পূর্ব কলকাতা
দমকল
নিধিরাম
য়েক বছর আগের কথা। সেন্ট্রাল পার্কের ফাঁকা জমিতে উলুখাগড়ার বনে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দ্রুত হাজির বিধাননগর ও মানিকতলা দমকল কেন্দ্রের ফায়ার ইঞ্জিন। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমসিম খাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। কারণ, জলের সমস্যা।
বস্তুত, বিধাননগরে দমকলের জন্য আলাদা করে কোনও ওয়াটার রিজার্ভার নেই। ভরসা বলতে পুরসভার পাম্পিং স্টেশন অথবা ভেড়ি কিংবা পুকুরের জল। কিন্তু ভেড়ি বা পুকুর থেকে জল ভরতেও সমস্যা। অভিযোগ খোদ দমকল কর্মীদের। দিন বদলেছে। সরকারি শাসন ব্যবস্থাতেও রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। কিন্তু সমস্যা বদলায়নি। ইতিমধ্যেই দায়িত্ব হাতে নিয়ে দমকল দফতর এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিধাননগর পুরসভাকে আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন দমকলমন্ত্রী।
কিন্তু সমস্যাটা কি শুধু জলেরই?
পাঁচ নম্বর সেক্টর-সহ বিধাননগরের প্রায় ২২ হাজার প্লটে জনসংখ্যা তিন লাখ ছুঁই ছুঁই। বেড়েছে বহুতল। আহারাদির ব্যবসা সমেত রকমারি বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও বেড়েছে। বিশেষত, পাঁচ নম্বর সেক্টর এলাকায় গত পাঁচ বছরে দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে। বহুতলে আকাশ ঢেকেছে এই শিল্পতালুকের। কিন্তু সে তুলনায় দমকল কেন্দ্র কতটা আধুনিক হল?দমকল দফতরের সূত্র কিন্তু বলছে অন্য কথা। বিধাননগরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে শুধু বিধাননগর দমকল কেন্দ্রই নয়, ভরসা মানিকতলা দমকল কেন্দ্রের উপরেও। কিন্তু মানিকতলা দমকল কেন্দ্রেরও আরও বিশাল এলাকা রয়েছে। এ ছাড়াও দেখা যাচ্ছে, কর্মী সংখ্যা আদৌ পর্যাপ্ত নয়। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন শূন্যপদে লোক নিয়োগ হয়নি। পাশাপাশি, গাড়িগুলিও পুরনো। মাঝেমধ্যে খারাপ হয়ে গেলে সমস্যা বাড়ে। তিনটি শিফ্ট (দমকলের পরিভাষায় ওয়াচ) মিলিয়ে যেখানে যত সংখ্যক দমকলকর্মী থাকার কথা, তা নেই। দমকল কর্মীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত সংখ্যক লোক না থাকায় চাপ বাড়ছে অনেক বেশি। ফলে কাজের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে। রাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যেই পাঁচ নম্বর সেক্টরের দমকল কেন্দ্রে একটি স্কাই ল্যাডার পাঠানো হয়েছে। এটি ২১০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম। কিন্তু কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল। সমস্যার কথা স্বীকার করে দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “দায়িত্ব নিয়েই কর্মী নিয়োগ শুরু করা হয়েছে। ফলে আগের থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আরও সময় লাগবে। গাড়ি থেকে শুরু করে অন্যান্য পরিকাঠামো নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “বিধাননগর পুরসভার কাছে আমরা দমকলের জলের জন্য নির্দিষ্ট একটি ব্যবস্থা করার আবেদন করেছি। পাঁচ নম্বর সেক্টর-সহ বিধাননগর, রাজারহাট-নিউটাউন এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রাজারহাটে একটি অত্যাধুনিক দমকল কেন্দ্র তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে।”এ তো গেল পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা। বিধাননগরে সমস্যা আবার অন্যত্র। বিধাননগরের কোনও ব্লক থেকে আগুন লাগার খবর পেলে প্রধান সমস্যা হয় সেই জায়গা খুঁজে বার করতে। এক দমকলকর্মীর কথায়: “সবই গোলকধাঁধার মতো। পৌঁছতে সমস্যা হয়।” দমকলকর্মীদের মতে, পাঁচ নম্বর সেক্টরের সমস্যা ভিন্ন। বহুতলগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও সেগুলি ব্যবহার করার মতো দক্ষতার অভাবে সমস্যা বাড়ে।
পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক দায়িত্বরত নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অথরিটির দাবি, এই বিষয় নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারের ক্ষেত্রে অভাব রয়েছে। তবে দমকল দফতর এই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে নিয়মিত মহড়া দেবে বলেছিল। সব ক্ষেত্রে তা হয়ে ওঠেনি। সমস্যা স্বীকার করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দমকল দফতর। বিধাননগর কিংবা পাঁচ নম্বর সেক্টর এলাকার পতিত জমিতে কোথাও উলুখাগড়ার বন, কোথাও ঝুপড়ি আছে। সে সব জায়গায় আগুন লাগলে সমস্যা হয়। তা নিয়েও পুরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে দমকল সূত্রে খবর। বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

বিধাননগর

আছেন থাকার কথা
স্টেশন অফিসার
সাব অফিসার
ফায়ার অপারেটর
লিডার
গাড়িচালক




৪৩


১২
১২
৭২
এ ছাড়াও স্কাই ল্যাডারের জন্য ২জন প্রশিক্ষিত অফিসার আছেন

কোন গাড়ি কত
মোটরপাম্প
ওয়াটার ক্যারিয়ার
স্কাই ল্যাডার (প্রায় ২১০ফুট)
মোট




ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.