২২ দিন আগে ইস্তফা দিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অর্পূব চক্রবর্তী। তা সত্ত্বেও তাঁকে না-সরানোয় ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত গৌড়বঙ্গ অধ্যাপক মঞ্চ। সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, দ্রুত অপূর্ববাবুকে সরিয়ে অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে বসানো হোক। পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপা দত্ত বলেন, “অর্পূব চক্রবর্তী ২ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আমাকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁর ওই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করার জন্য বুধবার কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই অধ্যাপক মঞ্চের কিছু শিক্ষক ও ছাত্ররা আমার ঘরে ঢুকে কাউন্সিলের বৈঠক বন্ধ করে দিয়েছে। বৈঠক বন্ধ করে আমাকে মঞ্চের শিক্ষক ও ছাত্ররা অপমান করেছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাম, ডান সকলের সঙ্গে অনেক তর্কবিতর্ক হয়েছে। কেউ কোনদিন অপমান করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার মুখে শিক্ষকদের আচরণে আমি উদ্বিগ্ন। গোটা বিষয়টি আচার্য, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী কে জানানো হয়েছে। সরকার যা নিদের্শ দেবে সেই অনুযায়ী কাজ করব। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বিষয়টিও সরকারকে জানানো হয়েছে। সরকারই ঠিক করবে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২৬ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অর্পূব চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সপেক্টর অফ কলেজেস-এর দায়িত্বেও রয়েছেন। মঞ্চের শিক্ষকদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদ আঁকড়ে অর্পূববাবু একের পর এক বেআইনি কাজ করে যাচ্ছেন। অধ্যাপক মঞ্চের সম্পাদক দিলীপ দেবনাথ বলেন, “অর্পূব চক্রবতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অ্যসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রফেসর ও প্রফেসর থাকা সত্ত্বেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্পূববাবুকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে বসানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সপেক্টর অফ কলেজের পদে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফের নিজেই ওই পদে আবেদন করেছিলেন অপূর্ববাবু। ইন্সপেক্টর অফ কলেজেসের যে যোগ্যতা থাকা উচিত, সেই যোগ্যতা না থাকা সত্বেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকেই ইন্সপেক্টর অফ কলেজেস পদে নিয়োগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ।” মঞ্চের সম্পাদকের অভিযোগ, ইন্সপেক্টর অফ কলেজেসের পদে নিযোগের বিজ্ঞাপনে যোগ্যতা ছিল ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ৫ বছরের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা। অথচ অর্পূব চক্রবতীর শিক্ষকতার যোগ্যতা ছিল মাত্র ৫ বছর ৭ মাস ৮ দিন। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ২ বছরের কিছু বেশি। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শান্তনু সাহা বলেন, “ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে ২৬ নভেম্বরের পর আর কাজ করতে দেব না। শুধু রেজিস্ট্রারের পদ থেকেই নয় , ইন্সপেক্টর কলেজেসের পদ থেকে যদি অর্পূব চক্রবতী স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেন তো ভাল। না হলে আমরা তাঁর ইন্সপেক্টর অফ কলেজেসের বেআইনি নিয়োগের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করব।” এদিকে, যাকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে সেই ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার অর্পূববাবু বলেন, “আমি রেজিস্ট্রার পদে থাকতে চাই না। অব্যাহতি চেয়ে উপাচার্যকে ২ নভেম্বর চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। তা ছাড়া আমি কোনও অন্যায় কাজ করিনি। করবও না। কেউ যদি আদালতে মামলা করতে চায় করতেই পারে।” |