বিনিয়োগের সেরা ঠিকানা রাজ্যই, বার্তা মমতার
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ থেকে ‘বেস্ট বেঙ্গল’। রাজ্য সরকারের দাবি, বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। দিল্লির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মঞ্চকে ব্যবহার করে আজ এই বার্তাই দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি বাণিজ্য মেলায় এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ ‘পার্টনার স্টেট’। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আজ শিল্পপতি মহল ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সামনে মমতা রাজ্যের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে শিল্প স্থাপনে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিলেন। গত ছ’মাসে তাঁর সরকারের ‘সাফল্য’কেও বিপণন করলেন শিল্পকর্তাদের সামনে। চিহ্নিত করলেন বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলি। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি বিপণন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের উপর বিশেষ ভাবে জোর দিয়ে আজ প্রগতি ময়দানে ‘রাইজিং বেঙ্গল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মমতা বলেছেন, “আমাদের রাজ্যে বহু ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চাই শিল্পপতিরা সেই ক্ষেত্রগুলিতে লগ্নি করতে এগিয়ে আসুন। ইতিমধ্যে গত ছয় মাসেই ৫৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে রাজ্যে।” রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগের ফল মিলতে শুরু করেছে। বেশ কিছু বিদেশি সংস্থা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। যেমন মিৎসুবিশি। রাজ্যে তারা ম্যানুফাকচারিং শিল্পের একটি ইউনিট খুলতে এগিয়ে এসেছে।
শিল্পোন্নয়নের পক্ষে প্রয়োজনীয় কিছু ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনাবাসী শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায় তাঁর কাছে আবেদন জানান, নয়াচর দ্বীপে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেতুর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করাটা খুবই জরুরি। জবাবে মমতা আশ্বাস দেন, এই সংযোগের কাজ করা হবে রেলের মাধ্যমে। আজ নয়াচরের পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জয়ন্তী জানিয়েছেন বিষয়টির শীঘ্রই সমাধান হয়ে যাবে।
গত ৩৪ বছরের বাম শাসনে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে শিল্পমহলে যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে, সে কথা বরাবরই বলে আসছেন মমতা। আজ তিনি বলেন, ‘চলছে না চলবে না’ মনোভাব থেকে রাজ্য বেরিয়ে আসতে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করছে। তাঁর কথায়, “আমেরিকা ব্রিটেন, জার্মানি, চিন সমস্ত দেশকেই আমরা পশ্চিমবঙ্গে আসার জন্য অনুরোধ করছি। আমাদের সুলভ শ্রমিক রয়েছে। সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের প্রবেশদ্বার পশ্চিমবঙ্গ। উত্তর-পূর্বের বহু রাজ্যের সঙ্গে আমাদের সীমানা রয়েছে। ফলে আমাদের রাজ্যে বিনিয়োগ করলে একই সঙ্গে এতগুলি দেশের বাজারও ধরা যাবে।” বিনিয়োগ টানতে দিল্লির পাশাপাশি রাজ্যেও আগামী ৬-১১ জানুয়ারি ‘রাইজিং বেঙ্গল সামিট’ করা হবে বলেও জানান তিনি।
শিল্পায়ন তথা রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি যে ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে তা মেনে নিয়েছেন শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয় বুধিয়া, ওয়াই কে মোদীরা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মাও। তিনি জানান, আগামী ‘আসিয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল সামিট’ও হবে পশ্চিমবঙ্গে।
রাজ্যের ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। আজ তাই শিল্পপতিদের আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, “রাজ্য ল্যান্ড ব্যাঙ্ক গঠন করেছে। রয়েছে জমি-মানচিত্রও। শিল্পপতিরা চাইলে নিজেরাও অধিগ্রহণ করতে পারেন।” শিল্প করতে চাইলে জমির অভাব হবে না বলে জানান তিনি। পাশাপাশি লাল ফিতের ফাঁস এড়াতে সরকার শিল্পপতিদের জন্য যে ‘সিঙ্গল উইন্ডো’ ব্যবস্থা চালু করেছে, সে কথাও আজ শিল্পপতিদের জানান মুখ্যমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.