ইনসমনিয়ায় ভুগলে ইডেনে আসতে পারেন। রোগের অব্যর্থ দাওয়াই আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে!
এমন প্ল্যাকার্ড বুধবারের ইডেনে থাকাটা খুব স্বাভাবিক ছিল। কারণ দুপুরের দিকে ক্লাবহাউসের আপার টিয়ারে ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখে অন্তত গোটা দশেক দর্শক তো চোখে পড়লই। জনৈক পুলিশকর্মী ক্লাবহাউসের গেটে আবার রসিকতা করে বলেই ফেললেন, “কী দাদা, ফিফথ ডে-র ডিউটিটা অফ হয়ে যাবে তো আমাদের?” |
ম্যাচ পঞ্চম দিন পর্যন্ত আদৌ গড়াবে কি না, তা নির্ভর করছে ১৩৬ টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চন্দ্রপলের উপর। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলা ওপেনার আদ্রিয়ান বারাথ বুধবার ম্যাচ শেষে জানাচ্ছেন, ক্যারিবিয়ান শিবিরে ভরসার সলতে বলতে ওই একটাই নাম। শিবনারায়ণ চন্দ্রপল। “শিব যদি ব্র্যাভোকে সঙ্গে নিয়ে সকালের সেশনটা কাটিয়ে দিতে পারে, অন্য কিছু হলেও হতে পারে।” অতীতে টেস্টে ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস আছে চন্দ্রপলের, কিন্তু ডুবন্ত জাহাজের একক পরিত্রাতা হওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব। সঙ্গে খেলতে হবে ব্র্যাভো বা স্যামুয়েলসকে। |
তার উপর দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে পড়ন্ত আলো ও ওভার সংখ্যা বাঁচাতে আজ চতুর্থ দিনও ম্যাচ শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। ঠিক যে সময়টা ইডেনে সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরা হয়। বল সিম করে, ময়দানি ভাষায় নড়ে। আর তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের কী হাল হয়, বুধবার সকালের প্রথম দু’ঘণ্টা তার প্রমাণ। সাধে চার উইকেট নেওয়া প্রজ্ঞান ওঝা বলে গেলেন, “আশা করছি পঞ্চম দিনটা আর মাঠে নামতে হবে না। একটা দিন ছুটি মিলবে সবার।” |
কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের উইকেট বেগড়বাঁই করেনি। বল ভালই যাচ্ছে, স্পিনও করছে। “কিউরেটরদের সমস্যা হল খারাপ হলেই লোকে গালাগালি করে, কিন্তু ভাল হলে একটা কথাও কেউ বলে না,” ম্যাচ শেষে বলছিলেন প্রবীর। ম্যাচ পাঁচদিন গড়ানোর প্রতিশ্রুতি না মেলার সম্ভাবনা এবং এ জন্য প্রবীর আঙুল তুলছেন অপরিণত ব্যাটিংয়ের দিকে। “ধুর, ওরা তো ব্যাটটাই করতে পারল না। তা হলে আর পাঁচদিন খেলা হবে কী করে?”
একে তো টেস্টের এই হাল। তার মধ্যে সিএবি-র তরফে কোনও প্রশাসনিক অভিনবত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। মঙ্গলবার সচিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাইশ বছর হয়ে গেল, কিন্তু সিএবি-র তাতে কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। এখন ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নেমে সিএবি হাতিয়ার করতে চাইছে দেশের মাটিতে ভারতের পঁচাত্তরতম টেস্ট জয়কে। ধোনিরা এই টেস্ট জিততে পারলে যা ঘটে যাবে ইডেনে। শেষ চেষ্টা করা হচ্ছে, জয়ী দলকে যদি আলাদা কোনও পুরস্কার তুলে দেওয়া যায়। কিন্তু এত কম সময়ে সেটা কী করে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। দেশের মাটিতে ভারতের পঁচাত্তরতম জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে এই টেস্টে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ব্যবহৃত সামগ্রী চাওয়া হয়েছে। কারও কাছে অনুরোধ করা হয়েছে জার্সি দিতে। কেউ আবার দিচ্ছেন টুপি। সচিন তেন্ডুলকরকে অনুরোধ করা হয়েছে তাঁর ব্যাটটা দিতে। কর্তারা জানাচ্ছেন, সিএবি-র যে ক্রিকেট মিউজিয়াম তৈরি হবে, সেখানে এই সব জিনিস রাখা থাকবে। |
আজই কি দেশের মাঠে ৭৫তম
৭৪ টেস্ট জয়ের খতিয়ান(১৯৫২-২০১১) |
বিপক্ষ |
ইংল্যান্ড: ১৪
পাকিস্তান: ৭
নিউজিল্যান্ড: ১১
অস্ট্রেলিয়া: ১৫
|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৮
শ্রীলঙ্কা: ১০
জিম্বাবোয়ে: ৪
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫ |
|