‘কার্তিকের লড়াই’ দেখতে বেলডাঙায় মানুষের ঢল নামে প্রতি বছরই। রাস্তা জুড়ে হয় শোভাযাত্রাও। বেলডাঙার কার্তিক পুজোর প্রধান আকর্ষনই হল পুজোর সঙ্গে পুজোর লড়াই’। বেলডাঙা জুড়ে তাই এখন উৎসবের আমেজ। আর জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ব্যাস্ততা তুঙ্গে প্রশাসনিক মহলেও। উৎসবকে সফল করতে পুলিশ, ব্লক প্রশাসন, পুরসভা, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদেরও এখন দম ফেলার সময় নেই।
আজ কার্তিক পুজো। আর কাল বেলডাঙার বিশেষ আকর্ষণ ‘কার্তিকের লড়াই’। এই লড়াই আসলে পুজোর সঙ্গে পুজোর লড়াই। প্রতিমা, পুজোর জাঁকজমক আর বিসর্জনের শোভাযাত্রার চাকচিক্যই এই লড়াইয়ের মূল কথা। লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকতে চান না পুজোর উদ্যোক্তারা। তবে রাস্তা জুড়ে বিশাল প্রতিমার শোভযাত্রা আর মানুষের উপচে পড়া ভিড় সামলাতে প্রতিবারই হিমসিম খেতে হয় পুলিশ প্রশাসনকে। এ বার তাই পুজোর আগে থাকতেই শুরু হয়েছে গিয়েছে বিসর্জনের প্রস্তুতি।
১ নভেম্বর পুরসভার উদ্যোগে প্রতিটি পুজো কমিটি, রাজনৈতিক দল, বেলডাঙা-১ বিডিও, সদর পুলিশ কর্তা, স্থানীয় ওসি এবং এলাকার বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ‘কার্তিকের লড়াই’ এর সময়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে কথাবার্তা হয়। বিডিও সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিটি পুজো কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে ভাসানের দিন যাতে তাঁরা আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। পুলিশ, পুরসভা, স্থানীয় কিছু বেসরকারি সংগঠনও এ ব্যাপারে সাহায্য করছে। বেলডাঙা থানার ওসি বিশ্ববন্ধু চট্টরাজ বলেন, “প্রতিটি রাস্তায় পুলিশের ব্যবস্থা থাকছে। পুরসভার তরফে শহরের প্রধান তিনটি মোড়ে সহায়তা মঞ্চও তৈরি করা হচ্ছে। থাকছে চিকিৎসক, অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও। ৬টি জায়গা থেকে পানীয় জল বিলির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিটি পুজো কমিটির তরফে স্বেচ্ছাসেবকেরাও থাকছেন।”
বেলডাঙার পুরপ্রধান অনুপমা সরকার বলেন, “পুজো কমিটির পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ওই দিন শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।” ‘কার্তিকের লড়াই’ এর দিন প্রতি বছরই শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, যানজট হয়। ১৪ -১৬ ফুট উচ্চতার বিশাল বড় বড় প্রতিমা নিয়ে চলে পুজো কমিটিগুলির শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার বাহার, তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছনো, মোড় দখল করার এই লড়াইয়ে অনেক সময়েই রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে সে জন্য এ দিন ঘণ্টা পাঁচেক শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেলডাঙা বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজার সুমন ভুঁইয়া বলেন, “ব্লকের প্রধান দু’টি হাসপাতালে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করা হয় না। সেখানে আলাদা ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। মানুষের বিপদের আশঙ্কা থাকে বলেই দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকে।” |