|
|
|
|
তৃণমূলের নেতা খুন, অভিযুক্ত কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম করতে তৃণমূল কংগ্রেসের এক যুব নেতাকে কুপিয়ে, পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের একদল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেলে মালদহের গাজল থানার করকচ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম প্রেমচাঁদ বল (৪০)। তিনি মালদহের গাজলের করকচ অঞ্চল যুব তৃণমূলের সম্পাদক ছিলেন। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “এই ঘটনায় ৪২ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
বাকি অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।” ৬ জন তৃণমূলকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খুনের ঘটনার পরে কংগ্রেস ও সিপিএমের আঁতাঁতের অভিযোগ এনেছেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তাঁর অভিযোগ, “মালদহে সিপিএম-কংগ্রেস মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। কোতোয়ালির পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে কংগ্রেস ছেড়ে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তাতেই গনি পরিবারের গাত্রদাহ হচ্ছে। কংগ্রেস ও সিপিএম একজোট হয়ে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা করছে।”
আজ, শুক্রবার গাজলে নিহত ও আক্রান্তদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। |
|
গাজলে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায় |
ঘটনাচক্রে আজ, গঙ্গারামপুরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার কথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়ের। তিনিও গাজলে যেতে পারেন। উত্তর মালদহের সাংসদ তথা প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নুর পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “গাজলে তৃণমূল বলে কিছু নেই। সিপিএমের গুন্ডারা এখন সবাই মিলে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। পুলিশের একাংশ তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। যারা খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের পুলিশ ধরুক। খুনিদের পাশে কংগ্রেস দাঁড়াবে না।” প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, গাজলের করকচ-সহ বেশ কিছু এলাকায় রাজ্যে নয়া সরকার গঠনের পর থেকেই গোলমাল চলছে। ওই সব এলাকার কোথাও সিপিএমের, কোথাও কংগ্রেসের আধিপত্য থাকলেও সরকার গঠনের পরে তৃণমূলের শক্তি বাড়তে থাকে। তা নিয়ে গণ্ডগোলও বাড়ে। ঘটনার দিনও দুপুরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গাজল থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল তাদের উপরে আক্রমণ করছে।
ওই স্মারকলিপি দেওয়ার পরে করকচ এলাকায় গোলমাল তুঙ্গে পৌঁছয়। কারণ, করকচের বাসিন্দা মাজি মুর্মুর ৬ বিঘা জমির ধান তিন দিন আগে কংগ্রেসের লোকেরা কেটে নিয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এলাকা তেতে ছিল। তার উপরে মাঝি মুর্মুকে জমি থেকে তুলে কংগ্রেসের সমর্থকেরা উত্তর মাহিপুরে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই খবর শোনার পরে দলের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি প্রেমচাঁদ উত্তর মাহিপুর গ্রামে যান। তখনই ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা হয় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তাতে প্রেমচাঁদ ছাড়া জখম হন মাশি মুর্মু, অনীশ রায়-সহ ৬ জন। পুলিশ গেলে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। তাঁদের মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে প্রেমচাঁদের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ময়না-তদন্তের পরে প্রেমচাঁদবাবুর দেহ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা কালো ব্যাজ পড়ে গাজলে মৌন মিছিল করেন। |
|
|
|
|
|