|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ২... |
|
দেখা হল... ছ’জনের |
‘জানি দেখা হবে’। বিরসা দাশগুপ্তের নতুন ছবি। যেখানে হাত ধরেছেন টালিগঞ্জের
মোট ছ’জন পরিচালক। প্রতিযোগিতার বাজারে বন্ধুত্বের হদিশ? উত্তর খুঁজলেন সংযুক্তা বসু |
এক ছবি। ছয় পরিচালক।
পরিচালনায় নয়। ছবির দোসর হয়ে।
আগামী সপ্তাহে বিরসা দাশগুপ্তের ছবি ‘জানি দেখা হবে’ মুক্তি পাচ্ছে। আর সেই ছবির সব চেয়ে বড় আন্তরিকতার জায়গা আর সব চেয়ে বড় ইউএসপি এটাই।
বিরসা-সহ মোট ছ’জন পরিচালক, অঞ্জন দত্ত, রাজ চক্রবর্তী, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও সৃজিত মুখোপাধ্যায় সকলেই কোনও না কোনও ভাবে সঙ্গী হয়েছেন এ ছবির। কেউ অভিনেতা হয়ে, কেউ ছবির ‘লুক’ কেমন হলে ভাল লাগবে তার টিপ্স দিয়ে, কেউ প্রযোজক খুঁজে বের করার গুরুদায়িত্ব নিয়ে, আবার কেউ দর্শকের কাছে কী ভাবে ছবির খবর পৌঁছে দেওয়া যাবে তার সন্ধান দিয়ে।
চমক আরও আছে।
|
|
পায়েল আর পরমব্রত ‘জানি দেখা হবে’তে |
অঞ্জন দত্তের সোনার কাঠি ছোঁয়ানো অভিনয় আর গান। তাঁর অপর মেরুতে মমতা শঙ্কর। যা দেখে মনে পড়বে ‘গৃহযুদ্ধ’-এর সেই জুটিকে।
নাছোড় প্রেম, প্রচুর খুনসুটি, তুচ্ছ কারণে বিচ্ছেদ, শেষে ভালবাসাবাসিএমন একটা চেনা ছাঁদের মধ্যেই নায়ক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আর নায়িকা পায়েল সরকারকে নিয়ে তুলতুলে সব মুহূর্তও এ ছবির আর এক চমক। যা নিপুণ হাতে তৈরি করে গেছেন বিরসা। সুন্দর লেগেছে পায়েলকে। হাজির রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও। একেবারে সেই অভিনয়ের আলোয় যা তাঁর একান্ত আপন। ছবির ফ্রেম থেকে ফ্রেমে গলে যাওয়া আইসক্রিমের মতো চুমুর দৃশ্যের সঙ্গে মিশে যাবে শ্রীজাতের লেখা গান
‘জানি দেখা হবে
.... বুকের পশমে
তোমার নরমে
জো ওয়াদা কিয়া থা নিভানা পড়েগা’
অনুপম রায়ের গলায় এ গান মিশে গেছে পরমব্রতের ইমেজের সঙ্গে। শ্রেয়া ঘোষাল, মোনালি ঠাকুর, অনুপমের গান ‘জানি দেখা হবে’র অনন্য মাত্রা। সবই তো হল, কিন্তু সব কৌতূহল যেন একটা জায়গাতেই। এত সব নাম-করা পরিচালক কেনই বা এক প্ল্যাটফর্মে? প্রতিযোগিতার বাজারে এ তো সোনার পাথরবাটি! “এটাই তো একমাত্র উপায় বাংলা ছবির পায়ের তলার মাটি শক্ত করার,” বলছেন রাজ চক্রবর্তী, “আমি মূলধারার ছবি করি।
যদি কখনও অন্য ধরনের ছবি করার কথা ভাবি, আশা করব, অন্য পরিচালক বন্ধুরা আমাকেও সাহায্য করবে। আবার তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবি করতে গিয়ে নিজে যা শিখেছি সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেব অন্যদের সঙ্গে। দর্শকদের হলে টানতে হবে বারো মাস। তাই সকলেই ভাবব সকলের জন্য।”
