আরও তিনটি শিশুর মৃত্যু মালদহ সদর হাসপাতালে |
বুধবার মালদহ সদর হাসপাতালে ফের আরও তিনটি শিশুর মৃত্যু হল। এই নিয়ে ৮ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত মালদহ সদর হাসপাতালে ৩০টি শিশুর মৃত্যু হল। বুধবার জেলাশাসক শ্রীমতী অর্চনা অবশ্য সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, ৯ নভেম্বর থেকে সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ২৬। শিশু মৃত্যু রুখতে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত সিক নিউ বর্ন বেবি কেয়ার ইউনিটের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চারজন বিশেষজ্ঞকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সদর হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক। তিনি বলেন, “মালদহের চারজন চিকিৎসককে সিক নিউ বর্ন বেবি কেয়ার ইউনিটের প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই চিকিৎসকদের বেশির ভাগই বসে রয়েছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিককে ফ্যাক্স পাঠিয়ে ওই চার বিশেষজ্ঞকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মালদহ সদর হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” টানা ৯ দিন ধরে সদর হাসপাতালে একের পর এক শিশু মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন জেলাশাসক বলেন, “সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যু কমানোর জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক শিক্ষকদের কাজে নামানো হয়েছে। পাশাপাশি শিশু বিভাগের পরিকাঠামোর উন্নতি করা হচ্ছে। সেখানে ৬টি ওয়ার্মার, ২টি ফটোথেরাপি যন্ত্র বসানো হয়েছে। পাশাপাশি মানিকচক, মিল্কি এলাকা থেকে অসুস্থ শিশুদের যাতে সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে না হয় সেই জন্য মানিকচক ও মিল্কি ব্লক হাসপাতালে স্টেবিলাইজেশন ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে।” জেলা প্রসাসনের বক্তব্য, প্রথমে ওই এলাকার শিশুদের মানিকচক ও মিল্কি ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হবে। একটু সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের মালদহ সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যু উদ্বেগজনক হলেও এখনই ঘটনায় কারও গাফিলতি নেই বলেও দাবি করেছেন জেলাশাসক। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টার্চায জানান, ৯-১৫ নভেম্বর মালদহ সদর হাসপাতালে ২৭৯ টি প্রসব হয়েছে। যার মধ্যে ১৯৩ স্বাভাবিক ও বাকি ৮৬ টি সিজার হয়েছে। সন্তান প্রসবের সময় ৭ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই ৭ দিনে ০-২৮ দিনের নবজাতকদের জন্য সংরক্ষিত বিভাগে ১৬৭ টি শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। ১১টি শিশু মারা গিয়েছে। শিশু বিভাগে ৫৪১টি শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৫টি শিশু মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, “মালদহ সদর হাসপাতালে বছরে যে হারে ডেলিভারি হয়, তা কলকাতার যে কোনও মেডিক্যাল কলেজের সমতুল। অথচ কলকাতার মেডিক্যাল কলেজের তুলনায় মালদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসক মাত্র ১০ শতাংশ।” |