|
|
|
|
পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিরাপদ আশ্রয়ে জাগরী-রাজারাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আত্মসমর্পণকারী দুই মাওবাদী নেতা-নেত্রী জাগরী বাস্কে ও তাঁর স্বামী রাজারাম সোরেনকে বৃহস্পতিবার রাতেই কড়া নিরাপত্তায় মহাকরণ থেকে পুরুলিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলার পুলিশ লাইনে তৈরি পুনর্বাসন কেন্দ্রে (ট্রানজিট ক্যাম্প) তাঁদের রাখা হয়েছে। বাবা-মায়ের সঙ্গেই রাখা হয়েছে ছেলে বাহাদুরকেও।
গত ৬ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করার পর থেকে মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের এরিয়া কম্যান্ডার দুর্যোধন রাজোয়ার ও তাঁর স্ত্রী আকরি সহিসকেও রাখা হয়েছে এই পুনর্বাসন কেন্দ্রেই।
গত বছরের প্রথম দিকে মাওবাদী প্রভাবিত তিন জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ লাইনে পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলি তৈরি হয়। এক পুলিশকর্তা বলেন, “মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ শুরু হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশে। সেখানেই প্রথম আত্মসমর্পণকারীদের রাখার জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি হয়। সেই ‘প্রথা’ই অনুসরণ করেছে অন্য রাজ্যগুলো।”
|
জাগরী বাস্কে |
|
রাজারাম সোরেন |
ওই পুলিশকর্তার বক্তব্য, যে হেতু মাওবাদীরা অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার আবেদন জানায় সরকারের কাছে, তাই তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশকেই নিতে হয়। সেই কারণেই পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলি পুলিশ লাইনে তৈরি হয়েছে। সেখানে তাঁরা সপরিবার নিরাপদে থাকে।
নিরাপদে থাকলেও পুনর্বাসন কেন্দ্র মানেই যে নিশ্চিন্তে থাকা-খাওয়া, তা নয়। সেখানে নানা রকম হাতের কাজ শেখানো হয় আত্মসমর্পণকারীদের। ২০১০ সালের ২৭ অগস্ট মাওবাদী কম্যান্ডার শোভা মাণ্ডি আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাঁর অনুরোধ মেনে কম্পিউটার প্রশিক্ষক
নিয়োগ করে। বাঁকুড়ার পুনর্বাসন কেন্দ্রে সেলাই মেশিন কিনে দেওয়া হয়েছে আত্মসমর্পণকারী দুই মহিলা মাওবাদী রুম্পা মাহাতো ও মালিনী হাঁসদার জন্য।
এখনও পর্যন্ত যাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের নামেই খুন, ষড়যন্ত্র, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। অস্ত্র আইনেও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ওই তালিকায় আছে রাজারাম এবং জাগরীর নামও। এখন কী হবে তাঁদের?
এক পুলিশকর্তা জানান, কাউকে গ্রেফতার করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের আদালতে হাজির করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কেউ আত্মসমর্পণ করলে, সেই বাধ্যবাধকতা থাকে না। সেই কারণে একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে পুলিশ সামনে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং রাখা হয় পুনর্বাসন কেন্দ্রে। এর পরে কোন মামলায়, কখন তাদের আদালতে পেশ করা হবে তা পুরোটাই নির্ভর করবে রাজ্য সরকারের উপরে। |
|
|
|
|
|