|
|
|
|
জাহিরকে রেখে অস্ট্রেলিয়া সফরের দল |
সুমিত ঘোষ • মুম্বই |
সচিন তেন্ডুলকরের শততম সেঞ্চুরি নিয়ে উথালপাতাল আবহাওয়ার মধ্যেই হতে যাচ্ছে দু-দু’টো দল নির্বাচন। শুক্রবার শ্রীকান্তের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নির্বাচক কমিটি বসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে টিম বাছতে। সেটা তাও মামুলি আখ্যা পেতে পারে। কিন্তু তার পরের দিনই অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট দল নির্বাচন। ধোনিদের জন্য যে সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। এমনি সময় হলে যা নিয়ে তুল্যমূল্য আলোচনা শোনা যেত। সচিন নিয়ে সমুদ্রগর্জনে যা চাপা পড়ে যাচ্ছে।
এমনিতে দু’টো বৈঠকেই কিছু না কিছু ঝড় উঠতে যাচ্ছে। ওয়ান ডে দল নির্বাচনী বৈঠক যেমন উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে যুবরাজ সিংহকে নিয়ে। দু’এক জন নির্বাচক বিশ্বকাপের ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টকে নিয়ে এমনই তিক্ত হয়ে আছেন যে, তাঁরা এক দিনের দলেও আর যুবরাজকে রাখতে চান না। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এঁরা সংখ্যালঘু। যার জন্য যুবরাজের ওয়ান ডে টিমে টিঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তেমনই অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে তাঁর না থাকাটা মোটামুটি স্থির হয়ে গিয়েছে। নির্বাচকদের ভেতরকার সওদা হল, যুবরাজকে টেস্ট টিমে এখনই আর ফেরানো হবে না। ওয়ান ডে টিমে ঠিক আছে রেখে দাও।
ঠিক হয়েছে জাহির খানকে রেখে অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট দল গড়া হবে। জাহির রঞ্জি ম্যাচ খেলে ফিটনেসের পরীক্ষা দেবেন। পাশ করে গেলে তিনিই যাবেন। আটকে গেলে তখন বদলির নাম ঘোষণা করা হবে।
হরভজন সিংহকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হবে কি হবে না সেটা ২৫ তারিখের বৈঠকের সবথেকে বিতর্কিত বিষয় হতে যাচ্ছে। হরভজনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রবিচন্দ্রন অশ্বিন অস্ট্রেলিয়ার টিকিট বুক করে ফেলেছেন। এ দিন সিরিজে দ্বিতীয় বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট তুলে নিলেন। যদিও গত কাল তাঁর করা মন্তব্যের জেরে আজ পাল্টা তাঁকে কথা শুনিয়ে দিলেন গৌতম গম্ভীর। বললেন, “অশ্বিনের মোটেও এটা বলা ঠিক হয়নি। প্রতারিত হওয়ার কী আছে? এত হতাশ হওয়ারই বা কী আছে? আমাদের যখন গ্রিন টপে খেলতে হয় তখন কি আমরা বলি যে, আমাদের প্রতারিত করা হচ্ছে! জীবনটাই এ রকম। এ সব নিয়ে বাঁচতে শেখা দরকার ওর।”
নির্বাচনী সভার জন্য সমস্যাটা অশ্বিন নন। সমস্যাটা হল, দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে হরভজন সিংহ যাবেন নাকি প্রজ্ঞান ওঝা? হরভজনকে অধিনায়ক-সহ টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যেতে চাইবে বলায় নির্বাচকদের কেউ কেউ বৃহস্পতিবার রাতে বললেন, “ওঝাকে কি করে বা দেওয়া হবে?” বোঝাই যাচ্ছে, সর্দারকে নিয়ে এঁদের মনোভাবের কোনও অদলবদল হয়নি। কারও কারও মনে হচ্ছে, মোহিন্দর অমরনাথ যোগ দেওয়ার পর নির্বাচক কমিটি আরও কট্টর হয়ে গিয়েছে। আর ভারতীয় ক্রিকেটমহলের একাংশের ব্যাখ্যা হল, শুধুমাত্র ক্রিকেটীয় কারণই এখানে মুখ্য নয়। বোর্ডের মধ্যে পঞ্জাবের প্রতিপত্তি কমে যাওয়াটাও কারণ। আই এস বিন্দ্রার সেই প্রভাব নেই যে, তিনি উদ্যোগ নিয়ে হরভজন বা যুবরাজের টিমে থাকার ব্যবস্থা করবেন। বরং প্রভাবশালী এখন দক্ষিণী লবি। শ্রীনিবাসন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আর তার প্রভাব দল নির্বাচনী সভাতেও পড়বে।
ক্রিকেটারদের অনুরোধে বোর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার ফর্মুলা নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য। ব্যাটসম্যানদের একটা দলকে আগেভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। যাতে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যথেষ্ট সময় পান তাঁরা। নির্বাচকেরা আবার রাত পর্যন্ত জানেন না, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজে সচিন খেলবেন কি না। শততম সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩৩ রান দূরে থাকা এই অবস্থায় আজই কেউ জিজ্ঞেস করতে চাননি। তবে কারও কারও মনে হচ্ছে, শততম সেঞ্চুরিটা হয়ে গেলে সচিন এক দিনের সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন। তখন বিশ্রাম নিয়ে তাজা অবস্থায় যেতে চাইবেন গুরু গ্রেগের দেশে। আর যদি সেঞ্চুরি আটকে যায় তা হলে ওয়ান ডে সিরিজ খেলতেও পারেন। কারণ তখন তাঁর মনে হতে পারে শততম সেঞ্চুরির কাঁটাটা উপড়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া যাই। না হলে ডনের দেশে গিয়েও তো গলায় বিঁধতে থাকবে! |
|
|
|
|
|