 |
কিষেণ-কথা |
কে এই কিষেণজি?
• নাম মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও। ডাকনাম প্রহ্লাদ। বয়স ৫৫ বছর। বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের করিমনগর জেলার পেড্ডাপল্লির শিবালয়ম স্ট্রিটে। বাবা মাল্লোজুলা বেঙ্কটাইয়া, মা মাল্লোজুলা মধুরাম্মা। বাবা ছিলেন গাঁধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী। স্ত্রী মৈনাক্কা ওরফে কল্পনা ওরফে সুজাতা। তিনি মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য স্পেশ্যাল জোনাল কমিটির সদস্য। দুই ভাইয়ের এক জন মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি ওরফে বিবেক ওরফে সোনু পলিটব্যুরো সদস্য। অন্য ভাই ব্যাঙ্কে কর্মরত। কিষেণজির এক পুত্র ও কন্যা। তাঁরা কলেজে পড়েন।
|
আরও কী কী নামে পরিচিত?
• মুরলী, রামজি, সূর্য, জয়ন্ত
ও শ্রীধর।
|
লেখাপড়া?
• ১৯৭৩ সালে করিমনগরের জাম্মিকুন্টার আদর্শ কলেজ থেকে অঙ্কের স্নাতক। হায়দরাবাদে এলএলবি পড়া শুরু। এক বছর পরেই লেখাপড়ায় ছেদ। তেলুগু ছাড়াও জানেন হিন্দি, বাংলা,ওড়িয়া ও ইংরেজি।
|
কী ভাবে রাজনীতিতে?
• প্রথমে যোগ দেন পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে। পরে পিপলস ওয়ার গ্রুপ (পিডব্লিউজি) বা জনযুদ্ধের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ভারভারা রাও-কে তিনি তাঁর আদর্শ বলে মনে করতেন।
|
দলে কোন পদে ছিলেন?
• কেন্দ্রীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশন ও পলিটব্যুরো সদস্য। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় কার্যত তিনিই ছিলেন দলের প্রধান নেতা। তাঁর অধীনে ছিল কয়েক হাজার সশস্ত্র সদস্য।
|
এ রাজ্যে কবে থেকে
পরিচিত?
• ২০০২ সালে কিষেণজি নাম নিয়ে পুরোদস্তুর পশ্চিমবঙ্গের সংগঠনের কাজ দেখতে শুরু করেন। পরে এমসিসি ও জনযুদ্ধের সংযুক্তিকরণে সক্রিয় ভূমিকা নেন। ২০০৫ সালে নন্দীগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ২০০৭ সালে বিহার-ঝাড়খণ্ড সীমানায় ভীমবাঁধ জঙ্গলে অনুষ্ঠিত ইউনিটি কংগ্রেসে ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরোর সদস্য হন। ২০০৭ সালে লালগড় আন্দোলন গড়ে তোলেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে মাইন ফাটানোর ছক তাঁরই। এর পর থেকেই আরও প্রচারে চলে আসেন তিনি। গণমাধ্যমের সঙ্গেও যোগাযোগ গড়ে তোলেন তিনি।
|
কত ছিল মাথার দাম?
• অন্ধ্রপ্রদেশে ২০ লক্ষ টাকা।
|
কী অস্ত্র ব্যবহার করতেন?
• সঙ্গে থাকত একে-৪৭। তবে মাঝেমধ্যে রাখতেন ইনসাস-ও। সম্প্রতি তাঁর হাতে এসেছিল একটি ৫৬ অ্যাসল্ট রাইফেলও।
|
কী ধরনের নিরাপত্তার মধ্যে
থাকতেন?
• ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকতেন সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার কিষেণজি। সব চেয়ে কাছের স্তরে থাকত জনা আটেক পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র সদস্য। তাদের বাছাই করা হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের ইউনিট থেকে। পুলিশের ধারণা, ভাষাগত সমস্যা এড়ানোর জন্যই সবাইকে অন্ধ্র থেকে নির্বাচন করা হয়।
|
অবসরের ভাল লাগা?
• গান শুনতেন কম্পিউটারে। প্রিয় ছিল সত্তর দশকের হিন্দি গান। জঙ্গলেই একাধিক খবরের কাগজ পড়তেন ইন্টারনেটে।
|

