আই লিগের নিয়ম ভাঙার দায়ে মোহনবাগানকে শাস্তি দিতে পারে ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার তাদের শো-কজ করা হয়েছে।
বুধবার প্রয়াগ ইউনাইটেডের কাছে হারের পর কোচেরা সাংবাদিক সম্মেলনে না আসার খেসারত দিতে হতে পারে সুব্রত ভট্টাচার্যর টিমকে। ম্যাচ কমিশনার গোয়ার অ্যান্টনি ডি’কস্টার রিপোর্ট জমা পড়েছে এ দিনই। আই লিগের সি ই ও সুনন্দ ধর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “মোহনবাগানকে শো-কজ করা হয়েছে। উত্তরও এসেছে। আমরা সেটা প্রয়াগকে পাঠিয়েছি। উত্তর এলেই কমিটির সামনে সব ফেলা হবে। তারা যা বলবেন সেটাই হবে।”
আই লিগের নিয়মানুযায়ী, ম্যাচের পর কোচেদের সাংবাদিক সম্মেলন করা বাধ্যতামূলক। না আসলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করাই নিয়ম। টাকার অঙ্কটা সামান্য হলেও ক্লাবের পক্ষে এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করছেন ফেডারেশনের একাংশ। সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি যে, প্রয়াগের কোনও প্রেস অফিসারই ডাকতে আসেননি। কোচেরা তো পয়তাল্লিশ মিনিট ড্রেসিংরুমে অপেক্ষায় ছিলেন।”
মোহন-সচিবের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি ম্যাচ কমিশানার। বৃহস্পতিবার তিনি বললেন, “দুটো টিমই হোম টিম। স্টেডিয়ামের কোথায় সাংবাদিক সম্মেলন হচ্ছে সেটা দু’টো দলই জানত। তা সত্ত্বেও মোহনবাগান আসেনি। এটা ঠিক নয়। আমি আমার রিপোর্ট কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। ওরা যা করার করছে।” ম্যাচের আয়োজক প্রয়াগ ইউনাইটেড সূত্রের খবর, আই এফ এ-র এক সহ-সচিব ও এক জন কর্মী অন্তত চার বার মোহনবাগান ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলেন কোচেদের মিডিয়া রুমে নিয়ে আসার জন্য। তাঁদের কেউ গুরুত্বই দেয়নি। বন্ধ গেটের সামনে থেকে তাদের ফিরিয়ে দেন ক্লাবের অতি উৎসাহী আধা-কর্তারা। এটা ম্যাচ কমিশনারকে তখনই জানিয়ে দেওয়া হয়। জানানো হচ্ছে ফেডারেশনকে।
এরই মধ্যে আই লিগে হারের ধাক্কা কাটিয়ে আজ শুক্রবার কলকাতা লিগে জয়ের পথে ফিরতে চাইছে মোহনবাগান। নিজেদের মাঠে পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে ম্যাচটি জেতার জন্য দু’জন বিদেশিকে নামিয়ে দিচ্ছেন সুব্রত ভট্টাচার্য। হোসে ব্যারেটো এবং ড্যানিয়েল জেলেনি। মোহন টিডি বললেন, “ড্যানিয়েলকে আরও সড়গড় করে নিতে নামাচ্ছি। আর ব্যারেটোও চোট সারিয়ে ফিরেছে। টিমকে জেতানোর জন্য ওকে দরকার।” তবে বুধবার খোঁড়াতে থাকা ওডাফাকে নামাতে চাইছেন না সুব্রত। সুনীল-নবি-জুয়েলরা এ দিনই জাতীয় শিবিরে চলে গিয়েছেন। ফলে ব্যারেটোর সঙ্গে অসীম বিশ্বাসকে সামনে রেখেই শুরু করবে মোহনবাগান।
আপাতত কলকাতা লিগ নিয়ে ভাবলেও সুব্রতর লক্ষ্য কিন্তু ২ ডিসেম্বর লাজং এফ সি-র সঙ্গে অ্যাওয়ে ম্যাচ। এই মুহূর্তে দলে চোট-আঘাত ভর্তি। ওডাফা, হাদসন, রাকেশ মাসি, আনোয়ার, প্রদীপ স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সদ্য যোগ দেওয়া মোহনরাজ কে নেই সেই তালিকায়। সুব্রত বললেন, “একটা হারের পরই হইচই হচ্ছে। আমরা কিন্তু এখনও লিগ টেবিলের দু’নম্বরে আছি। লাজংয়ের বিরুদ্ধে ওদের মাঠে গিয়ে জিততে হলে যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে সুস্থ করে তুলতে হবে।”
প্রয়াগের কাছে হারের পর কলকাতা লিগের কথা ভেবে এ দিন অনুশীলন ডাকেন সুব্রত। টিম মিটিং-ও করেন। বললেন, “ছেলেদের বলেছি, খেলতে পারিনি বলে হেরেছি। পরের ম্যাচ ভাল খেলতে হবে।”
|
প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ইস্টবেঙ্গলের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বড় ম্যাচে পেনাল্টির প্রতিবাদে আই লিগের পরের তিন ম্যাচে কালো ব্যাজ পরে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। ওই তিন ম্যাচে সমর্থকদেরও অনুরোধ করা হচ্ছে, কালো ব্যাজ পরে মাঠে আসতে। ম্যাচ কমিশনার যদি ফুটবলারদের কালো ব্যাজে আপত্তি করেন, তা হলে সমর্থকদের ব্যাজটাই হবে প্রতিবাদ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এই বক্তব্য জানিয়ে দিলেন ক্লাব কর্তারা। তাঁদের দাবি, প্রতাপ সিংহকে চলতি আই লিগে যেন ইস্টবেঙ্গলের আর একটিও ম্যাচ করতে না দেওয়া হয়। ক্লাব কর্তারা ফেডারেশনের কাছে আবেদন করছেন একটি সভা আয়োজনের। তাঁদের দাবি, ওই সভায় ফেডারেশনের প্রতিনিধি ছাড়াও থাকুন রেফারি প্যানেলের চেয়ারম্যান, ফেডারেশনের মার্কেটিংয়ের দায়িত্বে থাকা আইএমজি গোষ্ঠী এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞরা। আর আলোচনা হোক রেফারিংয়ের মান নিয়ে। প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে সব কর্তা ছিলেন ক্লাবে। কিছু সমর্থক বুকে পোস্টার ঝুলিয়ে ঘুরছিলেন মোহনবাগান ও রেফারিকে ব্যঙ্গ করে। কর্তারা বড় ম্যাচে লাল-হলুদ জার্সি না পড়তে দেওয়া নিয়েও সরব। মোহনবাগানের উদ্দেশে ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার কটাক্ষ করেন, “এত দিন যারা বড় ম্যাচে বিদেশি রেফারির দাবি জানাত, তারা এ বারে কিছু বলল না কেন?” রেফারি প্রতাপ সিংহও ছাড় পাননি। সচিব বলেন, “রেফারি তো ‘বস’-এর নির্দেশ পালন করেছেন।”
|
শুক্রবারে
কলকাতা লিগ
মোহনবাগান: পিয়ারলেস
(মোহনবাগান ২-১৫)। |