অবশেষে সবুজ সঙ্কেত মিলল। জঙ্গিপুরের সবুজদ্বীপকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য পর্যটন দফতর। এর জন্য কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তরফে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা অনুমোদনের ছাড়পত্র পাওয়া গিয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের কর্তারা সরেজমিনে দ্বীপটি দেখেও গিয়েছেন।
রবিবার সবুজদ্বীপে আসেন পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার দেবলকুমার ঘোষ-সহ ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এর আগে ১০ নভেম্বরও এলাকা পরিদর্শনে আসেন তাঁরা। দেবলবাবু বলেন, “জঙ্গিপুরের ওই সবুজ দ্বীপটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। দ্বীপটি দেখেও এসেছি। এই নিয়ে সামগ্রিক একটি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “শুধু টয়ট্রেন, শিশু উদ্যান বা বোটিং-ই নয়, সারা রাজ্য থেকেই যাতে পর্যটকেরা এখানে আসেন, তেমন ভাবেই দ্বীপটি গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে।”
ভাগীরথীর তীরে এই দ্বীপটি যথেষ্ট আকর্ষণীয়। জঙ্গিপুর পুরসভা এই দ্বীপটি গড়ে তুলেছে। দেবলবাবু বলেন, “ওই উদ্যানকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে জঙ্গিপুর পুরসভার সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। উপযুক্ত পরিকাঠামোর মাধ্যমে দ্বীপটি সাজিয়ে তোলার পরে কোনও বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সেটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে।” |
সবুজদ্বীপ পরিদর্শনে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের
প্রতিনিধি দল। ছবি তুলেছেন অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়। |
প্রায় ১২ বছর আগে নদীর ধারে গজিয়ে ওঠা ৬৪ একর চরজমি নিয়ে এই সবুজদ্বীপটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়া হয়। পরিচালনার দায়িত্ব জঙ্গিপুর পুরসভার হাতে যায়। কিন্তু ৩৮ লাখ টাকা খরচ করে গড়ে ওঠা ওই দ্বীপটি বছর তিনেক যেতে না যেতেই ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়ে। পাখিরালয় বন্ধ হয়ে যায়। শিশুপার্ক, টয়ট্রেন সব কিছুই অচল হয়ে যায়। এমনকী, দ্বীপটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ১২ জন কর্মীর বেতন নিয়েও শুরু হয় আর্থিক সঙ্কট। পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “এক সময় দ্বীপটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র থেকে দ্বীপটিকে পিকনিক স্পট হিসেবে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। সুষ্ঠুভাবে দেখভালের অভাবে দ্বীপটির আকর্ষণ কমেছে। কিন্তু কয়েক হাজার গাছ থাকায় দ্বীপটি এখনও খুব সুন্দর।” তাঁর কথায়, “এখন আর্থিক সঙ্কট কেটেছে। ৬ জন কর্মী রাখা হয়েছে। এখন লাভের মুখও দেখা যাচ্ছে। ফেল দ্বীপটি নিয়ে পর্যটন দফতরের উদ্যোগে উৎসাহী হয়েছি আমরাও।”
পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর বিকাশ নন্দ বলেন, “শহর হিসেবে রঘুনাথগঞ্জের গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। বেশ কয়েকটি ভাল হোটেল লজও তৈরি হয়েছে। ফলে এই শহরের কাছাকাছি সবুজ দ্বীপ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠলে গোটা এলাকারই লাভ।” সম্প্রতি এই দ্বীপে বেড়াতে এসেছিলেন লালগোলার বাসিন্দা সামাউল্লা শেখ। তাঁর কথায়, “আগে দ্বীপটি আরও আকর্ষণীয় ছিল। তবে এখনও দ্বীপটি ভাল করে সাজানো গেলে এলাকার লোকজন তো উৎসাহী হবেনই এখানে আসতে, আসবেন পাশাপাশি অন্য রাজ্য ও জেলার মানুষজনও।” |