|
|
|
|
বাম শরিকে কাজিয়া তুঙ্গে |
রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় • হলদিবাড়ি |
কোচবিহারের হলদিবাড়ি থানার হেমকুমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন নিয়ে সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। সড়ক নির্মাণে দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্ত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রধান অমল রায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে সিপিএম আপত্তি তুলেছে। এমনকী, থানায় অভিযোগ দায়েরের পরে গত সাত মাস ধরে গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে না-আসা প্রধানের সদস্যপদ খারিজের দাবিও তুলেছে সিপিএম। গত ১ নভেম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বার্ষিক সাধারণ সভায় ভোটাভুটিতে অমলবাবুর সদস্যপদ খারিজের পক্ষে সিপিএমের পাশাপাশি কংগ্রেসের সদস্যরাও ভোট দেন। এই পরিস্থিতিতে প্রধান পদ নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক বনাম সিপিএমের কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। সিপিএমের হলদিবাড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক রথীশ দাশগুপ্ত বলেন, “আইন মেনে প্রশাসন অমল রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তাঁকে এখন পদে নিয়োগ করতে হলে প্রশাসনকে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সেটা সম্ভব না-হলে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হোক।” ফরওয়ার্ড ব্লকের হলদিবাড়ি ব্লকের সম্পাদক ইন্দজিৎ সিংহ বলেন, “অমল রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। তাঁকে হাজতে থাকতে হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি। আমরা আইন মেনেই অমলবাবুকে প্রধান পদে নিয়োগের দাবি জানিয়েছি।” কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও অমলবাবুকে ফের প্রধান পদে নিয়োগের ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছে। দলের ব্লক সভাপতি তরুণ দত্ত বলেন, “অমল রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বিচারাধীন। সুতরাং ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি অযৌক্তিক। অমল রায়কে বাদ রেখে অন্য কাউকে প্রধান পদে বসানো হোক।” মেখলিগঞ্জের মহকুমাশাসক দেবাশিস কর্মকার বলেন, “আগামী সপ্তাহে হলদিবাড়িতে যাব। তখন সকলের সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” ২০১০ সালে হেমকুমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪টি পাকা রাস্তা তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তদন্তে নামে প্রশাসন। প্রশাসনিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হলে প্রধান অমল রায়কে শোকজের পাশাপাশি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরেই অমলবাবু ফেরার হয়ে যান বলে অভিযোগ। গত মে মাসে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। অমলবাবুর অনুপস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের মিনি অধিকারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অমলবাবু এলাকায় ফিরে এসে প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেন। পরে ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর পরে ফের তিনি প্রধান পদ দাবি করলে সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। অমলবাবুর বক্তব্য, “পঞ্চায়েতের ৭টি মিটিংয়ের নোটিশ পাইনি। তার পরের ৫টি মিটিংয়ের নোটিশ পেয়েছি। ভোটাভুটিতে অংশও নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ভুয়ো। সিপিএমের চক্রান্ত। আমি নির্দোষ।” অন্যদিকে, মিনি দেবীর বক্তব্য, “অমলবাবুর সদস্যপদ খারিজের পক্ষে ভোটাভুটি হয়েছে। তাতে অমলবাবুর বিপক্ষে ভোট পড়েছে। ব্লক প্রশাসনকে সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|