নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগী হল ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসন। চলতি সপ্তাহে ওই বিষয়ে প্রশাসনের তরফে মাইকে সরকারি নির্দেশ প্রচার শুরু হবে। সময় দেওয়া হবে এক মাস। ওই সময়ের পরে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা যৌথভাবে তল্লাশি অভিযানে নামবেন। ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “শহর জুড়ে ক্যারিব্যাগ দূষণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছে দিয়েছে। নদী থেকে নিকাশি নালা সবই নিষিদ্ধ প্লাস্টিকে ভরে গিয়েছে। ওই বিপজ্জনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ক্লাব কর্তা, ব্যবসায়ী সমিতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে অলোচনা করে ক্যারিব্যাগ বিরোধী অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযান শুরুর আগে নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রচার চলবে। প্রচার শুরুর দিন থেকে এক মাসের মধ্যে ব্যবসায়ীরা ক্যারিব্যাগের কারবার বন্ধ না-করলে মোটা টাকা জরিমানার কবলে পড়বেন। বিক্রেতারাই শুধু নয়। ক্যারিব্যাগে খরচ নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে ধরা পড়লে ক্রেতাদেরও জরিমানা গুনতে হবে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করার কথাও ভাবছেন ব্লক প্রশানের কর্তারা। বিডিও বলেন, “আশা করছি প্রচারের পরে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ হবে। সেটা না-হলে জরিমানা আদায় সহ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।” প্রশাসনের সিদ্ধান্তে খুশি শহরের বিদ্বজন মহল। ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ সহ বিভিন্ন শহরে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। ময়নাগুড়িতে কেন ওই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না সেটাই ভাবছিলাম। কারণ, এলাকায় ক্যারিব্যাগ দূষণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছে দিয়েছে। প্রাচীন নদী জর্দা মজে যাচ্ছে। ভূ-স্তরের পরিস্থিতিও খারাপ হয়েছে। বিপদ ঠেকাতে প্রশাসন এগিয়ে আসায় ভালই হল।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তাদের অভিযোগ, জাতীয় গ্রামীণ কর্ম সুনিশ্চিত প্রকল্পে কয়েক দফায় জরদা নদী সংস্কার করে লাভ হয়নি। সাফাই অভিযানের কয়েক দিনের মধ্যে নদী চর ক্যারিব্যাগ ও থার্মোকলে মুখ ঢেকেছে। সমস্যা বেড়েছে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও। যে সমস্ত পাকা নালা তৈরি করা হয়েছে তার বেশিরভাগ ক্যারিব্যাগে ভরে গিয়েছে। বর্ষার জল বসতি এলাকার বাইরে যাবে তেমন উপায় নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলবন্দি হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। কয়েক বছরে পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়েছে যে শহরের রাস্তা জুড়ে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের প্যাকেট ও ক্যারিব্যাগের ছড়াছড়ি। ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী বলেন, “ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ না-হলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে না। নদী নষ্ট হয়ে যাবে। নিকাশি ব্যবস্থা কাজে লাগবে না। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সাধারণ মানুষকে প্রশাসনের পাশে দাঁড়াতে হবে।” |