প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে বিডিও’র সামনেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি বাধল। বৃহস্পতিবার তালড্যাংরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাঘর চত্বরে এই ঘটনাটি ঘটে। ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি-সহ জখম হন ছ’জন। তাঁদের মধ্যে ওই নেতা-সহ দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁদের ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চার জনকে স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তালড্যাংরা ব্লক ছাত্র যুব উৎসব নিয়ে এ দিন দুপুরে ওই সভাঘরে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তালড্যাংরার বিডিও সুমন দাশগুপ্ত বলেন, “ছাত্র-যুব উৎসব সংক্রান্ত বৈঠক শুরুর আগেই হঠাৎ দেখি পঞ্চায়েত সমিতি ভবন চত্বরে মারামারি শুরু হয়। এক জন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যান। আর একজনকে দেখি মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশকে খবর দিই।” তিনি জানান, পুলিশ আসার পরে অচৈতন্য অবস্থায় দু’জন ও জখম আরও চারজনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। তালড্যাংরার ব্লক মেডিক্যাল স্বাস্থ্য আধিকারিক চন্দন সরকার বলেন, “জখম তাপস সুরের মাথায় গুরুতর চোট রয়েছে। মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছিল। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানো হয়। গুরুতর জখম প্রদ্যোৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নামের একজনকেও সেখানে পাঠানো হয়।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম তাপসবাবু তালড্যাংরার ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সম্পাদক মনসারাম লায়েকের দীর্ঘদিনের বিবাদ। কয়েক মাস আগে দু’দলের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। এ দিন ছাত্র-যুব উৎসবের আয়োজন করা নিয়ে বৈঠকে তাঁদের পরস্পরের দেখা হয়। অনুগামীদের মধ্যে কেউ কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। এরপরেই তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে মারপিট শুরু হয়ে যায়। মনসারামবাবুর দাবি, “ওই বৈঠকে তাপসকে না ডাকার কারণে তিনি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে সভাঙর চত্বরে হম্বিতম্বি শুরু করেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে দলের এক মহিলা নেত্রীকে তাঁর অনুগামীরা মারধর করে। তা সহ্য না হওয়ায় দলের কয়েক জন কর্মী তাপস ও তাঁর অনুগামীগের মারধর করেন।” বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফোনে তাপসবাবু পাল্টা দাবি করেন, “দলের যুব সভাপতি হিসেবে বিডিও আমাকে ওই বৈঠকে ডেকেছিলেন। কিন্তু মনসারামবাবুর অনুগামীরা আমাকে সেখানে দেখে মারধর শুরু করে দেয়। আমার ঘনিষ্ঠদেরও মারধর করা হয়।” তৃণমূলের তালড্যাংরা ব্লক সভাপতি সুধীন ভূঁইয়ের অভিযোগ, “কয়েক দিন আগে তাপসের লোকজন আমাদের দলের তালড্যাংরা ব্লক সম্পাদক মনসারামবাবুকে বেধড়ক মারধর করেছিলেন। তাঁর টাকা-পয়সাও কেড়ে নেওয়া হয়। এ দিনের ঘটনা তারই পাল্টা বলে মনে করা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। |