দুর্নীতি-আন্দোলন তীব্র করে চিদম্বরম-বয়কট বিজেপির
গামী সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার ঠিক এক দিন আগে মনমোহন মন্ত্রিসভার অন্যতম সেনাপতি পি চিদম্বরমের ইস্তফার দাবিতে কঠোর অবস্থান নিল বিজেপি তথা এনডিএ। টু-জি কাণ্ডে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরমকে কাঠগড়ায় তুলে তারা আজ ঘোষণা করল, যত ক্ষণ না তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন, তত ক্ষণ সংসদে বয়কট করা হবে তাঁকে।
গত কাল লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রা শেষ হওয়ার পরে সংসদে দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলার রণকৌশল স্থির করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন বিজেপি এবং এনডিএ নেতারা। আজ সন্ধ্যায় আডবাণীর বাসভবনে এনডিএ-র বৈঠকে চিদম্বরম-বয়কটের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। রাজ্যসভার বিরোধী দলের উপনেতা সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, “এ রাজা টু-জি কাণ্ডে যতটা দোষী, চিদম্বরমও ততটাই দোষী। অথচ প্রধানমন্ত্রী চিদম্বরমের ইস্তফা চাননি। ফলে যত ক্ষণ না চিদম্বরম ইস্তফা দিচ্ছেন, তত ক্ষণ তাঁকে বয়কট করা হবে। অতীতে কংগ্রেস ঠিক এই ভাবে জর্জ ফার্নান্ডেজকে বয়কট করেছিল।”
কী ভাবে বয়কট হবে? অহলুওয়ালিয়ার ব্যাখ্যা, “সংসদে চিদম্বরমকে এনডিএ সাংসদরা কোনও প্রশ্ন করবেন না। তাঁর কোনও বক্তব্যও শুনবেন না। চিদম্বরম কিছু বলতে গেলেই এনডিএ বাধা দেবে।”
বিজেপি-র এই ঘোষণায় কিছুটা চাপের মুখে কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন, “চিদম্বরমের মতো ব্যক্তির থেকে গোটা সংসদই সমৃদ্ধ হতে পারে। বিজেপি যদি তাঁকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সকলেরই লোকসান। সংসদীয় ব্যবস্থায় আলোচনার মাধ্যমেই সব সমাধান সম্ভব। চিদম্বরমের বিষয়ে এত কঠোর পদক্ষেপ না করে বিজেপি বরং আলোচনায় আসতে পারে।” কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “তহলকা কাণ্ডের তদন্তে জর্জ ফার্নান্ডেজের দুর্নীতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু চিদম্বরমের ক্ষেত্রে আদালত তো প্রাথমিক তদন্তও শুরু করতে বলেনি!”
চিদম্বরমকে আক্রমণের ব্যাখ্যা দিয়ে বিজেপি শিবির থেকে বলা হচ্ছে, আড়াই বছর পর কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করতে হলে ধীরে ধীরে সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহের উপর চাপ বাড়াতেই হবে। এত দিন দুর্নীতির প্রশ্নে শুধু ইউপিএ-র শরিক দলে নেতাদেরই বলির পাঁঠা করেছে কংগ্রেস। এ বারে কংগ্রেস নেতাদের আক্রমণ করা গেলে সনিয়া ও মনমোহন পর্যন্ত পৌঁছনো সম্ভব হবে। তাই এনডিএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে পরিস্থিতি এখন অনুকূল বলেই মনে করছে বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, কয়েক মাস আগেও জাতীয় রাজনীতিতে লড়াইটা কংগ্রেস বনাম অণ্ণা হজারে ছিল। ফলে সংসদের গত অধিবেশনের আগে চিদম্বরমের ইস্তফার দাবিতে বিজেপি সরব হলেও সংসদে এত কঠোর অবস্থান নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু আডবাণীর রথযাত্রার পরে লড়াইটা কংগ্রেস বনাম বিজেপিতে পর্যবসিত হয়েছে। বিজেপি এখন অনেক সংগঠিত, উজ্জীবিত। আডবাণীর পাশে গোটা দল, এনডিএ-র শরিক, এমনকী জয়ললিতার মতো দলও এসে দাড়িয়েছে।
তবে অন্য বিরোধী দলগুলি চিদম্বরম-বয়কটের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে না। এমনকী, যে বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি মূল্যবৃদ্ধি ও কালো টাকা উদ্ধারের দাবিতে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চলেছে, তারাও।
বিরোধী শিবিরে এই চিড়কে কাজে লাগাতে আজ থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছে সরকার পক্ষ। বিজেপি-র এই মনোভাবের জন্য সংসদ অচল হওয়া অবশ্যম্ভাবী। সে ক্ষেত্রে লোকপাল-সহ অনেক বিল নিয়ে আলোচনা আটকে যাবে। তখন অণ্ণা হজারেও হুঙ্কার ছাড়বেন। বিজেপি সংসদ অচল করছে, এই অভিযোগ সামনে রেখে তাদের সংসদে এক ঘরে করার পাল্টা রণকৌশল ছকতে শুরু করেছে কংগ্রেস। আজ দলের কোর গ্রুপের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। স্থির হয়েছে, বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.