মিশরে হত ৩৫
বাড়ছে বিক্ষোভ, চাপের মুখে সুর নরম সেনার
ব্বিশ ঘণ্টাতেই দুইয়ের পিঠে জুড়ে গেল আরও একটা দুই!
মিশরে সেনা শাসনের অবসানের দাবিতে নতুন করে শুরু হওয়া বিক্ষোভে রবিবারই প্রাণ হারিয়েছিলেন দু’জন। রাতের মধ্যেই প্রাণ গেল আরও বাইশ জনের। সব মিলিয়ে গত তিন দিনে এ পর্যন্ত মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হাজারেরও বেশি।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে শুক্রবার থেকে যে ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ’ শুরু হয়েছিল, তা ‘বিশৃঙ্খল’ চেহারা নিতে শুরু করে শনিবার রাত থেকেই। যথেচ্ছ লাঠি-গুলি-কাঁদানে গ্যাস দিয়েও তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি নিরাপত্তাবাহিনী। আজ তৃতীয় দিনেও সেই বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার রাস্তা হাতড়ে বেড়ালেন মিশরের সামরিক শাসকরা।
তবে, বিক্ষোভ সামাল দিতে আজ কিছুটা অন্য সুর মিশরের সামরিক শাসকদের গলায়। নিরাপত্তাবাহিনী তাহরির স্কোয়্যার থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে ব্যর্থ হওয়ার পর আজ সেখানে যান মিলিটারি কাউন্সিলের এক জেনারেল। সেখানে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিক্ষোভকারীদের ‘প্রতিবাদের অধিকারকে ‘সম্মান’ জানিয়ে তিনি বলেন নিরাপত্তাবাহিনী বিদ্রোহীদের ‘আক্রমণ’ করেনি। তারা শুধু আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। সেনাবাহিনী তাহরির স্কোয়ারের ভিতরেও ঢোকেনি বলে জানান তিনি। নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “যারা মারা গিয়েছে, তারা কেউ শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ আন্দোলন করছিল না। এরা নিছকই অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছিল।” তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষ এবং সেনার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে কোনও ‘অদৃশ্য হাত’ কাজ করছে। তাহরির স্কোয়্যারের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান আটকে রাখার ফলে মিশরকে কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন দতে হচ্ছে, তা বিবেচনা করতে বিদ্রোহীদের কাছে তিনি অনুরোধ করেন। এ প্রসঙ্গে মিশরীয় শেয়ার বাজারে ধসের প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন ওই জেনারেল।
উত্তপ্ত তাহরির স্কোয়ার। ছবি: রয়টার্স
বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশি তৎপরতা চলছেই। কাল সারা রাত কায়রোর বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলেছে নিরাপত্তাবাহিনীর। দেশের অন্যান্য অংশেও তা ছড়িয়ে পড়ছে। আলেকজান্দ্রিয়ায় নিরাপত্তা দফতরের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে আশি জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কোয়েনা এবং সুয়েজ শহরেও। প্রতিবাদীদের ভিড় বাড়ছে তাহরির স্কোয়্যারেও।
গোটা ঘটনায় স্বভাবতই চাপ বাড়ছে ক্ষমতাসীন ‘সুপ্রিম কাউন্সিল অফ দ্য আর্মড ফোর্সেস’ (এসসিএএফ)-এর উপরে। বিক্ষোভ নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় গোটা ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে জানিয়েছে তারা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে তারা বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে এসসিএএফ। নয়া সংবিধান তৈরি হলে এবং দেশের নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৩ নাগাদ ক্ষমতা ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। এতে অবশ্য সন্তুষ্ট নন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা সেনার তরফে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চান। দেশের অশান্ত পরিস্থিতিতে ২৮ নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার দায়ও সেনার উপরেই চাপিয়েছেন তাঁরা। এসসিএএফ-এর নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও বিদ্রোহীদের অভিযোগ, নির্বাচন পিছিয়ে দিতে ইচ্ছাকৃত ভাবে অশান্তিতে মদত দিচ্ছেন সামরিক শাসকরা।
তাই এই মুহূর্তে প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরতে মোটেই প্রস্তুত নন বিক্ষোভকারীরা। সামরিক শাসনের অবসানের দাবিতে আরও বেশি সংখ্যায় তাঁরা জড়ো হচ্ছেন তাহরির স্কোয়্যারে। বলপ্রয়োগ করে খানিক ক্ষণের জন্য সেনাবাহিনী তাঁদের হটাতে পারলেও, ফের তাঁরা ফিরে আসছেন দ্বিগুণ সংখ্যায়। মুবারক-জমানা শেষ হওয়ার পরও ঠিক কীসের দাবিতে ফের উত্তাল মিশর, তার উত্তর দিলেন তাহরির স্ক্যোয়ারে আহতদের চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত এক ডাক্তার, “মুবারকের বিদায়টা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দিকে একটা পদক্ষেপ মাত্র। সেই দাবিটাকে বাস্তবায়িত করার আসল লড়াইটা এ বারে শুরু হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.