আমি হাসনাবাদ ব্লকের শুলকুনি অঞ্চলের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। নাগেরবাজার থেকে রোজ যাওয়া-আসা করি। রোজ ১২ কিমি সাইকেল চালানো আর মাঝে কাটাখালি নদী নৌকায় পার হই সাইকেল সমেত। আর ভাটার সময় মাঝনদী পর্যন্ত কাদা আর চোরাবালি সামলে ঘাড়ে সাইকেল সমেত নৌকা চড়াটা আমার বাড়তি পাওনা।
বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে ছুটির পর হাসনাবাদ স্টেশনে পৌঁছই ৫টা নাগাদ। স্টেশনে বসে মুড়ি-চানাচুর খাই আর লোকজনের আনাগোনা দেখি ৫টা ৫০ মিনিটের ডি এন হাসনাবাদ লোকাল (৩৩৫২৮) ছাড়া পর্যন্ত। কারণ, আগের ডি এন ট্রেনটি (৩৩২৮২) ছেড়ে যায় ৪টে ১৫ মিনিটে। শুধু আমি নই— হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ ও সন্দেশখালি ব্লকের আরও প্রায় ৪০টি বিদ্যালয়, ৩টি কলেজ, ৩টি বি ডি ও অফিস, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের কর্মচারীদেরও একটা বড় অংশ সঙ্গী হয় সেই অপেক্ষা-পর্বের। |
দুর্ভোগ। কাটাখালি নদী পারাপার। |
দীর্ঘ দিন ধরে আমরা নির্দিষ্ট প্রথা অনুযায়ী দাবি জানিয়ে চলেছি, ৫টা থেকে ৫টা ১০ মিনিট নাগাদ হাসনাবাদ থেকে একটি ডি এন ট্রেন দেওয়ার। গত ১ অক্টোবর থেকে একটি ডি এন ট্রেন দেওয়া হল ৫টা ২০ মিনিটে। দুঃখের বিষয় এই যে, সেটি বসিরহাট লোকাল (৩৩৫৯৪)। ইউ পি ৩৩৫৯৩ ট্রেনটি বিকেল ৪টে ১০-এ বসিরহাট পৌঁছে ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর রওনা দেয় প্রায় যাত্রীশূন্য অবস্থায়। ৪টে ১০ মিনিটে বসিরহাট এসে বসে না-গিয়ে ট্রেনটি যদি হাসনাবাদ পর্যন্ত চালানো হয়, তবে ৪টে ৩০ মিনিটে ট্রেনটি হাসনাবাদ পৌঁছবে এবং সেটিকে অনায়াসে ৫টায় হাসনাবাদ থেকে ডি এন করে চালানো যায়। তবে ওই ৫টা ১৫-তেই ট্রেনটি বসিরহাট পৌঁছবে। এর জন্য টাইম টেবিলে বড় কোনও পরিবর্তন করতে হবে না বা পথে ক্রসিং সংক্রান্ত নতুন অসুবিধা হবে না এবং আমাদের বহু-প্রতীক্ষিত দাবিটিও সহজে পূরণ হবে।
শান্তনু ভট্টাচার্য। নাগেরবাজার, কলকাতা-২৮
|
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গোসাবা থানার কচুখালি পঞ্চায়েতের বিখ্যাত মনসা মেলা খেয়াঘাটে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ কয়েক বছর আগে একটি কংক্রিটের জেটি তৈরি করে। এই জেটি পেরিয়ে গোসাবা ব্লকের আমতলি, কুমিরমারি, ছোট মোল্লাখালি, রাধানগর, কচুখালি প্রভৃতি পঞ্চায়েতের হাজার হাজার মানুষ বি ডি ও অফিসে, জে এল অ্যান্ড এল আর ও অফিসে, হাসপাতালে ও অন্যান্য জায়গায় যাতায়াত করেন। অপর পারে রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতের রাজাপুর, বাগবাগান প্রভৃতি গ্রাম থেকে বহু ছাত্রছাত্রী কচুখালি পঞ্চায়েতের মন্মথপুর হাই স্কুলে পড়তে আসে। ওই জেটিকে কেন্দ্র করে কচুখালি পারে একটি বাজারও গড়ে উঠেছে।
