|
|
|
|
যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য সেই তিমিরেই |
ধুঁকছে খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
পাশেই রেল স্টেশন। সকাল থেকে রাত, মানুষের যাতায়াত লেগেই রয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ রুটের বাসগুলি এখানে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে, বাস ধরার জন্য অনেকে আসেন। কিন্তু, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ছিটেফোঁটা নেই খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ডে। অন্তত, শহরবাসীর অভিযোগ এমনই। নেই-এর তালিকাটাও এখানে দীর্ঘ। যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই। শৌচাগার নেই। মার্কেট কমপ্লেক্স নেই। বাসস্ট্যান্ডের এক ধারে যে প্রতীক্ষালয়টি আছে, সেটি এখন সংস্কারের অভাবে জীণর্র্। কার্যত ‘বেদখল’ই হয়েছে। ফলে, যাত্রীরা আর এখানে এসে দাঁড়ানোর সুযোগ পান না। খড়্গপুরের মতো শহরে বাসস্ট্যান্ড এমন বেহাল কেন? শহরবাসীর অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও সেই উদ্যোগের অভাব। কর্তৃপক্ষের সঠিক পরিকল্পনা নেই। পুরসভার অবশ্য সাফাই, বাসস্ট্যান্ডের হাল ফেরানোর চেষ্টা চলছে। পুরপ্রধান জহরলাল পাল বলেন, “রেলের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ডের আধুনিকীকরণের উদ্যোগ হচ্ছে।”
খড়গপুর শহরে নানা ভাষাভাষি মানুষের বাস। তাই অনেকে এই শহরকে ‘মিনি ইন্ডিয়া’ও বলেন। সকাল হলেই পথেঘাটে ব্যস্ততার ছবি। উত্তরোত্তর এ শহরের চেহারাও পাল্টে যাচ্ছে। গড়ে উঠছে একের পর এক বহুতল, শপিং কমপ্লেক্স। শহরের বিস্তীর্ণ এলাকাই রেলের আওতায়। আগে রেল-এলাকা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে এখানকার বাসিন্দারা পুর-পরিষেবা পেতেন না। এ জন্য তাঁদের রেলের উপর নির্ভর করতে হত। রাস্তা থেকে পানীয় জল--যে কোনও সমস্যার সমাধান চাইতে গেলে রেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হত। এখন অবশ্য সেই পরিস্থিতি নেই। কারণ, গত বছরই রেল-এলাকা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ড। বাসস্ট্যান্ডের পাশেই রেল স্টেশন। দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্ম রয়েছে এই স্টেশনেই। ট্রেন থেকে নেমে অনেকেই বাস ধরার জন্য এখানে আসেন। সব সময় আবার এসেই প্রয়োজনীয় রুটের বাস পাওয়া যায় না। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। দুর্ভোগ শুরু তখনই। দাঁড়ানোর জন্য জায়গার বড়ই অভাব। এ দিকে-সে দিকে অস্থায়ী দোকান। বর্ষাকালে সমস্যা আরও বাড়ে। বাসস্ট্যান্ডের এক দিকে যাত্রী প্রতীক্ষালয় রয়েছে। কিন্তু, সেখানে যাত্রীদের দাঁড়ানো বা বসার কোনও উপায় নেই। পাশে নোংরা-আবর্জনা। মাথার ছাউনি দীর্ঘদিনই নেই।
পুরসভা সূত্রে খবর, এখন বাসস্ট্যান্ড যেখানে রয়েছে, সেটি রেল-এলাকা। পুরবোর্ড কংগ্রেসের হাতে থাকার সময়েই এই এলাকা ‘লিজ’-এ পেতে তৎপর হয়েছিল পুরসভা। পুরবোর্ডের বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়। পরে রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পুর-কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট জায়গার হস্তান্তর চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনে প্রাথমিক ভাবে সাড়াও দেয় রেল। প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পান্ডের কথায়, “এক বার জানানো হয়েছিল, ৯৯ বছরের লিজ পেতে হলে এক কালীন ১৬ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পরবর্তীকালে জানানো হয়, ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু, ওই টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য পুরসভার ছিল না। তাই এই প্রক্রিয়া আর এগোনো সম্ভব হয়নি।” রবিশঙ্করবাবু কংগ্রেসের কাউন্সিলর। এককালীন এই টাকা পুরসভার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন তৃণমূলের পুরপ্রধান জহরলালবাবুও। রেল-পুরসভার মধ্যে যখন এই কথাবার্তা চলছে, তখনই ‘মডেল বাসস্ট্যান্ডে’র পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। আইআইটি’র এক ইঞ্জিনিয়ারই এই পরিকল্পনা তৈরি করেন। দু’পক্ষের কথাবার্তা চলার সময় খড়্গপুরের ডিআরএম ছিলেন অনিল হান্ডা। এখন এই পদে রয়েছেন রাজীবকুমার কুলশ্রেষ্ঠ। তাঁর সঙ্গেও নতুন করে কথাবার্তা শুরু হয়েছে বলে দাবি পুর-কর্তৃপক্ষের। পুরসভার এক আধিকারিকের বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রে রেল-পুরসভা যৌথ ভাবেও বাসস্ট্যান্ডের আধুনিকীকরণের কাজ করতে পারে। এখন সেই চেষ্টাই শুরু হয়েছে।” যাত্রীদের সমস্যাগুলি মেনে পুরপ্রধান বলেন, “বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যৌথ ভাবে কাজ হলেও আমাদের আপত্তি নেই। |
|
|
|
|
|