|
|
|
|
উল্লসিত কংগ্রেস |
মুলতুবির ফেরে আপাতত মুলতুবি ‘বিরোধী ঐক্যও’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
অচল সংসদের তিন দিনের মাথাতেই বাম ও বিজেপির ‘বিরোধী ঐক্যে’ ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠল। শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনে মূলত তেলেঙ্গানা নিয়ে টিআরএস ও কংগ্রেসের হট্টগোলে সংসদ ফের অচল হলেও সুকৌশলে বাম-বিজেপিতে ফাটল ধরিয়ে উল্লসিত সরকার পক্ষ।
অধিবেশনের আগেই বাম ও বিজেপি স্থির করেছিল, মূল্যবৃদ্ধি ও কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে দু’টি মুলতুবি প্রস্তাব আনা হবে। বিজেপির সমর্থন নিয়ে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনবে বামেরা। আর বামেদের সমর্থন নিয়ে কালো টাকা উদ্ধারের দাবিতে মুলতুবি প্রস্তাব আনবে বিজেপি। কিন্তু সংসদের তিন দিনের মাথায় পরিস্থিতি যা দাঁড়াল, তাতে বামেদের মুলতুবি প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেল। আর সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে খসড়ার বয়ান লঘু করে নিজেদের মুলতুবি প্রস্তাবটি আদায় করে নিল বিজেপি।
ফলে সংসদের অধিবেশনের গোড়ায় ‘বিরোধী ঐক্য’ নিয়েবাম-বিজেপি যে ঢাক পেটাচ্ছিল, আজ কার্যত তা ফেঁসে গেল। সংসদে সিপিএমের দলনেতা সীতারাম ইয়েচুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “বামেরা আদৌ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব থেকে সরে আসেনি। কিন্তু সরকারের সঙ্গে বিজেপি সমঝোতা করে তাদের মুলতুবি প্রস্তাবটি আদায় করে নিয়েছে। বিজেপির প্রস্তাবে এখন সরকারের ব্যর্থতা ও জবাবদিহির প্রসঙ্গটিই রাখা হচ্ছে না।” সীতারাম জানান, এই পরিস্থিতিতে বামেরা কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের খসড়ায় সংশোধনী আনবে। কালো টাকা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানাবে। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি সীতারাম। জানান, এনডিএ আমলে কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি, মরিশাস রুট খোলা নিয়ে সেই সরকার কী ভাবে তৎপর হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ তুলেও বিজেপিকে বিঁধবার প্রস্তুতি নিচ্ছে বামেরা। সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া জানান, “আর্থিক সংস্কারের বিভিন্ন বিলে বিজেপির সাহায্য দরকার বলেই সরকার প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে আঁতাত করেছে। বিজেপি মুলতুবি প্রস্তাবে ভোটাভুটি না চাইলে, আমরা চাইব।” বামেরা কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণের নিশানা করলেও বিজেপি এখনও ‘বিরোধী ঐক্য’ বজায় রাখার কথাই বলছে। লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, “আমরা বিরোধী ঐক্য বজায় রাখার তাগিদেই প্রতিটি ধাপে বামেদের মত নিয়ে সতর্ক পদক্ষেপ করছি। স্পিকার যখন একই অধিবেশনে দুটি মুলতুবি প্রস্তাব আনার বিরোধিতা করে শুধু কালো টাকা নিয়ে প্রস্তাবে রাজি হল, তখনও বাসুদেব আচারিয়া ও গুরুদাস দাশগুপ্তদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
সংসদ শুরুর তিন দিনের মাথায় কৌশলে বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে উল্লসিত কংগ্রেস। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “বিজেপির মুলতুবি প্রস্তাব গ্রহণ করে বামেদেরটি খারিজ হওয়াতেই আজ বিরোধী শিবিরে মনোমালিন্য তৈরি হয়।” কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “সরকার কালো টাকা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। সংসদ চলার অবস্থাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই তা করা গেল না।” কিন্তু বাম ও বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, বিরোধী শিবিরে মতান্তর থাকলেও আজ কেউ হট্টগোল করেনি। বরং টিআরএস-এর দু’জন ও কংগ্রেসের আট জন সাংসদ তেলেঙ্গানা নিয়ে হইচই করে গোটা সংসদ অচল করে রাখল। তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদদের নিরস্ত করতে আজ আসরে নামেন প্রণববাবু। কিন্তু তাঁরা জানান, টিআরএস হট্টগোল করলে তাঁদের কাছেও আর কোনও বিকল্প থাকে না। ফলে কালও সংসদ অচল থাকার আশঙ্কা। |
|
|
|
|
|