|
|
|
|
অধ্যক্ষকে অপসারণ |
ক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপক মঞ্চ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চাঁচল |
আর্থিক গরমিল-সহ একাধিক অভিযোগে চাঁচল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিতা চক্রবর্তীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। বুধবার এই ব্যাপারে প্রশাসকের নির্দেশ চাঁচল কলেজে নির্দেশ পৌঁছয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হয়েছে কলেজের শিক্ষক গাহুল আমিনকে। তবে গাহুল আমিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকতে পারলেও অনিতা দেবী দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে রাজি হননি। অফিসে টানাপোড়েনের জেরে কলেজের বিএসসি পার্ট টু ফাইনাল প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। আগামী দু’দিনের পরীক্ষাও বাতিল করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ডিগ্রি কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষার মার্কশিটও পাননি ছাত্রছাত্রীরা। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপা দত্ত। উপাচার্য বলেন, “আমি বিষয়টি শুনেছি। কলেজের পড়াশোনার পরিবেশ ঠিক রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। সবিস্তারে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করব।” সদ্য নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এদিন কলেজে এলেও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। আলমারির চাবিও দিতে চাননি। ফলে সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়া হিসাব রক্ষকও অনুমোদন ছাড়াই ১০ দিন ছুটি নিয়েছেন। সমস্ত কিছুই বিস্তারিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, “কোনও তরফে পদ্ধতিগত ভুল হয়ে থাকলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিতা দেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অ্যাকাউন্ট ও ক্যাশবুক ঠিক মতো লেখানোর ব্যাপারে উদোগী নন। পাশাপাশি এক চতুর্থ কর্মী-সহ ১১ জন আমন্ত্রিত শিক্ষকের বেতন আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদায়ী অধ্যক্ষ অনিতা দেবীর বিরুদ্ধে। অনিতা দেবীর দাবি, ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী টানা ৪ বছর কলেজে গরহাজির ছিলেন। তাঁকে বকেয়া বেতন দেওয়া উচিত কি না সেই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরামর্শ চেয়েছেন। আর ১১ জন আমন্ত্রিত শিক্ষকের মেয়াদ ফুরিয়েছে গত মার্চ মাসে। অনিতা দেবী বলেন, “৪ বছর গরহাজির থাকা কর্মীর বিষয়ে কী করা হবে জানতে চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও উত্তর পাইনি। আমন্ত্রিত শিক্ষকদের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। প্রশাসক অযথা মানসিক চাপ দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতে চাইছেন। তা না-মানায় ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে অবৈধ ভাবে সরাোনর চেষ্টা হচ্ছে। আমি ভুল করেছি তা উপাচার্য জানালে দায়িত্ব, চাবি সবই বুঝিয়ে দেব।” এই ব্যাপারে কলেজের প্রশাসক প্রাণতোষ সেন বলেন, “শুনেছি, অনীতা দেবী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। কলকাতা থেকে ফিরেই ব্যবস্থা নেব।” তৃণমূল প্রভাবিত গৌড়বঙ্গ অধ্যাপক মঞ্চের সভাপতি অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, “অন্যায়ভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরানো হয়েছে। পড়াশোনার পরিবেশ ফেরাতে আমরা সংগঠনের তরফে যা করণীয় করব।” সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মনোজ ভোজ ও দিলীপ দেবনাথ একযোগে দাবি করেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রশাসক অনিতা দেবীকে পদ থেকে সরিয়েছেন। একজনকে সরিয়ে আর একজনকে বসিয়ে দিলাম এটা হয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রথমে শো কজ-সহ বেশ কিছু পদ্ধতি মেনে সরানোর ব্যবস্থা করা উচিত। নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে।” |
|
|
|
|
|