|
|
|
|
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, ধৃত তৃণমূল নেতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালবাজার |
বিয়ের টোপ দিয়ে এক তরুণীর সঙ্গে দিনের পর দিন সহবাস এবং জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের মালবাজার ব্লকের সভাপতিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বুধবার দুপুরে মালবাজার থানার ঘড়ি মোড় এলাকা থেকে তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম শুভাশিস ঘোষ ওরফে মনা। ২০০৮ সালের পুরভোটে তিনি হেরে যান। অভিযোগকারী তরুণীর বাড়ি ওই পুর এলাকারই ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মালবাজারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অরিন্দম সরকার বলেছেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে শুভাশিসবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং জোর করে গর্ভপাত--তিনটি অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন শুভাশিসবাবু। |
|
শুভাশিস ঘোষ
নিজস্ব চিত্র |
মঙ্গলবার মালবাজার ট্যুরিস্ট লজের ম্যানেজার শুভাশিসবাবুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। ম্যানেজারের অভিযোগ, লজের এক মহিলা কর্মীকে গালি দিয়ে অভব্য আচরণ করেন শুভাশিসবাবু। ওই রাতেই শুভাশিসবাবু পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এ দিন ট্যুরিস্ট লজের ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে শুভাশিসবাবু প্রথমে ভেবেছিলেন। পরে পুলিশের কাছে ওই তরুণীর অভিযোগের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বলেন, “ট্যুরিস্ট লজের অভিযোগে আমাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সে জন্য এক দিন পরে অন্য ধরনের ষড়যন্ত্র হল।”
শুভাশিসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁর দিদি নীলাদেবী এবং দাদা দেবাশিসবাবু। তাঁরা বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই ভাইকে গ্রেফতার হতে হয়েছে। শুভাশিস যেদিন ব্লক সভাপতি হয়েছে, তখন থেকেই চক্রান্ত চলছে।” তৃণমূল সূত্রের খবর, শুভাশিসের বিরুদ্ধে আগেও কিছু দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ওঠায় বছর খানেক আগে তাঁকে ওই পদ থেকে সাময়িক ভাবে সরানো হয়েছিল। পরে ফের তাঁকে ওই পদে বসানো হয়।
তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কিসান কল্যাণী বলেন, “দলীয় পর্যায়ে তদন্ত করা হচ্ছে। শুভাশিস অন্যায় করে থাকলে কড়া
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর পাশে দল দাঁড়াবে না বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মালবাজার শহর শাখার সভাপতি মানসকান্তি সরকার ও পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সাহা। সিপিএমের মালবাজার জোনাল কমিটির সম্পাদক চানু দে ঘটনাটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশকে ওই তরুণী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন আগে তাঁর বাবা-মা মারা গিয়েছেন। দাদা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। দাদার পাঠানো টাকায় তিনি কষ্টে জীবনযাপন করেন। তরুণীর অভিযোগ, সহানুভূতি দেখিয়ে আলাপের পরে শুভাশিসবাবু বিয়ের টোপ দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস করেন। এমনকী, কিছুদিন আগে শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়ে জবরদস্তি গর্ভপাত করানোর অভিযোগও তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এনেছেন তিনি। এতদিন অভিযোগ করেননি কেন? জবাবে ওই তরুণী বলেন, “সাহস পাইনি।” মঙ্গলবার এক মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণের মামলা দায়ের হয়েছে শোনার পরে তিনি অভিযোগপত্র নিয়ে সোজা থানায় হাজির হন বলে ওই তরুণীর এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন। |
|
|
|
|
|