ন্যাশনাল মেডিক্যাল
আশ্বাসই সার, একটুও বদলায়নি ‘নেই-রাজ্য’
ন্যাশনাল রয়েছে ন্যাশনালেই!
হাসপাতালের পুলিশ-ফাঁড়ির ইনচার্জ সরেছেন। নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোর বেহাল দশা যে কে সে-ই! রাজ্যের অন্যতম প্রধান এই সরকারি হাসপাতালে ‘নেই-রাজ্যে’র ছবিটা বদলায়নি এক চুলও।
নিরাপত্তা এবং ইমার্জেন্সিতে যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধ ও চিকিৎসা-সরঞ্জাম দেওয়ার দাবিতে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন দিন কর্মবিরতি পালন করছিলেন সেখানকার জুনিয়র ডাক্তারেরা। দফায় দফায় স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক এবং হাজারো প্রতিশ্রুতির বন্যার পরে শনিবার রাতে কর্মবিরতি উঠে যায়। কিন্তু তার পরেও ছবিটি বদলেছে কি?
কর্মবিরতি উঠে যাওয়ার তিন দিন পরে, বুধবার হাসপাতালের হাল খতিয়ে দেখতে গিয়ে নজরে এল সেই একই চিত্র। সামান্য গজ, তুলো, ব্যান্ডেজও নেই ইমার্জেন্সিতে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ নেই, গ্লাভ্স নেই। বহু সাধারণ ওষুধও বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হচ্ছে। এক্স-রে ফিল্মের সরবরাহ নেই বলে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে ছুটছেন রোগীরা। বিছানায় শতচ্ছিন্ন চাদর, বেশির ভাগ রোগীর পরনেও ছেঁড়া গাউন। ইমার্জেন্সি, আউটডোর সামলাচ্ছেন মূলত জুনিয়র ডাক্তারেরা।
এ দিন সকালেই এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের এক দল উত্তেজিত লোক ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে পড়েন। রামমোহন ব্লকের পাঁচতলায় উঠে তাঁরা সবাই মিলে চিৎকার করতে থাকেন। ফের বড় ধরনের গণ্ডগোলের আশঙ্কায় ত্রস্ত হয়ে ওঠেন হাসপাতালের কর্মীরা। পরে অবশ্য পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তা হলে চিকিৎসকদের তিন দিনের কর্মবিরতি আর রোগীদের অশেষ ভোগান্তির পরে কী বদলাল ওই হাসপাতালে? এক জুনিয়র ডাক্তার বললেন, “কিচ্ছু বদলায়নি। এখনও ফাটা মাথা নিয়ে কেউ এখানে এলে আমরা তাঁকে বলছি, তুলো-ব্যান্ডেজ কিনে আনুন। কোনও রোগীর স্যালাইন দরকার হলে বলছি, স্যালাইনের বোতল আছে, কিন্তু স্যালাইন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বাকি সরঞ্জাম নেই। এখনও বেশির ভাগ সময়েই মেডিক্যাল অফিসারদের দেখা পাওয়া যায় না। জুনিয়র ডাক্তারদের সামনে এগিয়ে দিয়ে সিনিয়র ডাক্তারেরা দিব্যি থাকেন।”
ন্যাশনালে কর্মবিরতি শুরু হওয়ার পরে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল, সমস্যাটি প্রশাসনিক ভাবে মোকাবিলা করা হবে। বিভিন্ন বিভাগের কাজ সচল রাখতে অন্য হাসপাতাল থেকে ১২ জন মেডিক্যাল অফিসারকে আনার পাশাপাশি দফায় দফায় জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যেরা। কিন্তু কেন পরিস্থিতি এক চুলও বদলাল না?
সুপার পার্থ প্রধান বলেন, “আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি। কী কী নেই, তার তালিকাও দিয়েছি। এর পরে তাঁদের নির্দেশের অপেক্ষা।”
প্রশ্ন হল, ন্যাশনাল তো কোনও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। নেই-রাজ্যের এই সমস্যা রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালেও প্রকট হয় মাঝেমাঝেই। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির কারণে ন্যাশনাল সংবাদের শিরোনামে এলেও অন্য জায়গায় রোগীদের ভোগান্তি অজানাই থেকে যায়।
কবে বদলাবে স্বাস্থ্য-পরিষেবার এই ছবি? রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চেষ্টা চলছে। অনিয়মগুলি কোথায়, সেটা আগে খুঁজে বার করতে হবে। কারণ, এত বছর ধরে অনিয়মটিই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি ন্যাশনালে গিয়ে সরেজমিন সব কিছু দেখব। কিছু চিকিৎসকের ফাঁকিবাজির খবরও জানি। অন্য হাসপাতালগুলির ছবিও ধাপে ধাপে বদলাবে। শুধু খানিকটা সময় দরকার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.