মারা গেলেন উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থানার গুলিবিদ্ধ পুলিশকর্মী প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় (৫০)। গত শনিবার, ১৯ নভেম্বর থানার ব্যারাকেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। মঙ্গলবার কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের অনুমান, প্রদীপবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর বাড়ি হুগলির কানাইপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দেশখালি থানার এএসআই প্রদীপবাবু সেখানকার বয়ারমারি চৌকিতে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি থানায় আসেন। ওসি-র সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ থানার ব্যারাকে নিজের ঘরে যান। একটু পরেই গুলির শব্দ শুনে সহকর্মীরা এসে দেখেন, প্রদীপবাবুর কপালে গুলি লেগেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মেঝেয় পড়ে ছটফট করছেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সরবেরিয়ার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, প্রদীপবাবু মানসিক অবসাদে ভুগেছিলেন। সেই কারণেই নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন। কিন্তু কী কারণে অবসাদ, তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তদন্তকারী অফিসাররা। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর অবসাদ পারিবারিক না কি চাকরি সংক্রান্ত কোনও বিষয় এর সঙ্গে জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কী না, তা-ও দেখা হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রদীপবাবুর মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
পুলিশ অবসাদের কথা বললেও পরিবারের লোকজন অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁরা জানান, গত ১৪ নভেম্বর ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন প্রদীপবাবু। ১৬ তারিখে তিনি সন্দেশখালিতে ফিরে যান। নিয়মিত ফোন করতেন বাড়িতে। ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১৮ তারিখ রাতেও স্ত্রী শিখাদেবীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় তাঁর। সেই সময় তাঁর আচরণ অত্যন্ত স্বাভাবিক ছিল বলে পরিবারের দাবি।
প্রদীপবাবুর ছেলে দীপাঞ্জন বলেন, “আমি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পেয়েছি। তাই নিয়ে বাবার খুশির অন্ত ছিল না। ১৪ তারিখ বাড়িতে এসে আমার ভর্তি নিয়ে তদারকি করলেন। হাসিঠাট্টা করে গেলেন। অবসাদ থাকলে আমরা কেউ তো কিছু তো বুঝতে পারব! কর্মস্থলে ফিরেই হঠাৎ তাঁর অবসাদ হল, আর এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন, এটা আমরা মানতে পারছি না। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে দেখুক।” কানাইপুরে অত্যন্ত সজ্জন এবং মিশুকে বলেই পরিচিত ছিলেন প্রদীপবাবু। |