রেজিস্ট্রারকে নিয়ে জটে দুর্নীতির প্রসঙ্গও, আইআইটিতে অস্বস্তি
রেজিস্ট্রারকে ‘জোর করে ছুটি’তে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার তাঁর কাজে যোগদানেও ‘বাধা’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খড়্গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর তার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতার অভিযোগও। দেশের প্রথম সারির এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনভিপ্রেত নানা প্রসঙ্গ জুড়ে যাওয়ায় শিক্ষক-গবেষক, ছাত্রেরা পড়ছেন অস্বস্তিতে।
খড়্গপুর আইআইটি-র রেজিস্ট্রার ডি গুণশেখরনের অভিযোগ, “আমাকে জোর করে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। প্রায় ৭ মাস ছুটিতে ছিলাম। কিন্তু কত দিন আর ছুটিতে থাকা যায়! তাই কাজে যোগ দিলাম। কর্তৃপক্ষ সেই যোগদানকে এ বার বেআইনি ঘোষণা করেছেন। ধারাবাহিক অবিচারের শিকার হচ্ছি আমি।” এই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন আইআইটি-র ডিরেক্টর দামোদর আচারিয়া। নিজের সচিব তপন দে-র মাধ্যমে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই বলার নেই।
দু’বছরের ‘লিয়েনে’ ২০০৯-এর ৫ ডিসেম্বর ভারত সরকারেরই অন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিলেন গুণশেখরন। দু’বছরের সেই মেয়াদ শেষের আগেই তিনি যাতে খড়্গপুর আইআইটি-তে কাজে যোগ দেন, সেই অনুরোধ জানানো হয় আইআইটি-র পক্ষ থেকেই।
নিজস্ব চিত্র
গত বছর ১০ ডিসেম্বর আইআইটি-র ডিরেক্টর তাঁকে লিখিত ভাবে জানান, ২০১১-র জানুয়ারিতেই তিনি যেন কাজে যোগ দেন। তবে যে প্রতিষ্ঠানে ‘লিয়েনে’ গিয়েছিলেন, সেখান থেকে অব্যাহতি পেতে তাঁর আরও কিছু সময় লেগে যায় বলে দাবি করেছেন গুণশেখরন। তাঁর অবর্তমানে তপন ঘোষালকে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। গুণশেখরন চলতি বছরের ১ এপ্রিল আইআইটিতে ফেরেন। কিন্তু ওই দিনই ফের তাঁকে ‘জোর করে’ ছুটিতে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। ফের ২১ অক্টোবর কাজে যোগ দিতে আসেন তিনি। নিজের অফিসেও যান। গুণশেখরনের দাবি, তার পরেই ডেপুটি ডিরেক্টর অরুণকুমার মজুমদার লিখিত ভাবে জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁকে কাজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। তাঁর কাজে যোগদান ‘অবৈধ’।
আইআইটি-র একটি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশে গুণশেখরনের বিরুদ্ধে বর্তমানে সিবিআই-তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রেজিস্ট্রার থাকাকালীন এক্তিয়ার বহির্ভূত ভাবে ‘বিনোদ গুপ্ত স্কুল অব ম্যানেজমেন্টে’র (আইআইটির-ই একটি বিভাগ) কয়েক জন শিক্ষককে অতিরিক্ত সাম্মানিক দিয়েছেন। তদন্ত চলাকালীন তাই গুণশেখরনকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া যাচ্ছে না। সে বিষয়টি গুণশেখরনকে কিন্তু লিখিত ভাবে জানাননি কর্তৃপক্ষ। গুণশেখরনের দাবি, “শিক্ষকেরা কে, কত সাম্মানিক পাবেন তা ঠিক করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিনেরা। আমাকে সেটা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। অর্থাৎ, সাম্মানিক দেওয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠে থাকলেও তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই।” তাঁর প্রশ্ন, “যদি বা আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়, আমি তো দোষী প্রমাণিত হইনি। তা হলে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না কেন!” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ডিরেক্টর দামোদরবাবুর বিরুদ্ধেও সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। তিনি যখন অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের চেয়ারপার্সন ছিলেন তখন তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। তদন্ত চলাকালীন তিনি কাজ করতে পারলে, আমি পারব না কেন?”
রেজিস্ট্রারের কাজে যোগদানকে ঘিরে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তার সঙ্গে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, অনিয়মের অভিযোগ জুড়ে যাওয়ায় আইআইটি-র ছাত্র-শিক্ষকমহলের আক্ষেপ, “বাইরে থেকে আইআইটি যতটা সুন্দর লাগে, ভিতরে ততটা নয়। দেশের নাম করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন নানা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে। আর আমাদের মাথা হেঁট হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.