কাঁটাডির লুঠ হওয়া অস্ত্র মিলেছে মৃত মাওবাদীদের কাছে
যোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে দুই মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যের মৃত্যুর পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকেও ‘সাফল্য’ হিসেবে দেখছে পুলিশ বা যৌথ বাহিনী।
সোমবার রাতে বলরামপুরের ঘাটবেড়া গ্রামের অদূরে অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে দুয়ারসিনি ঝোরার নীচে খুনটাঁড় গ্রামে ‘অপারেশন’ সেরে ফেরার পথে যৌথ বাহিনীর মুখোমুখি পড়ে যায় মাওবাদীরা। রাতভর গুলির লড়াইয়ের পরে ঘটনাস্থল থেকে দুই মাওবাদীর মৃতদেহের পাশাপাশি তাঁদের বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, একটি .৯ এমএম পিস্তল, একটি এসএলআর (স্বয়ংক্রিয় রাইফেল), একটি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল এবং একটি দো-নলা বন্দুক ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ওই সব আগ্নেয়াস্ত্রের মোট ১৫০ রাউন্ড গুলি।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, “উদ্ধার হওয়া থ্রি-নট-থ্রি রাইফেলটি ২০০৬-এর ফেব্রুয়ারিতে আড়শার কাঁটাডি পুলিশ ক্যাম্প থেকে লুঠ করেছিল মাওবাদীরা। যে এসএলআর-টি মিলেছে, সেটিও মাওবাদীদের লুঠ করা। ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে বরাভূম (বলরামপুর) স্টেশনে ট্রেনের কামরায় আরপিএফ জওয়ানদের খুন করে ওই এসএলআর লুঠ করেছিল মাওবাদীরা।” কিন্তু .৯ এমএম পিস্তল তো শুধুমাত্র পুলিশবাহিনীই ব্যবহার করে? পুলিশ সুপারের জবাব, “ওই পিস্তলটিও লুঠ করা। তবে কোথা থেকে, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের ছবিটি তুলেছেন সুজিত মাহাতো।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সোমবার রাতের গুলিযুদ্ধের পাশাপাশি মর্টার ও হ্যান্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করেছিল যৌথ বাহিনী। গ্রেনেড ছুড়লে ১০ মিটারের মধ্যে কেউ থাকলে তার জখম এমনকী মৃত্যু হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ বলেন, “আমরা নিশ্চিত, ওদের আরও কয়েক জন জখম হয়েছে। তাদের খোঁজে পাহাড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নাগা, কমান্ডো, সিআরপি, স্ট্র্যাকো। কোবরা-সহ বিভিন্ন বাহিনী পাহাড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সিআইএফ (কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স)-কে নিয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিআইএফের এসপি মনোজ বর্মা। তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের কাছে খবর আসে, পাহাড়ের বাঁধডির কাছাকাছি কোনও জঙ্গলে মৃতদেহ পড়ে আছে। যেখানে গুলিযুদ্ধ হয়েছিল, এই জায়গাটি তার কাছেই। যৌথ বাহিনী ওই এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য জানান, তল্লাশিতে কিছু পাওয়া যায়নি। গুলিযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে ৪টি ডিটোনেটরও মিলেছে। যা ব্যবহার করে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটানো যায়।
মাওবাদীদের অযোধ্যা প্লাটুনের ‘মাইন-মাস্টার’ দুর্যোধন রাজোয়াড় ওরফে সুজন বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে। নিজেদের গোপন ডেরার পথে কী ভাবে মাওবাদীরা মাইন বিছিয়ে রাখে, সে সম্পর্কে দুর্যোধনকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
আইজি নিজেই বলেছেন মাওবাদীদের সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ চলছে। সেই যুদ্ধে অযোধ্যা পাহাড় বেশ কঠিন ঠাঁই মেনে নিয়ে এক পুলিশ কর্তা বলেন, “সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। যেহেতু এই পাহাড় রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া, তাই সব সময় ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।” এ দিকের আহত কোনও মাওবাদী ও পাশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারে। সেই সম্ভাবনার কথা ঝাড়খণ্ড পুলিশকে বলা হয়েছে বলেও জানান আইজি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.