|
|
|
|
|
চোখে চোখে হোকাস ফোকাস |
শুধুই চোখ খারাপ নয়, হতেই পারে ওটা স্রেফ সুন্দর হওয়ার শখ। রঙিন
কনট্যাক্ট লেন্স। তারই সৌজন্যে প্রতি বার নতুন, অচেনা আপনি। রুমি গঙ্গোপাধ্যায় |
সে এসেছিল মোটা চশমার যন্ত্রণা থেকে রেহাই দিতে। নেহাতই প্রয়োজনের খাতিরে। চোখের সঙ্গে সেঁটে থাকত। দূরত্ব কমে যাওয়ায় তার ব্যবহারে ঝটপট বাড়তে পারত না চোখের পাওয়ার। পুরু থেকে পুরুতর হত না চশমার কাচ। কী হবে, সামলানো যাবে তো, চোখের বারোটা বাজবে না তো এমন সব ভয় মিশ্রিত বিস্ময় নিয়ে তাকে সঙ্গী করতেন কেউ কেউ। শুরুতে সে ছিল খানিক শক্ত, অনেকটা প্লাস্টিকের মতো। এটা সেটায় ডুবিয়ে নরম করে তবে পরার উপযোগী হয়ে উঠত। ক্রমে গড়ন বদলাল। সে হয়ে উঠল ‘সেমি সফট’। খানিক নরম.....।
তবে, এ সবই ইতিহাস। সব পেরিয়ে সে এখন পালকের মতো মোলায়েম। দেখতে অনেকটা মাছের আঁশের মতো। শুধু গড়ন নয়, বদলেছে রূপও। অঙ্গে লেগেছে রঙের ছোঁয়া। নানান রঙে রঙিন হয়ে, প্রয়োজন ছাপিয়ে এখন সে আধুনিকার ফ্যাশনের অঙ্গ। অন্যতম ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ, কনট্যাক্ট লেন্স।
ফ্যাশনের অন্য যে কোনও অ্যাকসেসরিজ-এর তুলনায় কনট্যাক্ট লেন্স-এর আভিজাত্য অনেক বেশি। এ এমন এক অস্ত্র, যা কিনা মুহূর্তে নিয়ে আসতে পারে চটক। বদলে দিতে পারে আপনার চিরাচরিত ব্যক্তিত্ব। এমন কী পরিবর্তন ঘটিয়ে দিতে পারে মূল চেহারায়। চেনা চোখে নতুন রূপে ধরা পড়বেন আপনি। তাই তো লেন্স-এর কদর বাড়ছে ক্রমশ। এসে গেছে কালো, বাদামি, লালচে বাদামি (হেজেল) ধূসর, সবুজ, নীল, গোলাপি রঙের লেন্স।
|
তারা কাহিনি |
বিদেশি মডেল প্যারিস হিলটনের পছন্দ উজ্বল নীল রঙের লেন্স। তাঁর চোখের মণির আসল রং বাদামি। নীল রঙের লেন্স পরেন পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সও। আবার অ্যাঞ্জেলিনা জোলির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো। নীল রঙের মণিকে অ্যাঞ্জেলিনা ঢাকেন বাদামি লেন্স-এ। বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনেতা টম ক্রুজকেও দেখা গেছে নীল রঙের লেন্স পরতে। আবার ছবির খাতিরে ভ্যাম্পায়ার লুক আনতে রবার্ট প্যাটিনসন পরেছিলেন সোনালি রঙের লেন্স। অর্থাৎ কখনও ছবির খাতিরে, কখনও স্টাইলের প্রয়োজনে বিদেশি অভিনেতা অভিনেত্রীরা ব্যবহার করেন লেন্সকে। অভিনেত্রী সেলিনা জেটলির সব সময়ের সঙ্গী লেন্স। বাদ নেই ঐশ্বর্যা রাই থেকে শুরু করে প্রীতি জিন্টা বা বিপাশা বসু, কোয়েনা মিত্র বা সোনম কপূররাও।
|
এখন ট্রেন্ড |
যদিও মেয়েদের মধ্যে রঙিন লেন্স পরার চল বেশি, পিছিয়ে নেই ছেলেরাও। কিন্তু লেন্স পরা চাট্টিখানি কথা নয়। ঠিকঠাক লেন্সটি বেছে নিতে না পারলে পুরো সাজই ঘেঁটে যাবে। তাই দোকানে গিয়ে পছন্দের তারকার লেন্সটি তুলে নিলে মুশকিলে পড়বেন। লেন্স বাছতে হলে প্রথমত মাথায় রাখতে হবে গায়ের রং। তার সঙ্গে কী কারণে লেন্সটি নিচ্ছেন, আনুষঙ্গিক সাজই বা কী হবে, চোখের মেক-আপ কী করবেন সব কিছুই ভাবতে হবে। মোটামুটি ভাবে চোখকে হালকা ভাবে সাজাতে চাইলে নিতে পারেন বাদামি বা হেজেল রঙের লেন্স। আর কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য চোখকে বেশি রকম উজ্বল করে তুলতে চাইলে নিতে হবে সবুজ বা ধূসর রঙের লেন্স।
|
লেন্স কথা |
রঙিন লেন্স বিভিন্ন রকমের হয়। মোটামুটি এক বছর পরার জন্য কিনে নিতে পারেন একটি লেন্স। দাম পড়বে প্রায় ২,১০০ টাকার মতো। দিনে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পরা যাবে। কিন্তু এ রকম লেন্সের দরকার উপযুক্ত যত্ন। অত সময় না থাকলে নিতে পারেন এক মাসের জন্য লেন্স। দিনে দশ ঘণ্টা পরতে পারবেন। দাম শুরু ৯৯৫ টাকা থেকে। শুধু নির্দিষ্ট দ্রবণে ভিজিয়ে রাখলেই হবে। চোখের জন্যও স্বাস্থ্যকর। কিন্তু স্ট্রিপ খোলার এক মাসের মধ্যে ফেলে দিতে হবে।
তবে ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ হিসেবে চাহিদা বেশি ইউজ এন্ড থ্রো লেন্সের। সারা দিন পরে থাকুন। দিনের শেষে ফেলে দিন। রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলা নেই। খরচ মোটামুটি ভাবে ২,০০০ টাকা। ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তির জন্য রয়েছে পাওয়ার যুক্ত রঙিন লেন্স।
এক ঝটকায় রূপ বদলে দিতে লেন্স-এর জুড়ি নেই। শুধু লেন্স পরেই পেতে পারেন কেয়ারলেস বিউটি লুক। কিন্তু একটু বুঝেশুনে। ব্যাপারটা চোখ সংক্রান্ত। তাই মোটেই হেলাফেলা করবেন না। লেন্স পরার আগে অবশ্যই দরকার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। চোখ হঠাৎ করে লাল হয়ে গেলে বা কটকট করলে জোর করে পরবেন না। আর ভুল করেও অন্যের লেন্স চোখে দেবেন না। চোখের ক্ষতি হয়ে যাবে।
|
|
|
|
|
|