|
|
|
|
আলংগিরিতে রাস মেলা শুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
রাস পূর্ণিমায় নয়। এগরার আলংগিরি গ্রামে প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো রাস উৎসব শুরু হয় আরও দিন সাতেক পরে। প্রতি বছরের মতো এ বারও মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। আজ, মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলার শুরু। যদিও খাবারের স্টল, রকমারি জিনিসের দোকান বসে গিয়েছে আগেই।
কথিত রয়েছে, মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের তিরোধানের পরে তাঁর শিষ্য শ্রীজীব গোস্বামীর নির্দেশে শ্যামানন্দ মহারাজ ওড়িশায় ধর্মপ্রচারে আসেন। তিনিই গোপীবল্লভপুর ও আলংগিরিতে মন্দির-মঠ নির্মাণ করে ভক্ত প্রসাদ দাসকে তার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে যান। প্রসাদ দাস ছাড়াও মন্দির প্রতিষ্ঠায় নিযুক্ত ছিলেন রামানন্দ, শ্যামানন্দ, রসিকানন্দ, পরমানন্দ। এ ছাড়াও পরবর্তীকালে যে ১৮ জন সন্ন্যাসী মন্দির পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন, তাঁদের সমাধি মন্দির রয়েছে ভক্তপ্রাণ আলংগিরি গ্রামে। মন্দির প্রথম সন্ন্যাসী রামানন্দ প্রয়াত হন রাস অষ্টমীর দিনে। |
|
ছবি: কৌশিক মিশ্র। |
তারপর থেকেই প্রয়াণ দিবসে রাস উৎসব ও মেলা হয়ে আসছে। আদালতের নির্দেশে ১৯৬২ সাল থেকে এই মেলা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে একটি ট্রাস্ট কমিটি। কমিটির সম্পাদক মানসচন্দ্র মাইতি ও সভাপতি বিজনবিহারী সাউ জানান, মন্দির সংলগ্ন ২৪ একর জমিতে মূল মন্দির ছাড়াও নাটমন্দির, রাসমঞ্চ, পুকুর বাগান প্রভৃতি রয়েছে। পুরো এলাকা জুড়েই দোকানপাট বসে। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে মন্দির চত্বর। ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে মেলার ক’দিন। দ্বাদশী থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত চার দিন ধরে চলে নাম-সঙ্কীর্তন। দধি উৎসব উপলক্ষে হয় অন্নসত্র। তিথি অনুযায়ী রাধা-কৃষ্ণকে বিভিন্ন সময়ে রাসমঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয় শোভাযাত্রা করে। প্রতিবারই নতুন নতুন অলঙ্কারে সাজিয়ে। ভক্তরা অলঙ্কার ছাড়াও সোনা-রুপোর সাউ, তুলসীপাতা মানত করেন। মন্দির সংলগ্ন কুণ্ড পুকুরে মৎস্যক্রীড়া দেখার জন্য ভিড় জমান বহু মানুষ। ট্রাস্টের সদস্য সতীশচন্দ্র করণ, পূজক আশুতোষ পণ্ডা জানান, মন্দিরকে কেন্দ্র করে বছরভরই বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান হয়। রাধাকৃষ্ণের মন্দির ছাড়াও জগন্নাথ মন্দির, ভৈরবনাথ মন্দির, নবরত্ন মন্দির, বগলামুখী মন্দির, শীতলা মন্দির রয়েছে গ্রামে। মন্দির আর মন্দিরকে ঘিরে নানা উৎসবেই মেতে থাকে আলংগিরি। |
|
|
|
|
|