বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভিআইপি রোড লাগোয়া কেষ্টপুর মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে কাগজ পড়ছিলেন এলাকার তৃণমূল নেতা স্বপন মণ্ডল। আচমকাই তাঁর দিকে ছুটে আসে এলোপাথাড়ি গুলি। মাটিতে
লুটিয়ে পড়েন বছর ৩৮-এর স্বপনবাবু। জখম হন তাঁর দুই সঙ্গী রঞ্জিত রায় এবং সুকুমার মণ্ডলও। হতভম্ব এলাকার মানুষ দেখেন,
তিনটি মোটরবাইকে চড়ে আততায়ীরা পূর্ণগতিতে কেষ্টপুর রোড ধরে বেরিয়ে যাচ্ছে নিউটাউনের দিকে। স্বপনবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে যাওয়া হয় এলাকার একটি নার্সিংহোমে। সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান স্বপনবাবু।
রবিবার ভরদুপুরে এই ঘটনায় গোটা কেষ্টপুর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন স্বপনবাবু। তৃণমূলের একাংশও একই দাবি করেছে। তাদের অভিযোগ, রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায় জমির দালালি, প্রোমোটার রাজ ও সিন্ডিকেট দখল নিয়ে এলাকায় দলের মধ্যেই রেষারেষি চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এর জেরেই খুন হতে হল স্বপনবাবুকে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুড়ো নামের এক স্থানীয় যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
দেওয়া হয়েছে বলে নার্সিংহোম সূত্রের খবর। এই খুনের পিছনে কেষ্টপুরের একটি ক্লাবের সদস্যদের মধ্যেকার দলাদলিও যুক্ত থাকতে পারে বলে পুলিশের সন্দেহ। ওই ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা বেশ কিছু সূত্র পেয়েছি। স্বপনের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” |
দুপুরে নার্সিংহোমে বসে জখম রঞ্জিত রায় বলেন, “আমি আর সুকুমার কাগজ পড়ছিলাম। স্বপনদা একটু দূরে ছিল। হঠাৎই ওরা এসে গুলি ছুড়তে শুরু করে। আমি প্রাণ বাঁচাতে দৌড়তে থাকি। পরে দেখি, স্বপনদা মাটিতে পড়ে রয়েছে। দুষ্কৃতীরা পরিচিত মুখ নয়।” এই ঘটনার পরই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মিনিট দশেক অবরোধ করা হয় ভিআইপি রোডের জোড়ামন্দির এলাকা। স্বপনবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের নার্সিংহোমে আনার পর সেখানে অন্য রোগীদের ঢুকতে বা বেরোতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর করা হয় স্বপনের মৃতদেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্সটিও।
পুলিশ জানায়, কয়েক মাস আগেও স্বপনের উপরে হামলা হয়েছিল। সে বারেও গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এ দিন ভরদুপুরে এই ধরনের ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, “ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশ ছিল। ঘটনা ঘটার কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ আসে। দুষ্কৃতীরা কেষ্টপুর এলাকার গলিঘুঁজি ধরে পালিয়ে গিয়েছে। বাগুইআটি-রাজারহাট-নিউটাউনের এলাকার পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছি।” |