নেতৃত্বকে দুষে সিপিএমের সম্মেলন শুরু জঙ্গলমহলে
শ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে ‘অবরোধ পর্বে’ সিপিএমের ‘জন-বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়ার পিছনে অভিযোগের আঙুল উঠল দলীয় নেতাদের দিকেই। মানুষের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগে নেতৃত্বকে দুষে সেখানে শুরু হল সিপিএমের লোকাল কমিটি স্তরের সম্মেলন।
মোটামুটি ২০০৮-এর নভেম্বর থেকে ২০০৯-এর জুন পর্যন্ত সময়ে মাওবাদী এবং জনগণের কমিটির অবরোধ-আন্দোলনের রমরমা ছিল জেলার জঙ্গলমহলে। সিপিএমের লোকাল-সম্মেলনে অভিযোগ উঠেছে, ওই ‘অবরোধ পর্বে’ এলাকায় একের পরে এক মাওবাদী হামলায় দলীয় সমর্থকেরা খুন হলেও অনেক ক্ষেত্রেই ‘সন্ত্রস্ত’ পরিস্থিতির কথা বলে নিহতদের বাড়িতে শীর্ষ নেতৃত্ব যাননি। নিহতদের পরিজনদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন দলীয় নেতারা। কিন্তু কার্যত তা ভুলে যাওয়া হয়েছে। অনেক নেতা আবার মাওবাদী-কমিটির হামলার আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’। তা ছাড়া, প্রকাশ্যে দলীয় কিছু নেতা-কর্মীর ‘অসংযত’ আচরণ, পঞ্চায়েত স্তরের কাজে ‘দুর্নীতি’ও ‘নিয়ন্ত্রণ’ করেননি দলের শীর্ষ নেতারা। এখন লোকাল কমিটি স্তরের নেতাদের একাংশের অভিমত, এই সব কারণেই ‘অবরোধ পর্যায়ে’ দলীয় নেতারা যে সব রাজনৈতিক কর্মসুচি নিয়েছেন, জনতাকে তাতে ‘সংযুক্ত’ করা যায়নি। মাওবাদী হামলায় জীবনহানির পরে ঘটনাস্থলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পৌঁছনোর ‘তাৎপর্য’ কতটা, মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে সম্প্রতি তার সাক্ষী থেকেছে পুরুলিয়ার বলরামপুর।
সম্মেলনের প্রাক্কালে পতাকা উত্তোলন করছেন ঝাড়গ্রাম
শহর জোনাল সম্পাদক শিবনাথ গুহ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
চলতি মাসের গোড়ায় সেখানে দলীয় কর্মী জিতু সিংহ খুনের পরে এলাকায় গিয়ে সমাবেশ করেছিলেন মমতা। কিছু দিন পরেই সেখানে ফের খুন হন এক তৃণমূল কর্মীর বাবা-ভাই। কলকাতায় দেহ দু’টি আনিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে মাওবাদীদের উদ্দেশে ‘হুঁশিয়ারি’ দেওয়ার পাশাপাশি, রাতেই বলরামপুরের গ্রামে দেহ দু’টি ফেরত পাঠানোর বন্দোবস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। জোড়া মৃতদেহ নিয়ে মাওবাদী উপদ্রুত ওই এলাকার গ্রামে পৌঁছন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী। অন্ধকারেও ঘর ছেড়ে রাস্তায় নামা মানুষের সংখ্যা দেখে উপস্থিত কিছু তৃণমূল নেতা দলনেত্রীকে জানান, আতঙ্কের আবহ ‘অগ্রাহ্য করার মানসিকতা’ তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। পক্ষান্তরে, ‘অবরোধ পর্বে’র জঙ্গলমহলে খুন-সন্ত্রাসে জেরবার মানুষকে ‘স্বস্তি’ দেওয়ার উদ্যোগ দলীয় স্তরে দেখা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিপিএমের একাধিক লোকাল কমিটির সম্পাদকীয়তে। জঙ্গলমহলে সিপিএমের এক লোকাল কমিটির নেতার কথায়, “অবরোধ পর্বে আমাদের নেতারা না রাজনৈতিক ভাবে, না প্রশাসনিক ভাবে কারও পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফলে মানুষ ভরসা পেয়েছেন অন্যত্র। তার মাসুল তো দিতে হবেই।” শনিবার থেকে জঙ্গলমহলে সিপিএমের লোকাল কমিটিগুলির সম্মেলন শুরু হয়েছে। জামবনির চারটি লোকাল কমিটির সম্মেলন শনি-রবিবার এলাকাতেই হয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রাম শহর লোকাল কমিটিগুলির সম্মেলন। এ দিন বিকেলে শহরের বলাকা মঞ্চে শহর ৩-নম্বর লোকাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে। ২ ও ১ নম্বর লোকাল কমিটির সম্মেলন হবে চলতি সপ্তাহেরই মঙ্গল ও বুধবার। ঝাড়গ্রাম (গ্রামীণ) ও মানিকপাড়া লোকাল কমিটির সম্মেলন হবে বুধ ও বৃহস্পতিবার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.