মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নেতারা, সাউদ অধরাই কেতুগ্রামে
ন্ত্রীর পাশে বসে সভা করে যাওয়ার পরে গোটা দিন পেরিয়ে গেলেও খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সাউদ মিয়াঁকে ধরতে পারল না পুলিশ। তাঁকে আত্মসমর্পণ করানো বা অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, এমন কোনও ইঙ্গিত তৃণমূলের তরফেও মেলেনি।
খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে রাজ্য পুলিশের দায়িত্বে, সেখানে পুলিশেরই বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ তুলে রবিবার বর্ধমানের কেতুগ্রামে জনসভা ডেকেছিল
সাউদ মিয়াঁ
তৃণমূল। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কেতুগ্রামের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল এবং দুই বিধায়কের সঙ্গে সাউদও সেই মঞ্চে আগাগোড়া হাজির ছিলেন। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে তাঁকে ধরতে গেলে ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’ হতে পারে দাবি করে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি।
আনন্দবাজার পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশের পরেই সোমবার মহাকরণে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেন চন্দ্রনাথবাবু। অনুব্রতবাবু ছাড়াও কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। রাতে চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “দিদিকে বলেছি, সিপিএমের আমলে সাউদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল। সে তো আমাদের নামেও গাদা-গাদা মামলা আছে। ও দুষ্কৃতী নয়, বরং ভাল কাজ করছে। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, খবরের কাগজের অফিসে চিঠি দিয়ে জানান।”
গত বছর ২০ মে কেতুগ্রামে দুই সিপিএম কর্মীকে গুলি করে মারা ছাড়াও এক ডিওয়াইএফ কর্মী খুন, বেআইনি অস্ত্র রাখা এবং গোলমাল পাকানোর অভিযোগ রয়েছে সাউদের বিরুদ্ধে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, একাধিক মামলায় পুলিশ সাউদকে খুঁজছে। যদিও রবিবারই অনুব্রতবাবু দাবি করেছিলেন, সিপিএম এবং পুলিশ তাঁকে ‘মিথ্যা অভিযোগে’ ফাঁসিয়েছে। মঞ্চে বসে সাউদের সঙ্গে বারবার কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে।
তবে চন্দ্রনাথবাবুর দাবি, “আমি সাউদকে আগে চিনতাম না। আজ কাগজে ছবি দেখে চিনলাম।” সিপিএম তাদের জমানায় কী ভাবে পুলিশকে ব্যবহার করত, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে মন্ত্রী দাবি করেন, “সিপিএমের ফারুক মির্জা সে সময়ে থানায় বসে রাজনীতি করতেন। বেছে বেছে সাউদের মতো তৃণমূল কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হত।” ফারুক মির্জার পাল্টা জবাব, “ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ায় ওঁরা এখন আবোল-তাবোল বকছেন। এলাকার মানুষ জানেন, কারা সন্ত্রাস করছে।”
বস্তুত, রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই যে সব এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ তুলে আসছে সিপিএম, তার মধ্যে কেতুগ্রাম অন্যতম। ‘নিরাপত্তার অভাবে’ দলের কেতুগ্রাম ১ দক্ষিণ লোকাল কমিটির সম্মেলনও কাটোয়া শহরে করতে হয়েছে বলে নেতাদের দাবি। রবিবার কেতুগ্রামের পাঁচুন্দিতে দলের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির (কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট নিয়ে গঠিত) সম্মেলনেও ফের এই প্রসঙ্গ ওঠে। কেতুগ্রামে সাউদ মিঞা, হারা শেখ এবং মঙ্গলকোটে আজাদ মুন্সীর মতো তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাগাতার অপকর্ম ও সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে বলে সদস্যেরা অভিযোগ করেন।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিকের অভিযোগ, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু শাসকদলের চাপে পুলিশ তাদের দেখেও দেখছে না।” সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার অবশ্য বলেন, “আজও সাউদ মিয়াঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সম্ভাব্য সব জায়গাতেই খোঁজ করা হচ্ছে। কিন্তু ওকে পাওয়া যাচ্ছে না। সম্ভবত পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ফোনে খবর পেয়ে ও পালিয়ে যাচ্ছে।”
রবিবারই কেতুগ্রামের সভা থেকে পুলিশের উদ্দেশে অনুব্রতবাবু বলেছিলেন, “তৃণমূলের কারও নামে অভিযোগ থাকলে স্থানীয় বিধায়ককে বলুন।
সেখানে সহযোগিতা না পেলে আমাকে বলুন।” তবে কি পুলিশ এখন তৃণমূল নেতাদের আগাম জানিয়ে তল্লাশিতে যাচ্ছে বা যাবে? হুমায়ুন কবীর বলেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করবে।” বহু চেষ্টা করেও অবশ্য অনুব্রতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.