অশান্ত সময় |
২০০৮ |
২ নভেম্বর শালবনিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে |
মাওবাদী বিস্ফোরণ |
৫ নভেম্বর পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লালগড়ে জনগণের কমিটির অবরোধ শুরু |
২০০৯ |
১৯ জুন শালবনিতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু
২৬ সেপ্টেম্বর কমিটির মুখপাত্র ছত্রধর মাহাতো ধৃত
২০ অক্টোবর সাঁকরাইল থানায় মাওবাদী হামলায় দুই পুলিশ খুন, ওসি অপহরণ।
টিভি চ্যানেল মারফত ওসি-র পরিবারকে অভয় কিষেণজির, দু’দিন পরে মুক্তি
২৭ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের কাছে বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস আটকাল মাওবাদীরা |
২০১০ |
১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা,
২৪ জওয়ান নিহত |
২২ ফেব্রুয়ারি জনগণের কমিটির সভাপতি লালমোহন টুডু নিহত |
২৫ মার্চ শালবনির লক্ষ্মণপুর জঙ্গলে কিষেণজির সন্ধানে
যৌথ বাহিনী।
হাজার রাউন্ডের
বেশি গুলি বিনিময়।
কিষেণজি আহত হন বলে খবর।
এর পরে মাস ছয়েক পুলিশ
তাঁর গতিবিধি জানতে পারেনি |
২৭ মে সরডিহায় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতা, হত ১৪৮ |
২৬ জুলাই গোয়ালতোড়ের জঙ্গলে জনগণের
কমিটির সম্পাদক সিধো সোরেন-সহ নিহত সাত |

২০১১ |
১০ মার্চ জামবনিতে অন্যতম মাওবাদী
শীর্ষ নেতা শশধর মাহাতো নিহত |
১৭ নভেম্বর মাওবাদী স্কোয়াড কমান্ডার জাগরী বাস্কে
ও রাজারাম সোরেনের আত্মসমর্পণ |
২৪ নভেম্বর কিষেণজি নিহত
|

কমিউনিস্ট পার্টি
অফ ইন্ডিয়া
(মাওবাদী) |
দলে পলিটব্যুরো সদস্য
মোট ১৭ জন। |
মোট ৭ জন পলিটব্যুরো
সদস্য এ পর্যন্ত নিহত। |
• মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও বা কিষেণজি |
• প্রকাশ- অন্ধ্রপ্রদেশ |
• গঙ্গনা কেশব রাও- অন্ধ্রপ্রদেশ |
• পরিমল ওরফে মধুসূদন- অন্ধ্রপ্রদেশ |
• কুপ্পু দেবা রাজ- কর্নাটক |
• শ্রীকান্ত- কেরল (দিল্লিতে
ছাত্র সংগঠনের
কাজে ছিলেন। ২০১০ জুলাইতে নিহত) |
• চেরুকুড়ি রাজকুমার
ওরফে আজাদ
(সংগঠনের মুখপাত্র ছিলেন) |
জেলে রয়েছেন
পাঁচ জন শীর্ষ নেতা |
• কোবাড গাঁধী |
• প্রমোদ মিশ্র |
• অমিতাভ বাগচী |
• আশুতোষ টুডু |
• সুশীল রায় |
আত্মগোপন করে
রয়েছেন |
• মুপাল্লা লক্ষ্মণ রাও
ওরফে গণপতি
(বর্তমান সাধারণ সম্পাদক) |
• প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা |
• কাটাকাম সুদর্শন |
• শ্রী চুদাসামা
আমন্ত্রিত সদস্য |
• এরিক কাশদান
(আজাদ মারা
যাওয়ার পর
প্রেস বিবৃতি লেখক) |
|
|