সিপিএমের সমালোচনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বামফ্রন্টের আইন অমান্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করল না ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা কমিটি। জেলা বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, সোমবার তুফানগঞ্জে বামেদের আইন অমান্য আন্দোলন ছিল। দুপুর নাগাদ মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে সন্ত্রাস ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, একশো দিনের কাজ ও ফসলের ন্যায্য দামের মতো ১২ দফা দাবিতে আইন অমান্য আন্দোলনে নামে কোচবিহার জেলা বামফ্রন্ট। কিন্তু, ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মী ও সমর্থকেরা ওই আন্দোলনে যোগ দেননি।
সম্প্রতি সিপিএমের বিভিন্ন লোকাল সম্মেলনের প্রতিবেদনে ফরওয়ার্ড ব্লকের কড়া সমালোচনা করা হয়। একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফব-র সঙ্গে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হতে পারে মাথায় রেখে এগোতে হবে। দিনহাটা, ভেটাগুড়ি ও নিগমনগর, প্রতিটি এলাকার সম্মেলনে ফব-র সমালোচনা করা হয়। ওই প্রতিবেদন সিপিএমের তরফে সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। তার পরেই তাঁরা আপাতত সিপিএমের সঙ্গে কোনও আন্দোলনে যোগ না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। |
আইন অমান্যে ফওয়ার্ড ব্লকের অনুপস্থিতিতে কোচবিহারে দুই শরিকের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ল বলে মনে করছেন দু-দলের অনেকেই। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বিষয়টি নিয়ে বিশদে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “আগামী ২৫ নভেম্বর বামফ্রন্টের বৈঠকে যা বলার বলব।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “দূরত্বের কিছু নেই। এ দিনের আন্দোলনে দু’হাজার সমর্থককে গ্রেফতারের কথা ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা কেউ আন্দোলনে যোগ দেননি। তবে ওই দলের কিছু সমর্থক ছিলেন।”
ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রের খবর, দলীয় পতাকা নিয়ে ফব-র কোনও কর্মী সেখানে যাননি। ফব-র কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দুলাল গোপ বলেন, “আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ না-দেওয়ার জন্য দলের জেলা কমিটির তরফে সমস্ত স্তরে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কেউ নির্দেশ অমান্য করেননি।” ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “দলের নেতারা যেখানে যাননি, সেখানে কর্মীদের যাওয়ার প্রশ্ন থাকে না। কে কী বলছেন জানি না।” তুফানগঞ্জের আইন অমান্য আন্দোলনে সিপিএমের অখিল প্রামাণিক, ধনঞ্জয় রাভা, আরএসপির সমীর চক্রবর্তী, গোপাল শীল উপস্থিত ছিলেন। সিপিআইয়ের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ সরকার বলেন, “সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে তুফানগঞ্জের আন্দোলনে আমাদের কেউ ছিল না।”
বামফ্রন্টের আন্দোলনকে ঘিরে সকাল থেকে তুফানগঞ্জ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ফ্রন্ট সমর্থকেরা মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে নিরাপত্তার মধ্যে আইন অমান্য করে গ্রেফতার বরণ করেন। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চলতি সপ্তাহে একই বিষয় সামনে রেখে দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে আইন অমান্য আন্দোলন করবে বামফ্রন্ট।
ফরওয়ার্ড ব্লকের পক্ষ থেকে এ দিনও জানানো হয়েছে, ২৫ নভেম্বর সিপিএমের সঙ্গে বৈঠকের আগে ওই সমস্ত কর্মসূচিতে তাঁরা যাবেন না। |