আন্তর্জাতিক খেলাধুলো থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাসনের পিছনে প্রধান অনুঘটক, বেসিল ডি’অলিভেরা মারা গেলেন। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডারের বয়স হয়েছিল আশি। দীর্ঘদিন পার্কিনসন্স রোগে ভুগছিলেন।
অসম্ভব প্রতিভা থাকলেও শ্বেতাঙ্গ নন বলে নিজের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলার সুযোগ না পাওয়া থেকে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করা প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার। এবং অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাতের দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাসনের পিছনে অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও, অন্যতম কারণ। সব মিলিয়ে এক অসামান্য জীবন-চরিত। ৪৪টি টেস্টে ২,৪৮৪ রান, গড় ৪০, সেঞ্চুরি ৫। উইকেট ৪৭টি। ১৯৬৬ সালে পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁর টেস্ট অভিষেক ঘটে। ১৯৭২-এ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলেন শেষ টেস্ট।
১৯৬৮ সালে অ্যাসেজ সিরিজে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৫৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলায় পরের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলে তাঁর জায়গা পাকা বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার তীব্র আপত্তিতে তাঁকে বিতর্কিত ভাবে বাদ দিয়েই দল গড়ে ইংল্যান্ড। সফর চলাকালীন অবশ্য টম কার্টরাইটের চোট লাগায় ডি’অলিভেরাকে ডেকে পাঠানো হয়। প্রবল আপত্তি তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। যার জেরে মাঝপথে বাতিল হয়ে যায় সফর। এর পরেই বর্ণবৈষম্যের নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ ওঠে। যার জেরে ক্রীড়া দুনিয়ায় আন্তর্জাতিক বয়কটের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের চিফ এক্সিকিউটিভ জেরাল্ড মাজোলা শোকবার্তায় বলেছেন, “উনি সত্যিকারের কিংবদন্তি। চরম প্রতিকূলতার সামনেও যিনি বিশ্ব ক্রিকেট মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ‘ডলি’ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।”
অথচ নিজের দেশে একদা সম্পূর্ণ ব্রাত্য ছিলেন ক্রিকেট দুনিয়ার আদরের ‘ডলি’। মালয় এবং ইন্দোনেশীয়দের বস্তিতে বড় হওয়া ডি’অলিভেরা নিজেই জানান, তাঁর পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত এসেছিলেন পর্তুগালের মাদেইরা থেকে। ৮০টি সেঞ্চুরি নিয়ে কেপ টাউন ক্লাব ক্রিকেটের অন্যতম তারকা হওয়া সত্ত্বেও ‘কেপ কালারড’ বলে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ডাক পাননি। পরে ধারাভাষ্যকার জন আর্লটের পরামর্শে চলে যান ইংল্যান্ড। |