সমস্যা যেন পিছু ছাড়ছে না বাঘা যতীন হাসপাতালের! মেডিসিন বিভাগের অচলাবস্থা কাটতে না-কাটতেই অচল সার্জারি বিভাগ। সেখানে জটিলতা অনেক বেশি। মেডিসিন বিভাগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শুধু বহির্বিভাগ। কিন্তু সার্জেনের অভাবে সার্জারি বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ তো হয়েছেই। সেই সঙ্গে বন্ধ সার্জারির বহির্বিভাগও।
প্রথমে ‘নেশাগ্রস্ত’ অবস্থায় ডিউটি করার জন্য মেডিসিন বিভাগের একমাত্র চিকিৎসকের সাসপেন্ড হওয়ায় সমস্যায় পড়ে যায় বাঘা যতীন। সেই অভাব পূরণের জন্য তাঁর জায়গায় এম আর বাঙুর হাসপাতাল চিকিৎসক পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু যে-চিকিৎসকের সেখানে যাওয়ার কথা ছিল, তিনি বেঁকে বসেন। ফলে বাঘা যতীনে মেডিসিনের বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল এক সপ্তাহ। গত সোমবার সেই বিভাগ খুললেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। তার উপরে সার্জারি বিভাগের সঙ্কটে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ দিশাহারা। কারণ, সার্জেন না-থাকায় ৯ নভেম্বর থেকে সার্জারি বিভাগে রোগী ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। সার্জারির বহির্বিভাগও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। যে-সব রোগী অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের প্রায় প্রত্যেককেই অন্য হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়েছে। সার্জারিতে ভর্তি রয়েছেন মাত্র দু’জন।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই বাঘা যতীন হাসপাতালে আচমকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষেবা উন্নত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। বহির্বিভাগ ঠিক সময়ে খোলার কথাও বলা হয়েছিল। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনের পরেও সেই হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবে সার্জারির মতো বিভাগ বন্ধ করে দিতে হল। এ ব্যাপারে কী বলছেন হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ?
বাঘা যতীনের সুপার বিকাশ মণ্ডল বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে হাসপাতালের একমাত্র সার্জেন ছিলেন স্বপন নায়েক। তিনিই কোনও মতে সামাল দিচ্ছিলেন। আগামী জানুয়ারিতে তিনি অবসর নেবেন। কিন্তু অসুস্থ হওয়ায় গত সপ্তাহ থেকেই তিনি ছুটিতে চলে গিয়েছেন। তাঁর জায়গায় অন্য কোনও চিকিৎসক পাঠানো হয়নি। তাই সার্জারিতে ভর্তি, বহির্বিভাগ সবই বন্ধ।”
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও এ ব্যাপারে তাঁদের অসহায়তার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা শিখা অধিকারী বলেন, “চিকিৎসকের অভাব চলছে গোটা জেলা জুড়েই। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালেও কোনও সার্জেন নেই। আমরা সার্জেন জোগাড় করার চেষ্টা চালাচ্ছি।” |