প্রীতম সাহা ও কুণাল বসু • কলকাতা |
কথা নয়। শুধু কাজ।
বড় ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের ছবি একেবারে এক। ভক্তদের কানফাটানো চিৎকারের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন ওপারা, পেন, ওডাফা, সুনীলরা। ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি লেগে থাকলেও সবার মুখে কুলুপ।
মেহতাব ও টোলগেহীন ইস্টবেঙ্গল কতটা চাপে, সেটা দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের বক্তব্যেই পরিষ্কার, “প্রার্থনা করুন যেন ম্যাচটা জিতে যাই।” হাজার চেষ্টা করলেও আর একটা কথা উগা ওপারার মুখ থেকে বের করা গেল না। সব প্রশ্নের জবাবে একটাই উত্তর, “দশ হাজার টাকা দিন, আমি সব বলে দেব।”
দশ হাজার কেন? আসলে ক্লাব থেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, কোচ এবং অধিনায়ক ছাড়া আর কেউ কথা বললেই দশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ওপারার মতোই করুণ অবস্থা রবিন সিংহ কিংবা পেন ওর্জিরও। বাগযুদ্ধের ফাঁদে পা দিতে চাইলেন না তাঁরাও। মুখে একই অজুহাত, “দশ হাজার টাকা দিন।” পেন অবশ্য গাড়িতে ওঠার আগে বলে গেলেন, “বড় ম্যাচে মেহতাবকে মিস করব।”
মোহনবাগানে অবশ্য জরিমানার কঠোর কায়দা -কানুন নেই। তবে টিডি সুব্রত ভট্টাচার্যর চরম নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে মুখ খুললেন না ওডাফা -সুনীল -নবিরাও। শুধু অধিনায়ক হোসে রামিরেজ ব্যারেটো অনুশীলনের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বললেন, “যারা বেশি লড়াই করবে আর যাদের মধ্যে জেতার খিদেটা বেশি থাকবে, তারাই জিতবে।” |
অস্ত্রে শান: সুব্রতর প্র্যাক্টিসে ওডাফা -ড্যানিয়েল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
গত বারের বড় ম্যাচগুলোর স্মৃতি টাটকা ব্যারেটোর। একটা বছরে এক বারও মোহনবাগান হারাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গলকে। আর বারবার আঙুল উঠেছে রক্ষণের দিকে। ব্যারেটো তাই বললেন, “আমরা চাপ বিপক্ষে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। যাতে আমাদের ডিফেন্সে চাপ কম আসে। আর আমাদের যা ফরোয়ার্ড লাইন তাতে গোল করাটাই মাথায় রাখতে হবে।”
শেষ বড় ম্যাচেই গোল করেছিলেন টোলগে। এই মরসুমের প্রথম ম্যাচে তিনি নেই। আর তাঁর না -থাকাটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন ব্যারেটো। তাঁর কথায়, “গত বার আই লিগে টোলগে দারুণ খেলেছিল। এ বারও ভাল ফর্মে। ওর অনুপস্থিতি একটা ফ্যাক্টর। তবে ওদের দলে আরও অনেক ভাল ফুটবলার আছে। যারা ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে।” আর কী বলছেন স্বয়ং টোলগে ওজবে? খেলতে পারবেন না বলে চরম হতাশায় ভেঙে পড়লেও প্রত্যয়ের হাত ছাড়ছেন না। শনিবার সাফ বলে দিলেন, “ইস্টবেঙ্গল জিতবেই। ২ -১ গোলে জিতবে।” ইস্টবেঙ্গলের অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকারের সঙ্গে একমত ইপিএলের প্রাক্তন তারকারাও। এমনকী স্কোরলাইন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীতেও। লাল -হলুদেই বাজি ধরছেন জন বুরিজ এবং কার্লটন পামের। আরও একটু ভেঙে বললে, ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকেই এগিয়ে রাখছেন সুব্রত ভট্টাচার্যের ওপর। মোহনবাগান মাঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “মর্গ্যানের কোচিং পদ্ধতি অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত।”
ইপিএলের দুই প্রাক্তনী আই লিগের পারফরম্যান্সের বিচারে সেরা বাছলেন দুই প্রধানের ওডাফা এবং গুরপ্রীত সিংহকে। ওডাফার আক্রমণ ইস্টবেঙ্গলের শেষ প্রহরী কী ভাবে আটকান, সেটা দেখার জন্যই মুখিয়ে আছেন তাঁরা। |