঠতে না-পেরে ছোট ব্যবসায়ীরা ঝাঁপ বন্ধ করলেই দাম বাড়াবে তারা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেডারেশন অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক তারকনাথ ত্রিবেদীর দাবি, “ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স বা মালয়েশিয়ার মতো দেশে ইতিমধ্যেই এই জিনিস দেখা গিয়েছে।”
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির প্রতিবাদে এ দিন বন্ধ থাকবে অধিকাংশ সোনার দোকানের দরজাও। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দারের আশঙ্কা, এর পর মেশিনে তৈরি কম দামের গয়না বাজারে ছেয়ে গেলে, রুজি-রুটি হারাবেন ছোট গয়না ব্যবসায়ীরা। তাঁর দাবি, “এই ব্যবসায় বড় ভারতীয় সংস্থাগুলির কাছেই প্রায় ৪০ শতাংশ বাজার খুইয়েছি আমরা। এ বার বিদেশি বিনিয়োগ এলে ১০০ শতাংশই হারাতে হবে।” কিন্তু তা হলে কি উন্নততর প্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন ক্রেতারা? এরও স্পষ্ট উত্তর দেয়নি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি। |
|
|
|
|
|