মুয়াম্মর গদ্দাফির ছেলে স্যাফ অল ইসলাম গদ্দাফিকে ধরা হয়েছে বলে আজ ঘোষণা করল লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার। তবে কবে এবং কী ভাবে স্যাফকে ধরা হল, সে সম্পর্কে বিশদ কোনও তথ্য দেয়নি অন্তর্বর্তী কাউন্সিলের কর্তারা। লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী শুধু ‘আশ্বাস’ দিয়েছেন, গদ্দাফির ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। ‘ন্যায্য বিচার’ই পাবেন স্যাফ।
দক্ষিণ লিবিয়ার মরুশহর ওবারি থেকে লিবিয়ার প্রাক্তন শাসকের ছেলে স্যাফকে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার জাতীয় অন্তর্বর্তী কাউন্সিলের আইনমন্ত্রী মহম্মদ অল আলাগুই। দুই সঙ্গী-সহ দেশ ছেড়ে ‘পালিয়ে যাওয়ার’ সময়ই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সেনার এক কম্যান্ডার জানিয়েছেন। ধরা হয়েছে স্যাফের ওই দুই সহযোগীকেও। |
দক্ষিণ লিবিয়ার একটি মরুশহর থেকে স্যাফকে ধরার পর তাঁকে জিনতানে নিয়ে আসা হয়। সেই সঙ্গে স্যাফের একটি ছবিও প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে স্যাফের পরনে ঐতিহ্যবাহী ‘রোব’। মুখভর্তি দাড়ি। চোখে পরিচিত সেই ‘রিমলেস’ চশমা। তবে ডান হাতের তিনটি আঙুলে ব্যান্ডেজ করা। সংবাদমাধ্যমে স্যাফের যে ছবি এত দিন প্রকাশ পেয়েছে, তার সঙ্গে এই ছবি দেখে স্যাফের চেহারা মিলিয়ে নিতে পারা যায়।
নিজেকে বরাবর উদারপন্থী হিসেবে বর্ণনা করলেও সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমন করার সময় পুরোপুরি গদ্দাফিকে সমর্থন করেছিলেন স্যাফ। বাবার সমর্থনে বারবার মুখ খুলেছিলেন মুয়াম্মর এবং সফিয়া গদ্দাফির বড় ছেলে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে পিএইচডি স্যাফকে বহুবার টিভি চ্যানেলে দেখা গিয়েছে। লিবিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, গদ্দাফি তাঁর ছেলেদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি নির্ভর করতেন স্যাফের উপরই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা ছিল, লিবিয়ার ভবিষ্যৎ শাসক হিসেবে গদ্দাফি হয়তো বেছে নেবেন স্যাফকেই। গদ্দাফির মৃত্যুর পর থেকে স্যাফকে খুঁজে পাওয়াটা ছিল সেনার কাছে বড় ‘চ্যালেঞ্জ’। যে ভাবে দেশে গদ্দাফির সরকার বিদ্রোহ দমন করেছে, তার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালত স্যাফকে গ্রেফতার করতে একটি পরোয়ানাও জারি করেছিল।
বস্তুত, অগস্ট মাসের শেষের দিক থেকে স্যাফকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তাই তখন থেকেই তাঁর গ্রেফতার নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের এ দিনের ঘোষণায় সেই জল্পনা দূর হলেও ধন্দ রয়ে গেল কবে এবং কী ভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে। |