পলিব্যাগ ব্যবহার করলে ব্যবসায়ীদের ‘ট্রেড লাইসেন্স’ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহরমপুর পুরসভা।
গত কয়েক দিন ধরে এ ব্যাপারে মাইকে প্রচারও চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শহরের বাসিন্দাদের হাতে পলিব্যাগ দেখলে মোটা টাকা জরিমানা করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “যথেচ্ছ পলিব্যাগ ব্যবহারের ফলে বহরমপুরের বিভিন্ন নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেই সঙ্গে নোংরা-আবর্জনা জমে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়াচ্ছে।” তিনি জানান, খোঁজ খবর নিয়ে তাঁরা দেখেছেন কিছু ব্যবসায়ী নিষেধ সত্ত্বেও ওই পলিব্যাগ ব্যবহার করেই চলেছেন। গ্রাহকদের তা ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন ওই ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের মত কড়া সিদ্ধান্ত নিতেও পুরসভা যে পিছপা হবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নীলরতনবাবু।
এর আগে ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর থেকে বহরমপুর পুর-এলাকায় প্লাস্টিকের যাবতীয় ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল পুর-কর্তৃপক্ষ। পলিথিনের ক্যারিব্যাগ থেকে প্লাস্টিকের কাপ ও গ্লাস ব্যবহার করে যত্রতত্র ফেলে দেওয়ার ফলে শহরের সমস্ত নিকাশি নালা যে স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে তা দেখেই এ ব্যাপারে ‘কঠোর’ হয়েছিল পুরসভা। এমনই দাবি। কিন্তু তাঁদের কঠোরতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গিয়েছে তা উপলব্ধি করেই এই সিদ্ধান্ত। |
সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন পথে জল জমছে। পলিথিন বর্জনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সেই সময়ে পুরবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পুরসভার তরফে ২৫টি ওয়ার্ডে গিয়ে সেই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠকও করা হয়েছিল সেই সময়ে। সে দফায় প্রচারও হয়েছিল বেশ কয়েক বার। জনবহুল চৌমাথায় প্রচারের পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে হোর্ডিং-ফেস্টুনও টাঙানো হয়েছিল।
কিন্তু পুরসভার নজরদারির অভাবে সেই ব্যবহারে দাঁড়ি পড়েনি। পুরসভা প্রচার করেই ক্ষান্ত দেওয়ায় গত কয়েক মাসে ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। এর পরেই পুরসভার টনক নড়ে। শেষ পর্যন্ত তারা মাইকে প্রচার চালায়। পলিথিনের ব্যবহার রুখতে বহরমপুরের বিভিন্ন বাজারে হানাও দেন পুরকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে যেমন মধুপুর বাজার থেকে বেশ কিছু পলিথিনের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
চেম্বার অফ কমার্সের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি অজয় সিংহ বলেন, “প্লাস্টিক বা পলিথিনের যাবতীয় ব্যবহার বর্জন হোক আমরাও চাই। কিন্তু ৪০ মাইক্রনের পুরু পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করার কথা সরকারি নিয়মে রয়েছে। এখন যদি কোনও ব্যবসায়ী ওই নির্দিষ্ঠ মাইক্রনের নিচে পলিথিন ব্যবহার করেন, সে ক্ষেত্রে পুরসভা তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমাদের কিছু বলার নেই।” |