ফের আশঙ্কার কালো মেঘ শেয়ার বাজারে। এই নিয়ে টানা সাত দিন পড়ল সেনসেক্স। খোয়ালো মোট ১,২০০ পয়েন্ট। শুধুমাত্র চলতি সপ্তাহের পাঁচটি লেনদেনের দিনেই সূচক নেমেছে ৪.৮%। সাপ্তাহিক পতনের নিরিখে গত সাড়ে তিন মাসে যা সর্বোচ্চ। শুক্রবারও ৯০.২০ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স থেমেছে ১৬,৩৭১.৫১ অঙ্কে। দেশে ও বিদেশে অর্থনীতির এই টালমাটাল অবস্থায় সূচক ১৪ হাজারের ঘর পর্যন্ত নেমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
আবীরা সিকিউরিটিজের সিইও লক্ষ্মণ শ্রীনিবাসন বলেন, “শেয়ার বেচে বাজার থেকে বেরোতে চান সকলে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নিও কমেছে চোখে পড়ার মতো। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত তারা শেয়ার কিনেছে ৫৭.১০ কোটি ডলারের। ২০১০-এ যে অঙ্ক ছিল ২,৯০০ কোটি ডলার।
এক দিকে, ইউরোপের আর্থিক সঙ্কট এবং তার জেরে বেহাল বিশ্ব অর্থনীতি। অন্য দিকে, দেশে আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, টানা সুদ বৃদ্ধি, তলানিতে ঠেকা শিল্প বৃদ্ধির হার (সেপ্টেম্বরে ১.৯%)। এই দুইয়ের ‘সাঁড়াশি আক্রমণে’ আগামী দিনে সূচক আরও নীচে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা অনেক বিশেষজ্ঞেরই। যেমন, অজিত দে বলেন, “তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থাগুলির ফলাফল খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা। ফলে বাড়তে পারে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ।” প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও অনেকের ফল আশানুরূপ না হওয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
শুধু সংস্থাগুলির শেয়ার দর নয়, বাজারে কমছে লেনদেনের বহরও। বড় ও মাঝারি লগ্নিকারীদের অনেকেই শেয়ার ব্যাঙ্কে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়ে তা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেন। বাজার সূত্রের খবর, ওই সব শেয়ারের দাম বহু ক্ষেত্রেই কমে যাওয়ায় নতুন করে ঋণ দিতে চাইছে না ব্যাঙ্কগুলি। পাশাপাশি শেয়ারের দাম কমা সত্ত্বেও সেগুলি বেচে ওই ঋণ মেটাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।
শেষ পর্যন্ত সূচক কোথায় নামতে পারে? শ্রীনিবাসন ও অজিতবাবুর আশঙ্কা, বাজেটের আগেই সেনসেক্স ১৪ হাজারের ঘরে চলে আসতে পারে। ১৫ হাজারে যে নামবে, তা নিশ্চিত।
এ দিকে, এ দিনও ফের ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম পড়ল ৪৪ পয়সা। ফলে এক ডলারের দাম দাঁড়াল ৫১.৩৪/৩৫ টাকা। টাকার এই দর গত ৩২ মাসে সর্বনিম্ন। |