কিন্তু ২০০৭ সাল থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ জেটির অবস্থা জরাজীর্ণ । জেটি-মুখের মাটি রক্ষার জন্য গার্ড ওয়াল জাতীয় কোনও ব্যবস্থা না-থাকায় স্রোতের টানে মাটি সরে যাওয়ায় জেটিটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। খাঁচা পাইলিং বা ইট ফেলে জেটি রক্ষার ব্যবস্থা করতে জনসাধারণ বহু বার আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনও সুফল হল না। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং বি ডি ও জেটিটি অবিলম্বে মেরামত করতে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদকে জানান। মেমো নং- ৫৩০/১(৫) ই ও/জি এস বি। তারিখ ১৭-১১-’০৮। দীর্ঘ চার বছরেও কোনও ব্যবস্থা হল না। |
বিপদ। কচুখালি পঞ্চায়েতে মনসা মেলা খেয়াঘাটে জেটি। |
স্থানীয় কচুখালি গ্রাম পঞ্চায়েত খানচারেক তক্তার একটি পাটাতন বানিয়ে মাঝখানে কাঠের দু’খানা খুঁটির সাপোর্ট দিয়ে ৩৫-৪০ ফুট গ্যাপে লাগিয়ে কোনও প্রকারে টালমাটাল জেটির সঙ্গে যোগ করে দিয়েছে। পাশে কিছু ধরে হাঁটার মতো ব্যবস্থা নেই। যাতায়াতের সময় পাটাতন দুলতে থাকে। একটু অসতর্ক হলেই ২৫-৩০ ফুট নীচে ইট, খোয়া, কাদায় পড়তে হবে। অশক্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা বাচ্চাদের মৃত্যুও হতে পারে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল ইত্যাদি-সহ পার হচ্ছে প্রতিদিন। কোনও বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটার আগে জেটিটি মেরামত, বন্ধ করে দেওয়া বা অন্য কোনও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
হাজারিলাল মণ্ডল। কচুখালি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
|
গৌতম চক্রবর্তীর ‘আমি কোথাও যাব না’ (১৩-১১) শীর্ষক নিবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘কবরখানা থেকে বেরিয়ে আসছি, আকাশে চাঁদের আলো। আর তখনই চোখে পড়ে গেল তাকে। পাশের জঙ্গলে হাঁটছে। বড়সড় বনবিড়ালের মতো দেখতে, বিশাল রোমশ লেজ, গলার কাছে হলুদ-কমলা। ইয়েলো থ্রোটেড মার্টেন! রাস্কিন বন্ডের গল্পের চিতাবাঘ দেখতে পেলাম না, এটাই বা কম কী!’ চাঁদের আলোয় কোনও জন্তুর শরীরের কোনও অংশের হলুদ-কমলা রং চেনা সম্ভব নয়। কারণ, মানুষকে রং চিনতে গেলে আলোর এমন প্রাবল্য হওয়া দরকার, যাতে চোখের রেটিনা মধ্যের কোষগুলি জাগ্রত হয়। চাঁদের আলোয় তেমন প্রাবল্য নেই। তাই আমরা চাঁদের আলোয় রং চিনতে পারি না। চাঁদের আলোয় রেটিনার মধ্যের বড় কোষগুলি জাগ্রত হয়। ফলে, ওই কম আলোতে রং চিনতে না-পারলেও আমরা দেখতে পাই। ‘অমৃতের মৃত্যু’ উপন্যাসে ব্যোমকেশ বলে, ‘শেয়ালের গায়ের রং কালো নয়, পাটকিলে। অথচ আমরা দেখলাম কালো। ঘোড়াটাও কালো ছিল না, ছিল বাদামি রঙের। ইংরেজিতে যাকে বলে চেস্ট নাট। চাঁদের আলোয় সব গাঢ় রং-ই দূর থেকে কালো দেখায়।’ (উৎস: শরদিন্দু অমনিবাস, ২ খণ্ড, পৃ: ২৪৪, প্রথম সংস্করণ, ঊনত্রিশ মুদ্রণ)
পঙ্কজ পাঠক। বর্ধমান-৩ |