পরিচালক পরমব্রত অভিনয় ছাড়া আর কী ভাবলেন এ ছবির জন্য? “চিত্রনাট্য লেখার সময় থেকেছি,” বললেন পরমব্রত, ‘‘এটা সহজ সরল প্রেমের গল্প। তাই যে জায়গাগুলো জটিল বা ভারী হয়ে যাচ্ছে মনে হয়েছে সেগুলোকে সরল করার কথা বলেছি।” বিরসার প্রথম ছবি ‘০৩৩’ সে ভাবে বক্স অফিস না পেলেও সেই ছবির ট্রিটমেন্ট নিয়ে চওড়া প্রশংসা করতে করতে পরিচালক সৃজিত বললেন, “ওর ছবির ট্রিটমেন্ট খুব স্পেশ্যাল। ‘জানি দেখা হবে’ যাতে অনেক দর্শকের কাছে পৌঁছয় সে জন্য আমি ফেসবুকে মেসেজ পোস্ট করতে আরম্ভ করেছি। কী ভাবে একের পর এক গান ফেসবুকে রিলিজ করে দর্শক টানা যায় সে নিয়েও কথা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|
বিরসা দাশগুপ্ত |
রাজ চক্রবর্তী |
সৃজিত মুখোপাধ্যায় |
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায |
অঞ্জন দত্ত |
|
একটা ছবিকে ঘিরে এত বন্ধুজনের উদ্দীপনায় আপ্লুত পরিচালক বিরসা জানালেন, যখন তাঁর হাতে কোনও কাজ ছিল না তখন রাজ চক্রবর্তীই প্রযোজক খুঁজে দিতে এগিয়ে আসেন। “তার পরে একে একে বাকি সবাই। একটা ব্যাপার বুঝেছি। কেউ একটা ভাল কাজ করতে চেষ্টা করলে প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে গিয়ে সবাই সবার পাশে থাকব আমরা।”
এ ছবিতে ভিস্যুয়াল চমক পরতে পরতে। যেমন, অঞ্জন দত্তের এন্ট্রি অনেকটা সুপারম্যানের মতো। পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে আকাশ ছাপিয়ে জেগে উঠবেন ঈশ্বরের মতো। আর তার পরে মিশে যাবেন রাতের বৃষ্টিভেজা কলকাতার ভীষণ বাস্তবে। এ রকম একের পর এক দৃশ্য এঁকেছেন বিরসা প্রেম-অপ্রেমের রং উজাড় করে।
অঞ্জন বলছেন, “আমি এ ছবিতে শুধুই অভিনেতা। অভিনয়টা করেছি এই জন্যেই যে, আমাকে দিয়ে কী ধরনের কাজ করানো সম্ভব সেটা বিরসাই সব চেয়ে ঠিকঠাক বুঝতে পেরেছে।” ‘জানি দেখা হবে’তে মজার খলনায়ক সেজেছেন ‘ইচ্ছে’ ছবির পরিচালক শিবপ্রসাদ এবং বলছেন, “রাজা দাশগুপ্তের সিরিয়াল ‘একুশে পা’-এ অভিনয় দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। তাঁরই ছেলে বিরসার ছবিতে কাজ করে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করলাম।’’
বৃত্ত আর এক ভাবেও সম্পূর্ণ হল। প্রতিযোগিতা আর পরশ্রীকাতরতার গন্ডি পেরিয়ে ছয় জনের হাত ধরাতেও।
পরিবর্তনের জমানায় এটাই স্টুডিওপাড়ার সব চেয়ে বড় খবর।
পুনশ্চ: আর একটা খবর। ডার্ক সার্কেল নিয়ে যাঁরা চিন্তিত, এ ছবি দেখে জেনে নিন, কী ভাবে তা সহজেই মুছে ফেলা যায়। |
|
|
|
|
|