খুচরো ব্যবসা, পেনশন বিল
মমতার আপত্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেও বিপাকে সিপিএম
হু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ এবং পেনশন বিলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সিপিএম। তবে একই সঙ্গে তারা ঈষৎ ‘বিপাকে’ও পড়েছে। কারণ, যে সব যুক্তি দিয়ে বামেরা ওই বিষয়গুলির বিরোধিতা করছিল, একই কথা বলছেন মমতাও। স্বভাবতই, মমতার বক্তব্যকে সরাসরি আক্রমণ করা সম্ভব হচ্ছে না সিপিএমের পক্ষে। তারা শুধু প্রশ্ন তুলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের শরিক হয়েও মমতা কেন গোড়াতেও বাধা দেননি।
তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন পেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন। কৃষকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একই যুক্তি সিপিএমেরও। আবার পেনশন বিলের প্রশ্নে মমতা বলেছেন, চাকরিজীবীদের অবসরোত্তর জীবনের জন্য রেখে-দেওয়া অর্থ শেয়ার বাজারে চলে যাবে, এই জিনিস মানা যায় না। ‘সংস্কার’ ভাল কিন্তু সংস্কারের নামে মধ্য ও নিম্ন বিত্ত মানুষের শেষ জীবনের অবলম্বন নিয়ে ঝুঁকি সমর্থন করা যাবে না। এই একই যুক্তি গোড়া থেকেই দিচ্ছে সিপিএম। এখন মমতা তাঁদের হাতিয়ারই তুলে নেওয়ায় দলের তলানিতে-থাকা জনসমর্থনে আরও ভাগ বসার আশঙ্কা যে থাকছে, অস্বীকার করছেন না সিপিএম নেতৃত্ব।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “তৃণমূল নেত্রী সব বলেন কিন্তু ঘটনাগুলো ঘটেই যায়! খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হল। মন্ত্রিসভায় থেকেও বাধা দিলেন না। এখন বলছেন, যখন ইউপিএ-২ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। একই ভাবে গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করছেন এখন। কিন্তু মন্ত্রিসভা বা মন্ত্রিগোষ্ঠীতে আলোচনার সময় ছেড়ে দিলেন!” পেনশন বিলেও তাঁরা প্রথম থেকেই আপত্তি তুলে আসার পরে মমতা পরে সরব হলেন কেন, প্রশ্ন সিপিএমের। কিন্তু মমতার অবস্থানে বামেদের জনসমর্থনে কি আরও টান পড়ার আশঙ্কা থাকছে না? কে আগে বিরোধিতা করেছে, কে পরে, সে সব আম জনতা মাথায় রাখবে? এই সম্ভাবনা অস্বীকার করছেন না সিপিএম নেতৃত্ব। সূর্যবাবুর মতে, “কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হতেই পারেন। মমতা তো বামপন্থী স্লোগান, বামপন্থী পরিচয় ব্যবহার করছেন। হিটলার, মুসোলিনিও সমাজবাদী পরিচয় নিয়ে শুরু করেছিলেন। পরে তাঁদের স্বরূপ মানুষ বুঝতে পেরেছিলেন!”
ইউপিএ-১ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ার সময় মনমোহন সিংহের তথাকথিত ‘সংস্কার’ কর্মসূচি সাধারণ মানুষের স্বার্থেই তাঁরা ঠেকাতে পেরেছিলেন বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। কিন্তু মমতা ইউপিএ-২ মন্ত্রিসভায় থেকেও সেই একই কর্মসূচি রুখতে পারলেন না, এই কথাই বলতে চাইছেন তাঁরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব যেমন বৃহস্পতিবার বলেছেন, “যখন তেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ বা খুচরো ব্যবসায় বিদশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর ব্যাপারে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছ, তখন তৃণমূল হাত তুলে সায় দিয়েছে! আর যখন তা কার্যকর হচ্ছে, তখন আপত্তি করছে! সত্যিই যদি তারা এর বিরুদ্ধে থাকে, তা হলে আগেই আপত্তি করতে পারত।” কিন্তু একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের নাড়ি যে মমতা বুঝে ফেলতে পারছেন, তা-ও স্বীকার করতে হচ্ছে সিপিএমকে। রবীনবাবুই বলছেন, “তবে মমতা এখন প্রতিবাদ করছেন, এটা ভাল দিক। যদি প্রতিবাদ করেন এবং মানুষ কিছুটা সুরাহা পান, তা হলে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। ভালই!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.