|
|
|
|
মহাকরণ অভিযানে এপিডিআর |
বাহিনীর অত্যাচার কমেনি, অভিযোগ ছত্রধর-পত্নীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এখনও জঙ্গলমহলে সাধারণ মানুষের উপরে যৌথ বাহিনীর অত্যাচার চলছে বলে অভিযোগ করলেন জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৌবাজার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মোড়ে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)-সহ ২১টি গণ সংগঠনের অনশন মঞ্চে বক্তৃতা দেন নিয়তিদেবী। বৃহস্পতিবার ছিল ওই সংগঠনগুলির অনশনের দ্বিতীয় এবং শেষ দিন।
|
ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী
নিয়তি মাহাতো— নিজস্ব চিত্র |
নিয়তিদেবী বলেন, “রাজ্যে সরকার বদল হলেও নীতি বদল হয়নি।” ওই অনশন মঞ্চে হাজির ছিলেন ‘নারী ইজ্জত বাঁচাও কমিটি’র জ্যোৎস্না মাহাতো। তাঁর বক্তব্য, “এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আশা করেছিলাম, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে নারীদের উপরে পুলিশি অত্যাচারের যে-সব ঘটনা ঘটেছিল, তার বিচার হবে। কিন্তু গত ছ’মাসে মুখ্যমন্ত্রী তেমন পদক্ষেপ করেননি।” সাম্রাজ্যবাদ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরোধী মঞ্চের অশোকজীবন ঘোষও জঙ্গলমহলে যৌথ বাহিনীর উপস্থিতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এখন জঙ্গলমহলের ভূমিপুত্রেরা সেখানে সভা, মিছিল করতে পারেন না। তাঁদের অনেকেই বাধ্য হয়ে কলকাতায় এসে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা জানিয়ে সভা করেন।” এ দিন রাত ৮টা নাগাদ ৩০ জন অনশনকারী অনশন তুলে নিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং জঙ্গলমহল থেকে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতে আজ, শুক্রবার বেলা ১টায় বৌবাজারের অনশন মঞ্চের সামনে থেকে তারা মহাকরণ অভিযান করবে বলে জানিয়েছে এপিডিআর। পক্ষান্তরে, ধর্মতলায় আইএনটিটিইউসি-র সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এ দিনই জানান, তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তির প্রতিশ্রুতি ছিল না। ওই বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের যে-অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা মিথ্যা। এপিডিআর-কে নিজেদের সভামঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়ে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “সরকারের ভাল কাজের তালিকাটা এই মঞ্চে এসে বলুন। তা হলে সরকারের খারাপ কাজের তালিকাও শুনব। আমি এই মঞ্চ ছেড়েই চলে যাব। এটা আপনাদের মঞ্চ হয়ে যাবে।” এপিডিআর এবং বিশিষ্টজনেদের উদ্দেশে শ্রমমন্ত্রীর আহ্বান, “এখনই অহেতুক দাবি না-তুলে, সরকারের বিরোধিতা না-করে শান্তি এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে রাস্তায় নামুন। বিশিষ্টজনেরা সরকারকে বুদ্ধি দিন। নিজেদের বুদ্ধির অপব্যবহার করবেন না। সরকারের ভুল থাকলে সমালোচনা করুন। আলোচনার দরজা খোলা। অনশন বা অবরোধ করতে হবে না।” এপিডিআর নেতৃত্ব ও বিশিষ্টজনেদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলমহলে গিয়ে স্কুলগুলিতে পড়ান। ওখানকার লোকেদের বিজ্ঞান শেখান। তাঁদের নিয়ে প্রকল্প করুন। কারা এগিয়ে আসবেন? সরকারের কাছে নাম লেখান।”
সরকারের তরফে পূর্ণেন্দুবাবু এ দিন ফের সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পরিহার করার আহ্বান জানান মাওবাদীদের উদ্দেশে। তাঁর বক্তব্য, ওই পথ যে ভুল, তা দুনিয়া
জুড়ে প্রমাণিত। বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
প্রতিশ্রুতি অনুসারে উন্নয়নের কাজ না-হলে মাওবাদী
বা জঙ্গলমহলের মানুষের পক্ষে রাস্তায় মিছিল করা
উচিত আন্দোলনকারীদের। পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, “সেই মিছিলে আমি হাঁটব। কিন্তু মানুষকে ভুখা রেখে সশস্ত্র সংগ্রামের তত্ত্ব মানব না।” |
|
|
|
|
|