|
|
|
|
ভূমি দফতরে আরও রাজস্ব আদায়ে জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে আরও বেশি রাজস্ব আদায়ে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ফাইল পড়ে থাকার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। তারই সঙ্গে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ হল, বিভিন্ন পাথর খাদান, বালি খাদানের সঙ্গে এক শ্রেণির কর্মী অফিসারের অশুভ আঁতাত। ফলে এই দফতর থেকে যে ধরনের রাজস্ব পাওয়ার কথা সরকার তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী আবার নিজেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতেরর মন্ত্রী। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও সম্মেলনে তিনি ওই দফতরের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দফতর যাতে আরও বেশি রাজস্ব আদায় করে তার জন্য প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে যাতে বেশি রাজস্ব আদায় করা যায় সে জন্য পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা এই ব্যাপারে কী করা যায় দেখছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অবশ্য বেশ কিছু সমস্যাও রয়েছে। বর্তমানে জেলা ও জেলা ভূমি সংস্কার আধিকারিক নেই। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস-ই এই দফতরেরও দায়িত্বে। চারটি মহকুমার মধ্যে ২টি মহকুমাতে মহকুমা আধিকারিক নেই। এ ছাড়াও জেলায় প্রায় ৫০ শতাংশ কর্মী ও আধিকারিকের পদ শূন্য। কিন্তু যা রয়েছে তা দিয়ে যতটা কাজ করা যায় তা-ও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। নিয়মিত সাধারণ মানুষকে হয়রানির মুখে পড়তে হয়। প্রতিদিনই জানানো হয়, ২ দিন পরে আসুন, বা ৪ দিন পরে আসুন। সেদিন এলেও একই কথা শুনে ফিরে যেতে হয়। ফাইল কোথায় তা খুঁজেও কেউ দেখেন না। ফলে মিউটিশনের কাজ দীর্ঘায়িত হয়। রাজস্বও কম আদায় হয়। অন্য দিকে, খাদান থেকে বালি বা পাথর তোলার জন্যও সরকারকে রাজস্ব দিতে হয়। কিন্তু দেখা যায়, একটি ক্যারিং অর্ডার (সিও) নিয়েই ব্যবসায়ীরা ৮-১০ গাড়ি বালি বা পাথর নিয়ে চলে যায়। এক শ্রেণির কর্মী ও অফিসারদের সঙ্গে যোগসাজসে ব্যবসায়ীরা যে সিও নেন তাতে তারিখ বা সময় উল্লেখ থাকে না। কোনও প্রশাসনিক আধিকারিক হঠাৎ তল্লাশিতে নেমে গাড়ি ধরলে তখনই সঙ্গে সঙ্গে সিও তে সেই তারিখ ও সময় লিখে পার পেয়ে যান ব্যবসায়ীরা। ফলে রাজস্ব ছাড়াই শ’য়ে শ‘য়ে লরি বোঝাই বালি-পাথর চলে যাচ্ছে বিভিন্ন পথে। এই অসাধু কারবার বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অনেক সময় বন দফতরের জমি থেকেও অবৈধ ভাবে পাথর তুলে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ঝাড়গ্রামের ডিএফও অশোক প্রতাপ সিংহ লিখিত ভাবে প্রশাসনের কাছে এমন অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। এ বার মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হওয়ায় এই ধরনের বেআইনি কাজ কমবে বলেই সকলে আশাবাদী। অতিরিক্ত জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, “শীঘ্রই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সমস্ত আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। কিভাবে দফতরের কাজে স্বচ্ছতা আনা যায়, রাজস্ব বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনাও করা হবে।” |
|
|
|
|
|