খন্দপথ
বিপজ্জনক যাতায়াত
রাত ৯টা। মোটরসাইকেলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিক থেকে দাশনগরে আসছিলেন এক যুবক ও তাঁর সঙ্গী। হঠাৎ দুর্ঘটনা। রাস্তার মাঝে ছিটকে পড়লেন ওই যুবক ও তাঁর সঙ্গী। মোটরসাইকেলটিও রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ল। প্রাণহানি না হলেও গুরুতর জখম হলেন দুই জন। শুধু এক বার নয়। অভিযোগ, প্রায় প্রতি দিনই হাওড়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে এ ধরনের ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, মাস দেড়েক আগে ওই রাস্তার একটি অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হলেও তা মেরামতির হুঁশ নেই পুরসভার। যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যেই প্যাচওয়ার্ক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। কিন্তু কবে পুরোপুরি মেরামতি হবে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে সহজে হাওড়া ময়দান পৌঁছনোর জন্য অনেকেই ড্রেনেজ ক্যানাল রোড ব্যবহার করেন। কিন্তু এই পথের নতুন রাস্তার মোড় থেকে মহেশ ভট্টাচার্য হোমিওপ্যাথি কলেজ পর্যন্ত অংশে দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল অবস্থা। রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্ত। এবড়ো-খেবড়ো ওই পথে চলতে গিয়েই ঘটছে বিপত্তি। যান চালকরা জানান, প্রথম বার যাঁরা গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তায় আসছেন তাঁরাই বেশি বিপদে পড়ছেন। রাস্তার মাঝে বড় গর্তের সামনে আচমকাই ব্রেক কষতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। কখনও মোটরসাইকেল নিয়ে ছিটকে পড়ছেন আরোহী। কখনও আবার গর্তের সামনে আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়ানো গাড়ির পিছনে এসে ধাক্কা মারছে অন্য গাড়ি।
বাসিন্দারা জানান, মাস দেড়েক আগে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের ওই অংশে রাস্তা খুঁড়ে পাইপ লাইনের কাজ করেছে পুরসভা। সেই সময় প্রায় ২০ দিন মতো রাস্তাটি বন্ধ ছিল। কাজের পরে মাটি দিয়ে গর্ত বোজানো হলেও পিচ করা হয়নি। অভিযোগ, গাড়ির চাকার চাপে মাটি বসে গিয়ে নতুন রাস্তার মোড় থেকে মহেশ ভট্টাচার্য হোমিওপ্যাথি কলেজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গর্তের তৈরি হয়েছে। কয়েকটির ব্যাস প্রায় ৪-৫ ফুটের মতো। প্রতি দিন গড়ে কয়েক হাজার ছোট-বড় গাড়ি এই রাস্তা ব্যবহার করে।
দাশনগরের বাসিন্দা স্বরূপ সরকার বলেন, “প্রতি দিনই এই রাস্তা গিয়ে যাতায়াত করি। বড় গাড়িগুলি কষ্ট করে গর্ত কাটিয়ে চলে গেলেও, ছোট গাড়ির খুব সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে অজানা চালকদের সমস্যা সব থেকে বেশি হচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় কুণ্ডু বলেন, “এক বছরের মধ্যে ৪ বার একই জায়গা খোঁড়া হয়েছে। প্রতি বারেই প্যাচওয়ার্ক করা হয়েছে মাত্র। এ বারে সমস্যা সব থেকে বেশি হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক ও পুরসভাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাটি দিয়ে গর্ত বোজানোর ফলে গাড়ির চাকার চাপে এলাকায় ধুলোও উড়ছে খুব। সেই ধুলো চোখে-মুখে ঢুকছে। শ্বাসকষ্টও হচ্ছে।
হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “রাস্তার অবস্থা খারাপ। পুরসভার হট মিক্সিং প্ল্যান্ট চালু হলেই ওখানে প্যাচওয়ার্ক করা হবে। তাতে সমস্যা আপাতত মিটবে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে রাস্তা সারানোর টাকা না আসা পর্যন্ত পিচ করা সম্ভব নয়।”

ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.