পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
আশ্বাস
এখনও লাল ধুলো
লাল ধুলোর ঝড়। সকাল থেকে রাত যখনই গাড়ি যায়, তখনই ওঠে এই ঝড়। বাড়ির বারান্দা থেকে দোকানের শো-কেস, সর্বত্র ধুলোর আস্তরণ পড়ে যায়। এই ঝড়েই অতিষ্ঠ দমদম পুরসভার গোরাবাজার এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, রাস্তার সারাই দায়সারা হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
দমদমের গোরাবাজার এলাকার আর বি সি রোড, মনুজেন্দ্র দত্ত রোড, দমদম পোস্ট অফিস রোড প্রতিটি রাস্তারই অনেকটা অংশে ইট ও খোয়া বিছানো রয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খারাপ রাস্তা সারানোর জন্য পুরসভার কাছে আবেদন করেন তাঁরা। পুরসভা ‘প্যাচওয়ার্ক’ করে দেয়। রাস্তার বড় বড় গর্ত বোজানো হয় ইটের টুকরোয়। এখন সেই ইটের টুকরোই ভোগাচ্ছে মানুষকে। গাড়ি যাওয়ার সময় উড়ছে লাল ধুলো। এই ধুলোয় রাস্তার ধারের বাড়িগুলির বাসিন্দাদের কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের একাংশের মতে, এর আগেই বরং অবস্থা ভাল ছিল।
এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা দিব্যেন্দু সাহা বলেন, “পুরসভা এলাকার এই রাস্তা তো গ্রামের রাস্তাকেও লজ্জা দেবে। এ সব রাস্তা দিয়ে এখন গাড়ি যাতায়াত অনেকটাই বেড়েছে। ফলে কিছুক্ষণ পরপরই এই ধুলোর ঝাপটা সহ্য করতে হচ্ছে।”
এ ছাড়া, গোরাবাজার এলাকার ভিতরে এই রাস্তাগুলিতে এখন অনেক বহুতল তৈরি হয়েছে। জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যাও। পাশাপাশি এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন রুটের অটোও চলাচল করে। এই রাস্তার উপর আছে নার্সিংহোম ও বিভিন্ন অফিস।
যেমন, আর বি সি রোডের একটি ব্যস্ত নার্সিংহোমের সামনেই বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে ইট ও খোয়া বিছানো রয়েছে। নার্সিংহোমের এক কর্মী বলেন, “রোগীদেরও এই লাল ধুলোর ঝাপটা সহ্য করতে হয়।” দমদম পোস্ট অফিসের কাছে এক বহুতলের বাসিন্দা অনিন্দ্য রায়চৌধুরী পোস্ট অফিস রোড দিয়েই রোজ মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যান। তিনি বলেন, “ইট ও খোয়া বিছানো এই খারাপ রাস্তায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। এর সঙ্গে লাল ধুলোয় কিছুক্ষণের জন্য সব ঘোলাটে হয়ে যায়।
এলাকার একটি ফাস্ট ফুডের দোকানদার বলেন, “আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সব খাবার তো কাচের শো-কেসে রাখতে পারি না। বাইরে খুব সাবধানে খাবার রাখতে হয়। খদ্দেরকে বাইরে খেতে বসতে দিতে পারি না। এখনই এই রাস্তা সারানো দরকার।”
দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সঞ্জীব চন্দ বলেন, “রাজ্য সরকারের কাছ থেকে টাকা পেয়েছি। তা দিয়ে দ্রুত রাস্তা সারাই শুরু হবে।” আগে তা হলে কেন তাড়াহুড়ো করে ইট ও খোয়া দিয়ে রাস্তা সারাই হল? সঞ্জীববাবুর উত্তর, “তখন সবে বৃষ্টি ধরেছে। বর্ষার মধ্যে পাকাপাকি ভাবে রাস্তা সারালে ফের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফের যদি বৃষ্টি নামে সেই আশঙ্কায় আমরা স্থায়ী ভাবে রাস্তা সারাইনি। অথচ রাস্তার হাল এতটাই খারাপ ছিল যে দ্রুত মেরামতির দরকার ছিল। তাই প্যাচওয়ার্ক করা হয়।”
বর্ষা বিদায় নিয়েছে অনেক দিন। এখনও কিন্তু দমদম গোরাবাজার এলাকার ওই রাস্তার ক্ষতে স্থায়ী প্রলেপ পড়ল না।

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.