রাজনৈতিক ঝাণ্ডার ক্ষমতার জোর নয়। কর্মযোগ্যতা যাচাইয়ের একমাত্র শর্ত হওয়া উচিত দক্ষতা। শুক্রবার খড়্গপুরে ট্রাক্টর্স ইন্ডিয়া লিমিটেড (টিআইএল)-এর কারখানার শিলান্যাস অনুষ্ঠানে শিল্প থেকে রাজনীতিকে দূরে রাখার এই বার্তাই দিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে একই সঙ্গে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষকে নিয়োগের উপযুক্ত করে তুলতে শিল্পমহলকেও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন প্রথমে খড়্গপুরে বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে টিআইএল-এর কারখানার শিলান্যাস করেন পার্থবাবু। পরে চাঙ্গুয়ালে উদ্বোধন করেন ওই ট্রাক্টর ও ক্রেন জাতীয় যন্ত্র নির্মাণকারী সংস্থারই আর একটি কারখানা। রাজ্যে নতুন সরকারের জমানায় যার উদ্বোধন হল উৎপাদন শিল্পের প্রথম কারখানা হিসেবে।
খড়্গপুরে কারখানার শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেরই হাতে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস বা কংগ্রেসের পতাকা। শিল্পমন্ত্রী বলেন, “চাকরি পেতে কর্মযোগ্য হতে হবে। কাল ঝাণ্ডা নিয়ে ঢুকে পড়ব, তা হবে না।” একই সঙ্গে টিআইএল কর্তাদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, সংস্থা প্রয়োজন অনুযায়ী যেমন কর্মী নিয়োগ করবে, তেমনই তার উচিত স্থানীয়দের কর্মযোগ্য হতে সাহায্য করা। ব্যবস্থা করতে হবে প্রশিক্ষণের। কারণ তা পেলে তাঁদের সামনে সুযোগ বাড়বে অন্যত্র চাকরি পাওয়ারও। |
উদ্বোধনে শিল্পমন্ত্রী। ছবি: কিংশুক আইচ |
সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও এমডি সুমিত মজুমদার অবশ্য জানান, বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে তাঁদের ১০৪ একর জমির মধ্যে ১২-১৪ একরে গড়া হবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেখানে প্রথমে সুযোগ পাবেন কারখানার জন্য জমি দেওয়া পরিবারের আইটিআই উত্তীর্ণরা। পরে প্রশিক্ষণ পাবেন অন্যরা। উল্লেখ্য, সিঙ্গুরে প্রকল্প গড়ার অনেক আগে থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মযোগ্য করতে এ ভাবেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল টাটা মোটরস।
পার্থবাবু জানান, বিদ্যাসাগর শিল্প তালুকে ৫৪৮ একর দেওয়া হয়েছে ১৬টি সংস্থাকে। কিন্তু এখনও সে ভাবে কাজ শুরু করেনি কেউ কেউ। জমি নিয়ে ফেলে রাখা রাজ্য যে বরদাস্ত করবে না, সে কথা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী।
এ দিন চাঙ্গুয়ালের কারখানার সামনে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ দেখান কিছু স্থানীয় মানুষ। পার্থবাবু আসার আগেই অবশ্য তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “এ রকম কিছু জানি না। তবে অসন্তোষ থাকলে আলোচনার দরজা খোলা আছে।” |