১০ বছর আগে মহকুমা সদর হয়েছে। ১০ বছরে জনসংখ্যার পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি। বাসস্ট্যান্ড অবশ্য একটিই রয়েছে। সেটাও নামেমাত্রই। কেননা, ওই বাসস্ট্যান্ডে হাতে গোনা কয়েকটি যানবাহনও সঠিক ভাবে দাঁড়াতে পারে না। ফলে সড়কের উপরেই বাস, ম্যাক্সি, ট্রেকার দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো নামানো চলে। গন্তব্যে যাওয়ার আগেও অধিকাংশ যানবাহনই দাঁড়িয়ে থাকে সড়ক দখল করে। এই পরিস্থিতিতে রাস্তাঘাট দখল করেছে অসংখ্য অটো ও যন্ত্রচালিত ভ্যান। ফলে এলাকায় যানজট প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে মালদহের চাঁচলে। দিনের পর দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহকুমা সদরের বাসিন্দারা যানজটে জেরবার হলেও সমস্যা মেটাতে পুলিশ, প্রশাসন উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩ বছর আগে পুলিশ-প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে যানজট এড়াতে কিছু পদক্ষেপ করে। কোন রুটের গাড়ি কোথায় দাঁড়াবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি যন্ত্রচালিত ভ্যান সদরের ভেতরে ঢোকাও নিষিদ্ধ করা হয়। নজরদারির অভাবে কিছুদিন বাদেই তা মুখ থুবড়ে পড়ে। ফের সদরের মূল সড়কগুলি দখল করে রাস্তার উপরেই সমস্ত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকছে। ফলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠলেও হুঁশ নেই পঞ্চায়েত বা পুলিশ, প্রশাসন কারও। চাঁচলের এসডিপিও সন্দীপ মন্ডল বলেন, “সব দায়িত্ব তো পুলিশের নয়। পঞ্চায়েত, প্রশাসনকেও উদ্যোগী হতে হবে। যাই হোক, সমস্যা যাতে মেটে তা দেখা হচ্ছে। হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল ও রতুয়ার ৬টি ব্লকের কেন্দ্রস্থল চাঁচল। ওই ব্লকগুলো থেকে প্রতিদিন অফিস সংক্রান্ত কাজে বহু মানুষকেই চাঁচলে আসতে হয়। এ ছাড়া স্কুল, কলেজে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি ব্যবসা সংক্রান্ত কাজেও প্রচুর মানুষ চাঁচলে আসেন। যানবাহনগুলি অবৈধ ভাবে রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকায় সকাল থেকেই শুরু হয় যানজট। চাঁচলের প্রাণকেন্দ্র নেতাজি মোড় থেকে এসডিও অফিস, হাসপাতালগামী রাস্তা সহ হরিশ্চন্দ্রপুরগামী বা মালদহগামী ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর সকাল থেকেই শুরু হয় অটো-সহ যন্ত্রচালিত ভ্যানের দাপট। সড়ক দখল করে থাকায় রীতিমতো গুঁতোগুঁতি করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া একসময় ফুটপাথ থেকে জবর দখল উচ্ছেদ করা হলেও নজরদারির অভাবে ফের ফুটপাথ দখল হয়ে যাওয়ায় রাস্তাও সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বিপজ্জনক ভাবে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাঁচল-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহন দফতরের কর্মাধ্যক্ষ ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলেন, “জমির সমস্যায় নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা যাচ্ছে না। যানবাহনগুলি যে যেমন ভাবে পারছে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় ও দাঁড়িয়ে থাকায় যানজট প্রকট হয়ে উঠেছে। নতুন বিডিও কাজে যোগ দেওয়ার পরেই ছুটিতে গিয়েছেন। তিনি ফিরলেই সর্বদল বৈঠক ডেকে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হব।” ভূক্তভোগী বাসিন্দাদের অভিযোগ, অটো, যন্ত্রচালিত ভ্যান ও রিক্সার সাথে পথচলতি মানুষের হামেশাই গোলমাল লাগছে। প্রতিবাদ করলে উল্টে কটূক্তি হজম করতে হচ্ছে। সদরের কেন্দ্রস্থল নেতাজি মোড়-সহ সড়কগুলি সারাদিন ওই চালকদের দখলে থাকায় মুখ বুজে সব সহ্য করতে হয় । চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রাণগোপাল পোদ্দার বলেন, “প্রশাসনের অপদার্থতায় চাঁচলে লাগামহীন ভাবে যানজট বেড়ে চলেছে। সমস্যা মেটাতে সদিচ্ছা আছে বলে মনে হয় না।” |