কোচবিহার থেকে বক্সায় নিয়ে যাওয়ার পরে। ছবি: নারায়ণ দে। |
চন্দ্রকোনা রোডের পর রবিবার রাতে দলমার দামালরা তাণ্ডব চালাল চন্দ্রকোনা থানার সোলাগেড়া, রাজগঞ্জ, নয়াগঞ্জ, সীতানগর, ধানকুড়া-সহ ৮-১০টি গ্রামে। ২০টি হাতির পাল সারারাত ধরে তাণ্ডব চালায়। সোমবার ভোরে স্থানীয় বাসিন্দা এবং বন দফতরের কর্মীরা পালটিকে ঘাটমুড়ার গভীর জঙ্গলে পাঠিয়ে দেয়। তবে পালটি ফের গ্রামে ঢুকতে পারে--এই আশঙ্কায় চন্দ্রকোনার ওই সব গ্রামের বাসিন্দারা রাত পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। হাতি তাড়াতে পটকা, হুলা জ্বালানোর কেরোসিনও মজুত করা হয়েছে। বন দফতরের মেদিনীপুরের ডিএফও আশিস সামন্ত বলেন, “পালটিকে আরও গভীর জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।” রবিবার রাত ৮টা নাগাদ আচমকাই হাতির পাল চন্দ্রকোনা রোড রেঞ্জের ঘাটমুড়া জঙ্গল থেকে চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে পড়ে। তখন গ্রামবাসীরা জেগেই ছিলেন। গ্রামে হাতির পাল ঢুকে পড়ায় প্রথমে গ্রামের মানুষ একটু ভয় পেয়ে যান। পরে গ্রামবাসীরা পুলিশে ও বন দফতরে খবর দেন। তার মধ্যেই অবশ্য হাতির পাল মাঠে নেমে বিঘার পর বিঘা জমির আলু ও নানা ফসল মাড়িয়ে নষ্ট শুরু করেছে। খামারে গাদা করে রাখা ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি করে। ডিএফও আশিস সামন্ত জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
|
ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পেরিয়ে আবার একটি হাতির দল ঢুকে পড়ল ঝালদায়। রবিবার থেকে হাতিগুলিকে দেখা যাচ্ছে ঝালদা ১ ব্লকের কর্মাডি ও সংলগ্ন গ্রামগুলিতে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ অক্টোবর ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পার হয়ে ২৪টি হাতির দল ঢুকেছিল এই এলাকায়। এর পরে টানা দিন দশেক এলাকা দাপিয়ে শেষ পর্যন্ত বনকর্মী ও স্থানীয় মানুষের তাড়া খেয়ে দলটি অযোধ্যা পাহাড় টপকে পূর্বদিকে বাঘমুণ্ডির মাঠা এলাকায় ঢুকে পড়ে। কর্মাডি গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই ২৪টি হাতির মধ্যে ১০-১১টি এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু রবিবার থেকে আর একটি নতুন দল এলাকায় ঢুকেছে। এই দলটিতে হাতির সংখ্যা ২৭। স্থানীয় সূত্রের খবর, নতুন দলটিতে ৭টি শাবক রয়েছে। আগের দলটিতে ৫টি শাবক ছিল। কর্মাডির চাষি নরেশ মাহাতো বলেন, “এ বার যা ধান হয়েছিল, কিছু দিন আগে এসে সে-সব তছনছ করে দিয়েছিল। এ বার সংখ্যায় বেশি এসে যেটুকু ধান এখনও জমিতে ছিল, সব খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছে।” ভগীরথ মাহাতোর কথায়, “ধানের পাশাপাশি খেতের সব্জিও নষ্ট করে দিচ্ছে। চোখের সামনে দেখা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় থাকছে না।” গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, রাতে গ্রামে মশাল জ্বেলে গাছে মাচা বেঁধে তাঁদেরই হাতি তাড়াতে পাহারা দিতে হচ্ছে। কিন্তু বন দফতর থেকে পর্যাপ্ত পটকা ও আলো পাওয়া যাচ্ছে না। নরেশবাবু বলেন, “চাষের উপরে নির্ভর করেই আমাদের সংসার চলে। তাই নিরুপায় হয়েই আমরা রাত জাগছি।” ডিএফও (পুরুলিয়া) অজয়কুমার দাস বলেন, “যে হাতিগুলি পাহাড় টপকে মাঠার দিকে এসে পড়েছিল, তারাই আবার ফিরে এসেছে ওই এলাকায়। নতুন কয়েকটি হাতি যোগ দিয়ে থাকতেও পারে। আমরা দলটিকে খেদানোর চেষ্টা করছি।” হাতির দলটি এখন হেঁসলা পাহাড়ে রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।
|
মেমারির নিসিরাগড়ের দক্ষিণ পাড়ায় কয়েক দিন ধরে একটি শিব মন্দিরে বসেছিল দু’টি সাদা রঙের প্যাঁচা। পর পর কয়েক দিন তাদের একই জায়গায় বসে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক বিকাশ সিংহ বন বিভাগে খবর দেন। রবিবার সন্ধ্যায় প্যাঁচা দুটিকে উদ্ধারের জন্য নিসারাগড়ে বন বিভাগের একটি দল পাঠান ডিএফও গোপালচন্দ্র কাজুরি। তবে ততক্ষণে মারা গিয়েছে একটি প্যাঁচা। জীবিতটিকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে যাওয়ার পথে রবিবার রাত ১১টা নাগাদ সেটিও মারা যায়। গোপালবাবু বলেন, “প্যাঁচার মৃত্যুর কারণ জানতে ওটিকে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে আমাদের সন্দেহ উঁচু থেকে পড়ে গিয়েই প্যাঁচা দু’টি আধমরা হয়ে গিয়েছিল।” |