দক্ষিণ কলকাতা
বুলেভার্ড
অবশেষে সংস্কার
বুলেভার্ড তৈরি করা হয়েছিল শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার অনেকগুলিরই এখন বেহাল দশা। বুলেভার্ডগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং সাজানোয় উদ্যোগী হচ্ছে কলকাতা পুরসভা।
টালিগঞ্জ থেকে সাদার্ন অ্যাভিনিউ ধরে গোলপার্কের দিকে যেতে দু’টি বুলেভার্ডের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় রয়েছে এলাকার সবচেয়ে বড় ভ্যাট। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলেই নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়। কয়েকটি বুলেভার্ডে জমে রয়েছে প্লাস্টিক-সহ আবর্জনা। কোনও কোনও বুলেভার্ড ভেঙেও গিয়েছে। কোথাও বা বুলেভার্ড ঘেরা জালের তারও চুরি গিয়েছে। অনেক বুলেভার্ডের গায়েই ঝোলানো রয়েছে জামাকাপড়।
একটি বুলভার্ডের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল বসার জন্য বেঞ্চ। সেগুলিও অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বুলেভার্ডগুলির মধ্যে জঞ্জালের এই ভ্যাটটি অনেক দিনের। এলাকায় ভ্যাট বসানোর বিকল্প জায়গা পাওয়া যায়নি। তবে, ভ্যাটটি আধুনিক ও উন্নতমানের করে সব সময় পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করব। বুলেভার্ডগুলির সংস্কারও করবে পুরসভা।”পুরসভার জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপন দফতর ইতিমধ্যেই ভ্যাটটি ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভ্যাটটি ঢাকনা দেওয়া থাকবে। ভ্যাটের চার ধারে থাকবে গাছ। দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, “ভ্যাটটির আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। এখন দুপুরের মধ্যেই ভ্যাটের ময়লা পরিষ্কার করে ফেলা হয়।”
কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য বন দফতরের উদ্যান বিভাগের যৌথ সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, টালিগঞ্জ থানার কাছে দেশপ্রাণ শাসমল রোড থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত সাদার্ন অ্যাভিনিউ বরাবর মোট ১৪টি বুলেভার্ড রয়েছে। এগুলিতে রয়েছে অনেক ফুলের গাছ। এর মধ্যে ১০টি বন দফতর এবং বাকিগুলি কলকাতা পুরসভা ও বিভিন্ন সংস্থা রক্ষণাবেক্ষণ করে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দফতরের নিয়ন্ত্রণে থাকা বুলেভার্ডগুলির চারটিই কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একটিকে এক মন্দির নির্মাণের জন্য শর্তসাপেক্ষে কিছু দিন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। ওই মন্দির কর্তৃপক্ষই পরে বুলেভার্ডটি রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তার জন্য প্রয়োজনীয় পুর-অনুমতিও মিলেছে।
বন দফতরের ডেপুটি কনজারভেটর অফ ফরেস্ট (আর্বান রিক্রিয়েশন ফরেস্ট্রি) সুমনা ভট্টাচার্য বলেন, “সাদার্ন অ্যাভিনিউ নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে সর্বক্ষণ দেখাশোনার জন্য লোকের প্রয়োজন। বুলেভার্ডে ময়লা ফেলা রুখতে নাগরিক সচেতনতার দরকার।”
মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “রাজ্য বন দফতর ছাড়াও গত পুরবোর্ডের আমলেই বুলেভার্ডগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থাকে বলা হয়। বেশির ভাগ সংস্থাই সুষ্ঠু ভাবে কাজ করেনি। এখন কেউ যদি কোনও বুলেভার্ডের সংস্কার করতে চান পুরসভার নজরদারিতেই তা করতে হবে। তার জন্য পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে।”
দেবাশিসবাবু জানান, যে বুলেভার্ডে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি আছে তার সংস্কার পুরসভা শুরু করেছে। শিল্পীর নামে তার নামকরণ হবে। ওখানে শিল্পীর গানও বাজবে। রাহুল দেব বর্মণের নামেও একটি বুলেভার্ডের নামকরণ হবে।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.